আদালতে শহিদুল আলম। ছবি- এএফপি
ঢাকার পরিচিত আলোকচিত্রী ও দৃক-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলমের দ্রুত ও নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের উপর হামলার অবিলম্বে তদন্তের দাবিও জানিয়েছে সংস্থাটি। তবে আজ অনেকটাই শান্ত ঢাকার পরিস্থিতি। কোথাও কোনও শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল করেননি বলে জানা গিয়েছে।
শহিদুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পড়ুয়াদের সাম্প্রতিক আন্দোলন নিয়ে তিনি ফেসবুক, ইউটিউব-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে গুজব ও উস্কানি ছড়িয়েছেন। তাঁর স্ত্রী অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদের অবশ্য দাবি, একটি আন্তর্জাতিক চ্যানেলে আলোকচিত্রীর সাক্ষাৎকার প্রচারিত হওয়ার পরেই ৫ অগস্ট সাদা পোশাকের পুলিশ শহিদুলকে আটক করে।
কী বলেছিলেন শহিদুল?
রবিবার আল জাজ়িরা (ইংরেজি) চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে শহিদুলকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ‘ছাত্রদের যে আন্দোলন চলছে তা কি শুধু সড়কের নিরাপত্তার দাবিতেই নাকি এর পিছনে আরও বড় কিছু রয়েছে?’ শহিদুল বলেছিলেন, ‘‘একটি অনির্বাচিত সরকার দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় রয়েছে। তারা জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই শাসন করছে। ব্যাঙ্ক লুট করা হচ্ছে, সংবাদমাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হচ্ছে, মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এই সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে চলেছে, বিরোধী মতের লোকজনকে গুম করছে— এ সবই চলছে দেশে। এ সবের বিরুদ্ধেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এই আন্দোলনে। শুধু নিরাপদ সড়কের দাবিতে এই আন্দোলন নয়।’’
শহিদুলের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি তুলে আজ এক বিবৃতি জারি করেছেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়ার উপ-প্রধান ওমর ওয়ারাইচ। তিনি বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ ভাবে নিজের মতামত দেওয়ার জন্য কাউকে আটক করা আদপেই সমর্থনযোগ্য নয়।’’ শহিদুলের আটক হওয়ার ঘটনাকে সরকারের ‘দমননীতির ভয়াবহ নজির’ বলেও মন্তব্য করেন।
অ্যামনেস্টির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘চলতি বছরের শেষ দিকেই বাংলাদেশে নির্বাচন। তার আগে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও নিরাপত্তার অধিকার নিশ্চিত করাতে হবে এই সরকারকে।’’ শহিদুল আলমের মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখেছেন ভারতীয় আলোকচিত্রী রঘু রাই-ও।
কালই শহিদুলকে সাত দিনের হেফাজতে নিয়েছিল পুলিশ। আজ পুলিশি হেফাজত থেকে তাঁকে সরিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পুলিশি হেফাজত চ্যালেঞ্জ করে ও তাঁর সুচিকিৎসার আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে বিচারপতি সৈয়দ মহম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের বেঞ্চ আজ এই নির্দেশ দেয়।
আজ সকাল থেকে ঢাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিভিন্ন এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। আন্দোলনের সময়ে আওয়ামি লিগ অফিসে হামলায় আহত কর্মীদের দেখতে আজ জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy