Pakistan-Bangladesh Relation

ঢাকায় পাক বিদেশমন্ত্রী, পাঁচটি চুক্তি স্বাক্ষর! ইউনূস-সাক্ষাৎ বিকেলে, সন্ধ্যায় খালেদার বাসভবনে যাওয়ার সম্ভাবনা

রবিবার বিকেলে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করবেন পাক বিদেশমন্ত্রী দার। সন্ধ্যায় তিনি ঢাকার গুলশনে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বাসভবনে যেতে পারেন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৫ ১৫:৩৬
চুক্তি স্বাক্ষর করছেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। পিছনে (বাঁ দিকে) পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার এবং (ডান দিকে) বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হাসান।

চুক্তি স্বাক্ষর করছেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। পিছনে (বাঁ দিকে) পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার এবং (ডান দিকে) বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হাসান।

তিন দিনের সফরে বাংলাদেশে গিয়েছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার। রবিবার ঢাকার একটি হোটেলে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হাসানের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে মোট পাঁচটি বিষয়ে চুক্তি বা সমঝোতাপত্র (মউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, দুই দেশের সরকারি এবং কূটনৈতিক পাসপোর্ট গ্রাহকদের জন্য ভিসা বিলোপের চুক্তি। তা ছাড়াও পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক বিষয়ে যৌথ কমিটি গঠন, সংস্কৃতি বিনিময় কর্মসূচি নিয়েও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

Advertisement

শনিবার দুপুরে ঢাকায় পৌঁছোন পাক বিদেশমন্ত্রী দার। তার আগে ২০১২ সালে শেষ বার পাকিস্তানের কোনও বিদেশমন্ত্রী পাকিস্তানে গিয়েছিলেন। পাকিস্তানের তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খারের সফর ছিল কয়েক ঘণ্টার। তার পর এই প্রথম পাকিস্তানের কোনও বিদেশমন্ত্রী বাংলাদেশে গেলেন। বস্তুত, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার জমানায় ইসলামাবাদ এবং ঢাকার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য কোনও উন্নতি হয়নি। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয় সাবেক পূর্ব পাকিস্তান। তৈরি হয় স্বাধীন বাংলাদেশ। তার পর থেকে দীর্ঘ সময় ধরে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি বাণিজ্য প্রায় বন্ধই ছিল। গত বছর হাসিনার পতনের পরে দু’দেশের মধ্যে ফের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চালু করতে পদক্ষেপ করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যে ভিসা সংক্রান্ত বিধিও শিথিল করা হচ্ছে। গত জুলাইয়ে বাংলাদেশে গিয়েছিলেন পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি। গত বুধবার ঢাকায় গিয়েছিলেন পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান। শনিবার ঢাকায় গেলেন পাক বিদেশমন্ত্রী দার।

রবিবার বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী জানান, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় দুই দেশের মধ্যে থাকা অমীমাংসিত তিন সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। ১৯৭১ সালে পাক সেনার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলে পাকিস্তানকে নিঃশর্তে ক্ষমা চাইতে বলেছিল বাংলাদেশ। এর পাশাপাশি যুদ্ধের জন্য ক্ষতিপূরণ, সম্পদের ভাগ দেওয়ারও দাবি জানায় ঢাকা। অমীমাংসিত এই বিষয়গুলির মধ্যে তিনটির সমাধান দু’বার করা হয়েছে বলে দাবি করেন পাক বিদেশমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘১৯৭৪ সালে প্রথম বারের মতো বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়। আর ওই সময়ের দলিলটি দুই দেশের জন্য ঐতিহাসিক। এর পর জেনারেল পারভেজ মোশারফ এখানে (বাংলাদেশে) এসে প্রকাশ্যে ও খোলা মনে বিষয়টির সমাধান করেছেন। ফলে বিষয়টি দু’বার সমাধান হয়েছে। এক বার ১৯৭৪ সালে, আর এক বার ২০০০ সালের শুরুতে।’’

রবিবার বিকেলে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করবেন পাক বিদেশমন্ত্রী দার। সন্ধ্যায় তিনি ঢাকার গুলশনে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বাসভবনে যেতে পারেন।

Advertisement
আরও পড়ুন