Europe Heat

তীব্র গরমে হাঁসফাঁস ইউরোপ! মৃত্যু ৮ জনের, কোথাও দোসর দাবানল, কোথাও বন্ধ করে দিতে হল পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র

আপাতত তাপপ্রবাহের কারণে মাথায় হাত পড়েছে আবহবিদদের। মনে করা হচ্ছে, বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণেই এই পরিস্থিতি ইউরোপে। আগামী কয়েক বছরে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৫ ১২:০৪
গরম থেকে বাঁচতে জলই ভরসা! ইউরোপের কোসোভোয় অবসর যাপন পরিবারের।

গরম থেকে বাঁচতে জলই ভরসা! ইউরোপের কোসোভোয় অবসর যাপন পরিবারের। ছবি: রয়টার্স।

উত্তর গোলার্ধে বছরের উষ্ণতম মাস জুলাই। ইউরোপেও সবে শুরু হয়েছে গ্রীষ্মকাল। কিন্তু এরই মধ্যে হাঁসফাঁস অবস্থা মহাদেশের বেশির ভাগ অংশে। তাপপ্রবাহের কারণে ইতিমধ্যেই ইউরোপে আট জনের মৃত্যু হয়েছে। গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে পরিস্থিতি এমনই যে কোথাও কোথাও বাধ্য হয়ে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রও বন্ধ করে দিতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার স্পেনের পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে পূর্ব ও মধ্য ইউরোপের চিত্রটা বিশেষ পাল্টায়নি। গ্রীসে অত্যধিক তাপমাত্রা ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে কয়েক জায়গায় দাবানল দেখা দিয়েছে। দাবানল দেখা দিয়েছে স্পেনের ক্যাটালোনিয়া এবং তুরস্কেও। সেভিলের পারদ ইতিমধ্যেই ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়ে ফেলেছে, যা টেক্কা দিয়েছে দিল্লি, কলকাতাকেও। গত শনিবার এল গ্রানাদোয় তাপমাত্রা ছিল ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এখনও পর্যন্ত জুন মাসের নিরিখে দেশের উষ্ণতম দিন।

ফ্রান্সের তাপমাত্রাও ৪০ ডিগ্রির গণ্ডি পেরিয়ে গিয়েছে। গরমে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রায় কয়েকশো মানুষ। তাপপ্রবাহের আবহে পর্যটকদের আইফেল টাওয়ারের উপরে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। পিছিয়ে নেই জার্মানি, ইটালিও। ইটালির নেপল্‌স, পালেরমোর তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই। রোম ও মিলান-সহ ইটালির ১৮টি শহরে বৃহস্পতিবার থেকে লাল সতর্কতা জারি হয়েছে। তীব্র দাবদাহের লাল সতর্কতা জারি হয়েছে অস্ট্রিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, সার্বিয়া, স্লোভেনিয়া প্রভৃতি দেশেও। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত ইউরোপে গরমের কারণে আট জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে স্পেনে চার জন, ফ্রান্সে দু’জন এবং ইটালিতে দু’জন মারা গিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, গরমের কারণে গারোন নদীর জলের উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ায় দক্ষিণ ফ্রান্সের গল্ফেক পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের দু’টি চুল্লির মধ্যে একটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সুইৎজ়ারল্যান্ডের বেজ়নাও পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রেও দু’টি চুল্লি বন্ধ রাখা হয়েছে। আরে নদীর জলের তাপমাত্রা অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত। বন্ধ হয়ে যাওয়া তিন পরমাণুকেন্দ্রেই চুল্লির তাপমাত্রা কমানোর জন্য নদীর জল ব্যবহার করা হয়— চুল্লিতে ব্যবহারের পর গরম হয়ে যাওয়া সেই জল ফের ফিরিয়ে দেওয়া হয় প্রকৃতিতে। কিন্তু নদীর জলের স্বাভাবিক উষ্ণতা ২৫ ডিগ্রির বেশি হয়ে গেলেই তা আর ব্যবহারযোগ্য থাকে না। কারণ চুল্লিতে ব্যবহারের পর ওই জলের উষ্ণতা অত্যধিক বেড়ে যায়, যা জলজ বাস্তুতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।

তবে আপাতত তাপপ্রবাহের কারণে মাথায় হাত পড়েছে আবহবিদদের। মনে করা হচ্ছে, বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণেই এই পরিস্থিতি ইউরোপে। আগামী কয়েক বছরে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা।

Advertisement
আরও পড়ুন