US-Iran Nuclear Talks

পরমাণু অস্ত্র তৈরির কথা ভুলে যাও! তেহরানকে হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের, অন্যথায় সামরিক পদক্ষেপ

প্রথম দফার বৈঠকের পর ইরান যখন আমেরিকার সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি চূড়ান্ত করার দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে, তখনই তেহরানকে ফের সতর্ক করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ইরানকে ইচ্ছাকৃত ভাবে পারমাণবিক চুক্তি বিলম্বিত করার জন্যও অভিযুক্ত করেছেন তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫ ১২:০৫
(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েশকিয়ান (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েশকিয়ান (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

পরমাণু চুক্তি ঘিরে আমেরিকা-ইরান টানাপড়েন অব্যাহত। উত্তেজনার আবহে শনিবার আমেরিকার সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক সেরেছে ইরান। প্রথম দফার বৈঠকের পর দু’পক্ষই আরও আলোচনার জন্য সহমত হয়েছে। আগামী সপ্তাহে ফের বৈঠকে বসতে পারেন আমেরিকা এবং ইরানের প্রতিনিধিরা, জল্পনা এমনটাই। সেই আবহে তেহরানকে ফের হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আরও এক বার জানিয়ে দিলেন, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করলে ইরানের উপর সামরিক পদক্ষেপ করতে দ্বিধা করবে না আমেরিকা।

Advertisement

পরমাণু চুক্তি নিয়ে ট্রাম্প আগেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিলেন ইরানকে। বলেছিলেন, দু’দেশের আলোচনা ব্যর্থ হলে ইরানের উপর হামলা চালানো হতে পারে। অথচ প্রথম দফার বৈঠকের পর ইরান যখন আমেরিকার সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি চূড়ান্ত করার দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে, তখনই তেহরানকে ফের সতর্ক করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের দাবি, তেহরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। পাশাপাশি, ইরানকে ইচ্ছাকৃত ভাবে পারমাণবিক চুক্তি বিলম্বিত করার জন্যও অভিযুক্ত করেছেন ট্রাম্প।

শনিবার ওমানে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে ইরান সরকারের এক আধিকারিকের সাক্ষাতের পর ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, ওরা আমাদের উপর নজর রাখছে। ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চিন্তা সম্পূর্ণ বাদ দিতে হবে। তাদের পারমাণবিক অস্ত্র থাকতে পারে না।’’ যদিও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জল্পনা ধারাবাহিক ভাবে অস্বীকার করে আসছে ইরান। অন্য দিকে, প্রথম দফার বৈঠকের পর দুই দেশই জানিয়েছে যে, তারা ওমানে ‘ইতিবাচক’ এবং ‘গঠনমূলক’ আলোচনা করেছে। শনিবার রোমে দ্বিতীয় দফার আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জমানায় ইরানের সঙ্গে তিন বছরের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি করেছিল ছয় শক্তিধর রাষ্ট্র— ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি, চিন এবং আমেরিকা। অথচ ২০১৮-য় সেই চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসেন ট্রাম্প। এর পর গত বছরের শেষে রাষ্ট্রপুঞ্জের পরমাণু বিষয়ক নজরদারি সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি’ (আইএইএ)-র একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি শুরু করেছে ইরান। তাদের কাছে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে। এর পরেই নড়েচড়ে বসে বিশ্বের তাবড় শক্তিধর দেশগুলি। ইরান-ইজ়রায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি নিরাপত্তা পরিষদে খোলা চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দেয়, প্রয়োজনে ইরানের পরমাণু অস্ত্রধর দেশ হয়ে ওঠা আটকাতে তারা সব ধরনের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনতে প্রস্তুত। চিন্তা বাড়ে আমেরিকারও। যদিও তেহরানের তরফে বার বারই জোর দিয়ে দাবি করা হয়েছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধু মাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং অন্যান্য শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই পরিচালিত হচ্ছে। তবে এ সব যুক্তিতে চিঁড়ে ভেজেনি। সেই আবহে এ বার ইরানকে ফের হুঁশিয়ারি দিলেন ট্রাম্প।

Advertisement
আরও পড়ুন