Donald Trump on Iran Attack

ইরানে কেন হামলা? আমেরিকা এর পর কী করবে? হোয়াইট হাউস থেকে ব্যাখ্যা করলেন ট্রাম্প, কী কী বললেন

হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে ইরানে হামলার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, আগামী দিনে আরও প্রাণঘাতী হামলা করতে পারে আমেরিকা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৫ ০৯:০৯
photo of Donald Trump

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

ইরানে কেন হামলা চালানো হল? আমেরিকার পরবর্তী পদক্ষেপ কী? হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে তা ব্যাখ্যা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানালেন, আগামী দিনে আরও ভয়ানক এবং আরও প্রাণঘাতী হামলা করতে পারে আমেরিকা। এ বার ইরানকে শান্তি ফেরাতেই হবে। ইজ়রায়েলের সঙ্গে মিলে যে ইরানে এই হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী, তা-ও জানিয়েছেন ট্রাম্প। ধন্যবাদ দিয়েছেন ইজ়রায়েলের সেনাবাহিনীকে।

Advertisement

ইরানে হামলার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাদের উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধিকরণের ক্ষমতাকে ধ্বংস করে দেওয়া। এই দেশটিকে ‘সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক হিসাবে বিশ্বের এক নম্বর’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, ইরানের কারণে সারা বিশ্বে যে আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা বন্ধ করতে আমেরিকা এই হামলা চালিয়েছে। ট্রাম্পের দাবি, আমেরিকার হামলায় ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণুঘাঁটিগুলি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।

হোয়াইট হাউস থেকে ট্রাম্প ইরানকে ‘পশ্চিম এশিয়ার উৎপীড়ক’ বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এ বার ইরানকে শান্তিস্থাপন করতেই হবে। যদি তা না করে, আগামী দিনে আরও বড় হামলা হবে। আমাদের জন্য সেটা অনেক সহজ কাজ।’’ কেন সহজ? ট্রাম্প ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর মতে, রবিবার ইরানের যে তিন পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে, সেগুলি সবচেয়ে কঠিন ছিল। তবে ইরানের আরও অনেক জায়গা আছে যা আমেরিকার ‘টার্গেট’ হতে পারে। সেগুলিতে পৌঁছোনো তুলনামূলক সহজ। ট্রাম্পের কথায়, ‘‘ইরানকে শান্তিস্থাপন করতে হবে, নয়তো বিপর্যয় ঘটবে। গত আট দিনে আমরা যে বিপর্যয় দেখেছি, তার চেয়ে আরও অনেক বড় কিছু হবে। মনে রাখবেন, আরও অনেক ‘টার্গেট’ বাকি রয়েছে। আজ যে হামলাগুলি হয়েছে, সেগুলি সবচেয়ে কঠিন এবং সবচেয়ে প্রাণঘাতী ছিল। কিন্তু যদি দ্রুত শান্তিস্থাপন না-করা হয়, আমরা অন্য ‘টার্গেট’-এও সমান দক্ষতায় হামলা চালাব। সেগুলি হবে নির্ভুল এবং দ্রুত।’’

আমেরিকার দাবি, গোপনে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে ইরান। আগামী দিনে তারা পরমাণু শক্তিধর দেশগুলির তালিকায় নাম লেখাতে চায়। তাতে আপত্তি তোলা হয়েছে। যদিও ইরানের বক্তব্য, নিজেদের দেশের মানুষের হিতার্থে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করা হবে। আমেরিকার সঙ্গে এই সংক্রান্ত আলোচনায় অনড় অবস্থান নিয়েছিল তেহরান। তার পরেই গত শুক্রবার ইজ়রায়েল হামলা চালায় ইরানে। তাদের ক্ষেপণাস্ত্রে মৃত্যু হয় ইরানের চার শীর্ষ সেনাকর্তা এবং ন’জন পরমাণু বিজ্ঞানীর। এর পর ইরানও পাল্টা হামলা শুরু করে। মুহুর্মুহু ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষিত হয় জেরুসালেম, তেল আভিভ, ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে। ইরান এবং ইজ়রায়েলের সংঘাতের ন’দিনের মাথায় যোগ দিল আমেরিকা। তারা হামলা চালাল ইরানের ফোরডো, নাতান্‌জ় এবং এসফাহানের পরমাণুঘাঁটিতে। ইজ়রায়েল বাহিনীর সঙ্গে মিলেই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। বলেছেন, ‘‘আমি ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমরা যে ভাবে দল হিসাবে কাজ করেছি, সে ভাবে হয়তো আর কেউ কখনও করেনি। ইজ়রায়েলের উপর যে হুমকি রয়েছে, তা মুছে দিতে আমরা কাজ করেছি। ইজ়রায়েলের সেনাবাহিনী অসাধারণ কাজ করেছে।’’

ইরানে হামলার পর সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, ‘‘আমেরিকার সেনাবাহিনী ইরানের ফোরডো, নাতান্‌জ় ও ইসফাহানে অবস্থিত তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে ‘সফল ভাবে’ হামলা চালিয়েছে। অভিযানের পরে সমস্ত মার্কিন বিমান নিরাপদে ইরানের আকাশসীমার বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে। অন্য কোনও দেশের সেনাবাহিনী এখনও পর্যন্ত এই ধরনের অভিযান চালাতে পারেনি।’’ তবে হামলার পরে শান্তির বার্তাও দেন ট্রাম্প। লেখেন, ‘‘এখন শান্তির সময়।’’

Advertisement
আরও পড়ুন