ফের নৌকাডুবি। ফের কিছু মৃত্যু। মায়ানমার থেকে বাংলাদেশের দিকে পালাতে গিয়ে সোমবার ভোররাতে ডুবে গেল শরণার্থী বোঝাই নৌকা। প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন। তাঁদের মধ্যে ছ’জন মহিলা, বাকি পাঁচ জন শিশু।
নৌকায় ছিলেন ৬৫ জন। তার মধ্যে অর্ধেকই শিশু। মাত্র এক সপ্তাহ আগেই একই ঘটনা ঘটেছিল বাংলাদেশ-মায়ানমারের সীমান্তবর্তী নাফ নদীতে। ৮ অক্টোবরের সেই দুর্ঘটনায় মারা যান ১০ জন। সেখানেও ১০ জন শিশু ছিল। এ বার কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ এলাকার সাগরে নৌকাডুবি ঘটেছে। ২১ জনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও এখনও অনেকে নিখোঁজ। টেকনাফ থানার অফিসার শেখ আশরাফুজ্জামান ১১ জনের মৃতদেহ উদ্ধারের কথা জানান।
২৯ অগস্ট থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ-মায়ানমারের সীমান্তবর্তী নাফ নদীতে অন্তত ২৬টি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে ১৮২ জন রোহিঙ্গা বলে দাবি পুলিশের। নিজের দেশে সেনা অত্যাচারে অতিষ্ঠ রোহিঙ্গারা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই মাছ ধরার ছোট ছোট নৌকায় উঠে পালানোর চেষ্টা করছেন। এর পরে বিপর্যয়ে মারা যাচ্ছেন অনেকেই।
মায়ানমার সেনার অবশ্য দাবি, তাদের দেশ থেকে যত সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী পালিয়ে গিয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, তা আদপেই ঠিক নয়। সঙ্কট তাই তিমিরেই। এর মধ্যে চিনা সরকারি দৈনিক গ্লোবাল টাইমস-এ একটি নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, মায়ানমারের সঙ্গে নয়াদিল্লি এবং বেজিংয়ের সম্পর্কের কথা ভেবে এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের মিলিত ভাবে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসা উচিত। ‘‘রাখাইন প্রদেশে ত্রাণসাহায্য পাঠানোর জন্য একযোগে ভারত-চিন কাজ করতে পারে। বাংলাদেশে আসা শরণার্থীদের পুনর্বাসনের কাজে সাহায্যও করতে পারে নয়াদিল্লি-বেজিং। বাংলাদেশ-চিন-ভারত-মায়ানমার অর্থনৈতিক করিডর-সহ আশপাশের এলাকায় ভারত এবং চিন ব্যবসা-পুঁজি বৃদ্ধির দিকেও নজর দিতে পারে।’’
আরও পড়ুন: সংঘাত নিয়ে হাসিনা সরকার সংযমের পথে
তাদের বক্তব্য, চিন এবং ভারত প্রতিবেশী দেশ হিসেবে সর্বাগ্রে চায় মায়ানমারে হিংসা বন্ধ হোক। তবে রাখাইন প্রদেশে সাম্প্রদায়িক জটিলতার সমীকরণ মাথায় রাখছে বেজিং। তাদের মতে, বিষয়টি সমাধান করতে মায়ানমার সরকারের যে সময় লাগবে, তা-ও চিনা প্রশাসন বুঝতে পারছে। তাই সমস্যাটি নিয়ে বেজিং উদাসীন নয় বলে দাবি করা হয়েছে নিবন্ধে। একই সঙ্গে ভারতকে নিয়ে তাদের বক্তব্য, দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার মধ্যে সংযোগকারী সেতুর কাজ করে যে দেশ (মায়ানমার), তার স্থিতিশীলতা এবং শাম্তির প্রসঙ্গে ভারত নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে পারে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy