Qassem Bassir Ballistic Missile

ইজ়রায়েলের ‘আয়রন ডোম’ ভেদ করে আঘাত হানল কাসিম বশির! ইরানের এই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিশেষত্ব কী?

ইরান থেকে ইসরায়েলের দূরত্ব ১৫০০ কিলোমিটার। ইজ়রায়েলের আকাশের ‘নিশ্ছিদ্র রক্ষক’ ‘আয়রন ডোম’ মূলত তিনটি স্তরে কাজ করে— রেডারের মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তুকে চিহ্নিত করা, দ্রুত সেই লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য তৎপর হওয়া এবং ‘ইন্টারস্পেটর ক্ষেপণাস্ত্র’ ছুড়ে শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৫ ১১:৫৬

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

মাত্র এক মাসে আগেই তেহরান প্রকাশ্যে এনেছিল তার নতুন অস্ত্র। শুক্রবার গভীর রাতে সেই মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কাসিম বশির ব্যবহার করেই তারা ইজ়রায়েলের তেল আভিভে সফল হামলা চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার পাল্লার কঠিন জ্বালানি-চালিত কাসিম বশির ক্ষেপণাস্ত্র গত মে মাসে আনুষ্ঠানিক ভাবে ইরান ফৌজের এলিট ‘ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড অ্যারোস্পেস ফোর্স’-এর হাতে তুলে দিয়েছিলেন সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ় নাসিরজাদে। বস্তুত, এটি ইরান ফৌজের গত এক দশক ধরে ব্যবহৃত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হজ কাসিমের উন্নততর সংস্করণ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সে সময়ই আজিজ় দাবি করছিলেন, ইজ়রায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে সমর্থ হবে কাসিম বশির।

ইরান থেকে ইসরায়েলের দূরত্ব ১৫০০ কিলোমিটার। ইজ়রায়েলের আকাশের ‘নিশ্ছিদ্র রক্ষক’ ‘আয়রন ডোম’ মূলত তিনটি স্তরে কাজ করে— রেডারের মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তুকে চিহ্নিত করা, দ্রুত সেই লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য তৎপর হওয়া এবং ‘ইন্টারস্পেটর ক্ষেপণাস্ত্র’ ছুড়ে শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করা। এ ছাড়া, তেল আভিভের কাছে রয়েছে আমেরিকায় তৈরি বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা ‘থাড’।

ইরান এবং ইজ়রায়েলের মধ্যে কোনও সীমান্ত নেই। ইরাক, সিরিয়া বা জর্ডনের মতো দেশের উপর দিয়ে উড়ে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রকে ইজ়রায়েলের আকাশসীমায় পৌঁছতে হয়। মুসলিম দেশ হয়েও জর্ডন, ইরাকের মতো দেশ ইরানের বিরুদ্ধে হামলা চালাতে নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেয় বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সেনাকে। তেহরানের সে সুবিধা নেই। তা ছাড়া, সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধে ক্ষমতা দখলকারী সুন্নি কট্টরপন্থী নেতা মোহাম্মদ জোলানিও ইজ়রায়েলের জন্য আকাশপথ উন্মুক্ত করেছেন।

ইরান যে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, সাধারণ ভাবে প্রথমেই ইরাকে মোতায়েন মার্কিন বাহিনী তা ইজ়রায়েলকে জানিয়ে দেয়। সেখানে থেকে আমেরিকা ও ইরাক ক্ষেপণাস্ত্রগুলি আকাশে ধ্বংস করে। এক ধাপ এগিয়ে এ বার ইজ়রায়েলের মিত্র সুন্নি মুসলিম দেশ জর্ডন তার নিজ আকাশে ক্ষমতা অনুযায়ী ইন্টারসেপ্ট করেছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রকে। কিন্তু উচ্চগতি সম্পন্ন হওয়ায় কাসিম বশির রাডার নজরদারিকে ফাঁকি দিয়ে চলে এসেছিল ইজ়রায়েলে। আবার সিরিয়ার আকাশে ইজ়রায়েল ও আমেরিকান বিমানবাহিনী ‘ইন্টারসেপ্ট’ করতে তৎপর। কারণ, সিরিয়ার সরকার মোহাম্মদ জোলানি, আমেরিকা আর ইজ়রায়েলকে তাদের আকাশপথ উন্মুক্ত করে দিয়েছে। তা সত্ত্বেও শুক্রবার রাতে ইজ়রায়েলের তেল আভিভে সফল হামলা চালিয়েছে কাসিম বশির। উপসাগরীয় অঞ্চলে মোতায়েন মার্কিন বাহিনী এবং ইজ়রায়েলে নিজস্ব আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে এই হানাদারি তেহরানের ‘চমকপ্রদ সাফল্য’ বলে সামরিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করছেন।

Advertisement
আরও পড়ুন