(বাঁ দিকে) বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
শেখ হাসিনার সমর্থকেরা বাংলাদেশের নির্বাচনকে বিঘ্নিত করতে লক্ষ লক্ষ টাকা ঢালছেন। এমনটাই দাবি করলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়ায় আমেরিকার বিশেষ দূত সার্জিও গোরের সঙ্গে ফোনে কথা হয় ইউনূসের। গোর ভারতে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত হিসাবেও নিযুক্ত রয়েছেন। ওই ফোনালাপের সময়েই বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে এই দাবি করেন ইউনূস।
আগামী বছর বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন রয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি হবে ভোটগ্রহণ। তবে গত কয়েক দিন ধরে যে ভাবে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে বাংলাদেশে, তাতে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। বাংলাদেশে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজ়ান্ডার গ্রিগোরাইভিচও চাইছেন, নির্বাচনের আগে শান্তি ফিরুক বাংলাদেশে।
এ অবস্থায় সোমবার ইউনূস দাবি করলেন, নির্ধারিত সময়েই সে দেশে নির্বাচন হবে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য, “দেশের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। স্বৈরাচারী শাসনকালে তা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।”
সোমবার গোরের সঙ্গে প্রায় আধ ঘণ্টা ফোনে কথাবার্তা হয় ইউনূসের। এমনটাই দাবি করেছে সে দেশের সরকারি সংবাদসংস্থা ‘বাসস’। ওই ফোনালাপের সময়েই ইউনূস বলেন, “ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শাসনের সমর্থকেরা নির্বাচন প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে বিপুল অর্থ ব্যয় করছে। তাদের পলাতক নেতা হিংসা উস্কে দিচ্ছেন।” তাঁর দাবি, অন্তর্বর্তী সরকার যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রস্তুত রয়েছে। সরাসরি কারও নাম না নিলেও ‘ক্ষমতাচ্যুত শাসন’ বলে হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের সরকারের কথাই বোঝাতে চেয়েছেন ইউনূস।
জানা যাচ্ছে, গোরের সঙ্গে ইউনূসের ফোনালাপের মুখ্য বিষয় ছিল আমেরিকা এবং বাংলাদেশের বাণিজ্য ও শুল্কের প্রসঙ্গ। পাশাপাশি সে দেশের আসন্ন নির্বাচন এবং সম্প্রতি ওসমান হাদির হত্যার প্রসঙ্গও উঠে আসে আলোচনায়। নির্বাচন ঘোষণার পরই বাংলাদেশে বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ ওসমান হাদি। তাঁর মৃত্যুর পর গত বৃহস্পতিবার থেকে ফের উত্তাল হয়েছে বাংলাদেশ। চলেছে ভাঙচুর, তাণ্ডব, অগ্নিসংযোগ। বাংলাদেশের বিভিন্ন নেতাদের মুখে ভারতবিরোধী বক্তৃতাও শোনা গিয়েছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন ঢাকার মার্কিন দূতাবাস কর্তৃপক্ষও। ভোটের আগে অশান্তি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করেছিলেন তাঁরা। এ অবস্থায় ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে ইউনূসের এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।