Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Bangladesh News

৫ বছর কারাদণ্ড বেগম খালেদা জিয়ার, উত্তপ্ত ঢাকা

দুর্নীতির দায়ে কারাদণ্ড বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার। ৫ বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করল আদালত।

দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। কারাদণ্ড এড়াতে পারলেন না খালেদা জিয়া। —প্রতীকী ছবি।

দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। কারাদণ্ড এড়াতে পারলেন না খালেদা জিয়া। —প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঢাকা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৪:২৩
Share: Save:

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ৫ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ঘোষিত হল। শারীরিক ও সামাজিক দিক বিবেচনা করে তাঁকে এই দণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এ মামলার অপর আসামি তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমান-সহ বাকি পাঁচ জনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকারও বেশি জরিমানাও ধার্য হয়েছে।

বিচারক জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে ৪০৯ ও ১০৯ ধারার অপরাধ প্রমাণ হয়েছে। ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ মো.আখতারুজ্জামান দুপুর ২টা ২৯ মিনিটে এ রায় দেন।

এর আগে বেলা সোয়া ২টার দিকে আদালতে হাজির হন খালেদা জিয়া। এ সময় তাঁর সঙ্গে বিএনপি’র শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। রায় শোনার পর আদালতে উপস্থিত খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা হট্টগোল শুরু করেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কুয়েত থেকে এতিমদের জন্য পাঠানো দুই কোটি ১০ লক্ষ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি করে দুদক। ওই বছরই ৪ জুলাই মামলাটি গ্রহণ করে আদালত। তদন্ত শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ ২০০৯ সালের ৫ অগস্ট বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এবং তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমান-সহ মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন।

মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া বাকি আসামিরা হলেন, মাগুরার প্রাক্তন এমপি কাজি সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রাক্তন মুখ্যসচিব কামালউদ্দিন সিদ্দিকি এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান। মামলার ৬ আসামির মধ্যে খালেদা জিয়া জামিনে রয়েছেন। মাগুরার প্রাক্তন সাংসদ কাজি সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ কারাগারে রয়েছেন। আর তারেক রহমান, প্রাক্তন মুখ্য সচিব কামালউদ্দিন সিদ্দিকি, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান পলাতক।

আরও পড়ুন: সেনা পাঠালে জ্বলবে মলদ্বীপ, হুমকি চিনের

যে দুই ধারায় খালেদার বিরুদ্ধে বিচারকাজ পরিচালনা হয়েছে সেগুলো হলো, দণ্ডবিধির ৪০৯ ও দুদক আইনের ৫(২) ধারা। দীর্ঘ এই বিচার প্রক্রিয়ায় মামলা থেকে রেহাই পেতে খালেদা জিয়া উচ্চ আদালতে গিয়েছিলেন একাধিক বার। তাঁর অনাস্থার কারণে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তিন বার এ মামলার বিচারক বদল হয়েছে। পরে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। একই বছরের ৭ মে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে এ দু’টি মামলা বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে স্থানান্তর করা হয়।

আরও পড়ুন: মাথা না তোলে খুদে পাকিস্তান! উদ্বিগ্ন দিল্লি

জিয়া এতিমখানা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছিল গত কয়েক দিন ধরে। আজ যে রায় দেওয়া হবে, তা আগেই জানানো হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে গত কাল সাংবাদিক সম্মেলন করেন খালেদা নিজে। চক্রান্ত করে তাঁকে জেলে পাঠানোর চেষ্টা চলছে বলে খালেদা অভিযোগ করেন।

দলনেত্রীর এই অভিযোগের পর থেকেই বিএনপি কর্মী-সমর্থকরা পথে নামতে শুরু করেন। আজ সকাল থেকেই ঢাকার রাজপথে শুরু হয় বিএনপি-র বিক্ষোভ। খালেদা জিয়ার সাজা ঘোষিত হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া শুরু হয়।

তবে খালেদার সাজা যে হবেই, তা প্রত্যাশিতই ছিল। যে মামলায় তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, তাতে কারাদণ্ড এড়ানোর কোনও পথই ছিল না বলে ওয়াকিবহাল মহলের মত।

তথ্য সহায়তা সৌজন্যে: বাংলা ট্রিবিউন।

*ভ্রম সংশোধন: খালেদা জিয়াকে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে এই প্রতিবেদনে প্রথমে লেখা হয়েছিল। কিন্তু রায় সম্পর্কে কিছুটা বিশদ তথ্য হাতে আসার পরে জানা গিয়েছে, তাঁর কারাদণ্ড সশ্রম নয়, বিনাশ্রম। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE