ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়র স্টার্মারের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। ছবি: রয়টার্স।
আরও এক বার ইউক্রেনের পাশে থাকার বার্তা দিল ইউরোপের তিন প্রধান শক্তিধর দেশ। আজ ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে গিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়র স্টার্মারের বৈঠক সারলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। উদ্দেশ্য, রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধের জন্য আমেরিকার তরফে এখনও পর্যন্ত যে সব প্রস্তাব রাখা হয়েছে, সেগুলি নিয়ে আলোচনা করা। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ এবং জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মের্ৎজ়-ও। সেই বৈঠক থেকেই জ়েলেনস্কি এবং তাঁর দেশের মানুষের সঙ্গে থাকার বার্তা দিয়েছেন স্টার্মার। তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন মাকরঁ এবং মের্ৎজ়। তবে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত কাল জ়েলেনস্কিকে খোঁচা দিয়েছেন। ট্রাম্পের দাবি, তাঁর প্রস্তাবিত শান্তিচুক্তি মেনে নিতে এখনও প্রস্তুত নন জ়েলেনস্কি।
গত কালই মায়ামিতে শেষ হয়েছিল আমেরিকা এবং ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের বৈঠক। তার আগে মস্কো গিয়ে রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক সেরেছিলেন ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। কিন্তু কোনও বৈঠকই এখনও পর্যন্ত সে ভাবে ফলপ্রসূ হয়নি। ট্রাম্প গত কয়েক মাস ধরেই রুশ-ইউক্রেন সামরিক সংঘর্ষ বন্ধে উদ্যোগী। মাসখানেক আগে তিনি দু’দেশের মধ্যে শান্তিচুক্তি স্থাপনের উদ্দেশ্যে ২৮ দফার পরিকল্পনাও পেশ করেছিলেন। কিন্তু মস্কোর প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে তার অধিকাংশ শর্ত খারিজ করে দেন জ়েলেনস্কি। পরে সুর নরম করে ট্রাম্প প্রশাসন ফের নতুন করে আলোচনা পর্ব শুরু করতে রাজি হয়। তবে সেই বৈঠকও গত কাল শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই বৈঠকে তেমন কোনও রফা সূত্র না বেরোনোয় কাল ওয়াশিংটন ডিসিতে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প জানান, তিনি কিছুটা হলেও জ়েলেনস্কির উপরে হতাশ। ট্রাম্পের দাবি, তাঁর পেশ করা প্রস্তাব পড়েই দেখেননি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের আরও বক্তব্য, রুশ প্রতিনিধিরা তাঁর প্রস্তাব মেনে নিতে রাজি থাকলেও আপত্তি জানাচ্ছে ইউক্রেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিশেষ প্রতিনিধি অবশ্য গত কালই স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, আমেরিকার পেশ করা প্রস্তাবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বদল চান তাঁরা।
এই আবহে আজ ব্রিটেন, ফ্রান্স আর জার্মানির প্রধানদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন জ়েলেনস্কি। তিনি অবশ্য আজ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মায়ামির আলোচনা ইতিবাচক হলেও আমেরিকান প্রশাসনের প্রস্তাবিত শান্তিচুক্তি পুরোপুরি মেনে নেওয়ার ক্ষেত্রে দু’টি বিষয়ই মূলত বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। প্রথমত, ভূখণ্ড ভাগের প্রশ্নে আপসে রাজি নন ইউক্রেনের মানুষ। দ্বিতীয়ত, ইউক্রেন এবং পশ্চিম ইউরোপের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়েও তাঁরা এখনও সন্দিহান। ইউরোপের নিরাপত্তা এবং রাশিয়ার পক্ষপাতিত্বের প্রশ্ন নিয়ে আজ সরব হয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলরও। ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাকরঁ রাশিয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারির ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের হাতে এখন অনেক তাসই রয়েছে।’’ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করলে রাশিয়াকে অর্থনৈতিক ভাবে ভুগতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন মাকরঁ। সংবাদ সংস্থা