Israel-Hamas Conflict

এক কেজি চিনি ৫০০০ টাকা, আলু ১৫০০ টাকা! গাজ়ায় আকাশছোঁয়া দামের নেপথ্যে ইজ়রায়েল না হামাস?

গাজ়ার পরিস্থিতি নিয়ে প্রায়ই উদ্বেগ প্রকাশ করছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। ইজ়রায়েলের ‘অবরোধের’ কারণে গাজ়ায় ত্রাণ এবং মানবিক সাহায্য প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। তবে বর্তমানে ইজ়রায়েল নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করেছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৫ ২০:১০
Prices of daily necessities are huge in Gaza, forcing ordinary people to buy them

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়া। ছবি: পিটিআই।

কেউ দাঁড়িয়ে ত্রাণশিবিরের বাইরের লাইনে। কেউ আবার সন্তানদের জন্য খাবার জোগাড় করতে ব্যস্ত! ইদের সকালে এমনই ছবি যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়ার। চারপাশে শুধুই হাহাকার আর ধ্বংসস্তূপ। সেই সব ধ্বংসস্তূপেই কোনওক্রমে দিন কাটাচ্ছেন অনেকে। কখন ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়বে, সেই চিন্তাই ঘুরছে সকলের মনে! ইদের আনন্দ থেকে তাঁরা অনেক দূরে। এখন তাঁদের আলোচনায় শুধু খাবার এবং অনাহার! একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যও চিন্তা বাড়িয়েছে।

Advertisement

গাজ়ায় ‘পার্লে জি’র মতো বিস্কুটের দাম নিয়ে করা একটি ভাইরাল পোস্ট সম্প্রতি বিভিন্ন জায়গায় আলোচনায় উঠে এসেছে। দাবি করা হচ্ছে, এক প্যাকেট ‘পার্লে জি’ বিস্কুট গাজ়ায় কিনতে হচ্ছে ২৪ ইউরো দিয়ে। ভারতীয় মুদ্রায় যা ২,৪০০ টাকা! কিন্তু শুধু বিস্কুট নয়, গাজ়ার বাজারে বিক্রি হওয়া অন্যান্য পণ্যের দামও আকাশছোঁয়া। অনেকের কাছেই তা ক্রয়ক্ষমতার বাইরে।

সংবাদমাধ্যম ‘এনডিটিভি’তে প্রকাশিত এক তালিকায় উঠে এসেছে গাজ়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য! ভারতীয় মুদ্রার হিসাবে গাজ়ায় কোন জিনিস কত দামে বিক্রি হচ্ছে, তার এক আভাস পাওয়া যায়। এক লিটার রান্নার তেলের দাম চার হাজার টাকারও বেশি। আবার এক কেজি চিনির দাম পাঁচ হাজার ছুঁইছুঁই। এক কেজি গুঁড়ো দুধ কিনতে গাজ়াবাসীকে ব্যয় করতে হচ্ছে ৮৬০ টাকা, ময়দা বিক্রি হচ্ছে প্রায় দেড় হাজার টাকা প্রতি কেজিতে। এক কেজি নুনের দাম ৪৯১ টাকা। পেঁয়াজ কিনতে হাতে ছেঁকা লাগছে গাজ়ার সাধারণ মানুষের। এক কেজির দাম ৪,৪২৩ টাকা! প্রতি কেজি আলু ১,৯৬৬ টাকা, বেগুন, ৮৬০ টাকা, টম্যাটো ১,১০৬ টাকা। মুসুর ডাল গাজ়ার বাজারে প্রতি কেজি বিকোচ্ছে ৮৬০ টাকায়। আর মাংস পাওয়া যাচ্ছে ৪,৯১৪ টাকা (প্রতি বাক্স)।

গাজ়ার পরিস্থিতি নিয়ে প্রায়ই উদ্বেগ প্রকাশ করছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। ইজ়রায়েলের ‘অবরোধের’ কারণে গাজ়ায় ত্রাণ এবং মানবিক সাহায্য প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আপত্তিতে ইজ়রায়েল সুর নরম করে। গাজ়ায় ত্রাণ বা মানবিক সাহায্য প্রবেশ শিথিল করে ইজ়রায়েল সরকার। কিন্তু এখন যে পরিমাণ ত্রাণ যাচ্ছে, গাজ়াবাসীর জন্য তা যথেষ্ট নয়! শুধু তা-ই নয়, পর পর ইজ়রায়েলি হামলায় গাজ়ায় কাজ নেই সাধারণ মানুষের, রোজগারপাতি বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে এত টাকা খরচ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকেই।

গাজ়ায় কেন এত খাদ্যসঙ্কট, কেনই বা এত দাম? ইজ়রায়েলের দাবি, গাজ়ায় যে ত্রাণ বা সাহায্য পৌঁছোচ্ছে, তার অধিকাংশই ছিনতাই করছে হামাস! ইজ়রায়েলের দূতাবাসের মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে ‘এনডিটিভি’ জানায়, হামাসের মুখোশধারী বন্দুকবাজেরা গাজ়ার মানুষের উপর গুলি চালাচ্ছে। কারণ তারা চায় না, গাজ়ায় সাহায্য পৌঁছোক। যুদ্ধ শুরুর প্রথম দেড় বছরে গাজ়ায় যাওয়া বেশিরভাগ সাহায্য ট্রাক লুট করেছে হামাস। লুট করা ত্রাণই গাজ়ার বাসিন্দাদের কাছে চড়া হারে বিক্রি করছে তারা। তবে সেই অভিযোগ মানতে নারাজ হামাস। তাদের দাবি, গাজ়ার বাজারে খুবই কম পরিমাণ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ঢুকছে। ফলে দাম স্বভাবতই ঊর্ধ্বমুখী।

Advertisement
আরও পড়ুন