—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময়ে পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরে জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের সদর দফতরে হামলা চালানো হয়েছিল। সেই পরিকাঠামো বিরাট ভাবে ধ্বংস করার দাবি করা হয়েছিল। এ বার সেই বাহাওয়ালপুরেই জইশ ছাড়াও আর এক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার নেতৃত্বের যৌথ বৈঠকের খবর সামনে এসেছে। ভারতকে নিশানা করতে এই দুই জঙ্গি সংগঠনের যৌথ প্রয়াসের খবর পেতেই নয়াদিল্লিতে নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতাও শুরু হয়ে গিয়েছে।
ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে খবর পৌঁছেছে, পহেলগাম হামলার ষড়যন্ত্রকারী লস্কর-ই-তইবা এবং লাল কেল্লার কাছে বিস্ফোরণের চক্রী জইশ-ই-মহম্মদের নেতারা সম্প্রতি বাহাওয়ালপুরে মিলিত হয়েছিল। জইশের সদর দফতরে সেই বৈঠক হয়। লস্করের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা সইফুল্লা কাসুরি সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিল। তার সঙ্গে জইশের কমান্ডারদের ছবিও গোয়েন্দাদের কাছে পৌঁছেছে। গোয়েন্দা সূত্রের আরও দাবি, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের রাওয়ালকোটে জঙ্গিদের লঞ্চ প্যাড আবার নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময়ে এই এলাকাতেও হামলা চালিয়েছিল ভারতীয় সেনা।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এ জইশ ও লস্করের ব্যবহার করা জঙ্গি পরিকাঠামো ধ্বংস করার দাবি করা হয়েছিল। এখন অবশ্য তাদের জোটবদ্ধ হওয়ার খবর সামনে এসেছে। এবং তার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে এমন পরিকাঠামোকে, যেখানে ইতিমধ্যেই হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সেনা। অর্থাৎ, জঙ্গি পরিকাঠামো ধ্বংসের পরে তা নতুন করে গড়ে তোলা এবং জইশ, লস্করের মতো সংগঠনের পিছনে অর্থের জোগান যে আদৌ বন্ধ হয়নি, তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এই প্রেক্ষাপটে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে ভারতের কূটনৈতিক প্রভাব কতটা কার্যকর হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিরোধী শিবিরে।
ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে খবর পৌঁছেছে, লস্কর-ই-তইবার শীর্ষস্থানীয় নেতা সইফুল্লা কাসুরি মাঝে মধ্যেই বাহাওয়ালপুরে গিয়ে জইশের শীর্ষ নেতা মাসুদ আজ়হারের সঙ্গে বৈঠক করছে। ভারতীয় গোয়েন্দারা মনে করছেন, এই দু’টি প্রধান জঙ্গি সংগঠন এখন একযোগে ভারতের বিরুদ্ধে হামলা করতে চাইছে। এই ধরনের বৈঠক সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। গোয়েন্দারা খবর পেয়েছেন, পহেলগামে হামলার আগে কাসুরি বাহাওয়ালপুরে গিয়েছিল। সেখানে ভারতে হামলা চালানোর বিষয়ে জইশের নেতাদের সঙ্গে তার আলোচনা হয়। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, সেপ্টেম্বর মাস থেকেই জঙ্গি সংগঠনগুলির মধ্যে অনুপ্রবেশ নিয়ে তৎপরতা বেড়েছে— লস্কর ও জইশের জঙ্গিরা কাশ্মীরে ঢোকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে পাকিস্তানের স্পেশাল সার্ভিসেস গ্রুপ (এসএসজি) এবং পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর মদত প্রবল ভাবে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জইশের সদর দফতর বাহাওয়ালপুরে নতুন করে এই দুই জঙ্গি সংগঠন বৈঠকে বসতেই সতর্ক হয়ে উঠেছে নয়াদিল্লি।