প্রতীকী ছবি।
মঙ্গলবার থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মায়ানমারে ফেরানোর কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে জানানো হয়েছে, শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো শুরুর প্রস্তুতি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। শরণার্থীদের ফেরত যাওয়ার পরে এই পরিস্থিতিতে মায়ানমারে ফেরত গিয়ে বিপদে পড়তে পারেন রোহিঙ্গারা। তাই এখনই এই প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে না।
গত বছর ২৪ অগস্ট পাকিস্তানি মদতে তৈরি রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠন ‘আরসা’ মায়ানমারের রাখাইন (সাবেক আরাকান) প্রদেশে পুলিশ ও সমারিক ছাউনিতে হামলা করে ১০০-রও বেশি মানুষকে খুন করে। তার পর দিন থেকে অভিযানে নামে মায়ানমারের সেনারা। রাষ্ট্রপুঞ্জের অভিযোগ, জঙ্গি-বিরোধী অভিযানের নামে রাখাইন প্রদেশে পরিকল্পনা মাফিক ‘জাতিগত নিকেশ’ অভিযান চালায় মায়ানমারের সেনারা। তার ফলে এ পর্যন্ত ৬ লক্ষ ৮৮ হাজার রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছেন। কক্সবাজারের কতুপালং ও অন্যত্র শিবির গড়ে তাঁদের রেখেছে বাংলাদেশ সরকার। এই শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ২৩ নভেম্বর সমঝোতা চুক্তি সই করেমায়ানমার ও বাংলাদেশ সরকার। তখনই ঠিক হয়, দু’মাস পর থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরানোর কাজ শুরু
করা হবে। আগামী কাল সেই দু’মাস পূর্ণ হচ্ছে।
ওই সমঝোতা চুক্তি অনুসারে ১৯ ডিসেম্বর শরণার্থী ফেরানোর প্রক্রিয়া দেখভালের জন্য একটি যৌথ কর্মগোষ্ঠী তৈরি করে মায়ানমার ও বাংলাদেশে। গত মঙ্গলবার এই কর্মগোষ্ঠীর সদস্যরা মায়ানমারের রাজধানী নেপিদও-য়ে বৈঠকে বসে শরণার্থী ফেরানোর খুঁটিনাটি বন্দোবস্ত চূড়ান্ত করেন। একটি ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ চুক্তিতেও সই করে দুই দেশ। ঠিক হয়, প্রতিটি পরিবারকে একটি করে ইউনিট ধরে পরিচয় যাচাই ও ফেরানোর কাজ শুরু হবে। শরণার্থীদের পরিচয় যাচাইয়ের জন্য একটি ফরমের বয়ানও চূড়ান্ত হয়।
চুক্তিতে ঠিক হয়, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য মায়ানমার সীমান্তে পাঁচটি ট্রানজিট ক্যাম্প খুলবে বাংলাদেশ। মায়ানমার সরকার ফেরত আসা শরণার্থীদের প্রথমে দু’টি শিবিরে রাখবেন। তার পরে তাঁদের পুড়ে য়াওয়া ভিটেমাটি তৈরি করে দিয়ে সেখানে স্থায়ী ভাবে থাকার ব্যবস্থা করবেন।
কক্সবাজারে শরণার্থী ফেরানো ও ত্রাণ বিষয়ক কমিশনার মহম্মদ আবুল কালাম জানিয়েছেন, এই সব কাজ এখনও শেষ করে ওঠা যায়নি। তাই কাল থেকে শরণার্থী ফেরানো শুরু করা যাচ্ছে না। ঠিক কবে থেকে এই কাজ শুরু হতে পারে, তা-ও জানাতে পারেননি তিনি।
এর মধ্যেই ফেরত যাওয়া নিয়ে নানা ওজর আপত্তি তুলতে শুরু করেছেন কক্সবাজারের কতুপালং শিবিরের রোহিঙ্গারা। তাঁদের দাবি, মায়ানমার সরকারের কাছ থেকে নাগরিকত্বের অধিকার, জমি-বাড়ি-স্কুল-মসজিদ ফিরে পাওয়া এবং নিরাপত্তার নিশচয়তা না-পেলে এক জন শরণার্থীও ফেরত যাবেন না। এই সব দাবিতে কিছু শরণার্থী সোমবার বিক্ষোভও দেখিয়েছেন। কিন্তু সেনারা বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে কয়েক জন রোহিঙ্গাকে আটক করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। তবে সেনা বাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভের কোনও খবর আমার কাছে নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy