Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
International news

টিনের কৌটোয় বাংলাদেশের খাদ্য যাচ্ছে চিন, তাইওয়ান, ভিয়েতনামে

দু'বেলা দু'মুঠো ভাতের ভাবনা নেই আর। চাষের ক্ষেতে উপচোচ্ছে সোনালি ধান। বড় সুখের সময় বাংলাদেশের। ধানে ধন্য। অন্নচিন্তা মুক্ত। চার ফসলি আবাদে সোনার জমি। চাষির মুখে হাসি। দুর্ভাবনায় হারায় না মন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অমিত বসু
শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৭ ১৪:১৬
Share: Save:

দু'বেলা দু'মুঠো ভাতের ভাবনা নেই আর। চাষের ক্ষেতে উপচোচ্ছে সোনালি ধান। বড় সুখের সময় বাংলাদেশের। ধানে ধন্য। অন্নচিন্তা মুক্ত। চার ফসলি আবাদে সোনার জমি। চাষির মুখে হাসি। দুর্ভাবনায় হারায় না মন। হাতে আসছে অফুরন্ত ধন। চাষ করলেই সুখে থাকা বারো মাস। পাকা ফসল কেটে মাড়াই করলে সোনাঝরা ধান। ধান ভাঙলে চাল। চাল ফুটলে ভাত। জুঁইফুলের মতো সুগন্ধী ভাতও দুষ্প্রাপ্য নয়। এ সব এক দিনে হয়নি। অনেক দিনের সাধনা। এমনও হয়েছে চাষ করেও হাতছাড়া ফসল। প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিঃশেষ, অক্লান্ত পরিশ্রমের শেষ আশ্বাস। আজকের শস্যভাণ্ডার দেখলে সে কথা বিশ্বাস হয় না। আট বছর আগের বিবর্ণতা ঘুচিয়ে বর্ণময় সম্ভার। উৎপাদন বেড়েছে ৬০ লাখ মেট্রিক টন। ভাবা যায়! এ সব কী এক কথায় হয়। যেখানে চাষ করলে প্রাপ্য মেলে না, সেখানে পাওয়া হিসেবের চেয়ে অনেক বেশি। জমি বাড়েনি, চাষিরা বদলায়নি, ক্ষেতে ক্ষেতে ফসলের উল্লাস। না, এ কোনও ম্যাজিক নয়। বিজ্ঞান-প্রযুক্তির যথার্থ প্রয়োগে উন্নত ধারায় চাষ-আবাদ। চাষিরাও আর আদ্যিকালের বদ্যিবুড়ো হয়ে বসে নেই। পরিণত, সচেতন মন নিয়ে চাষ করছে। অঙ্ক নির্ভুল, কোন জমিতে কোন বীজ, কী সার, কীসের কীটনাশক, নখদর্পণে। গালে হাত দিয়ে ভাবতে হয় না কোনও কিছুতেই। পাশে কৃষিবান্ধব সরকার। যা দরকার যোগাচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্পষ্ট বার্তা, কৃষিকে আরও উঁচুতে তুলতে হবে। শিল্পের চাপে যেন কোনও ক্ষতি না হয়। টাকায় যাতে চাষ না আটকায় সে দিকে লক্ষ্য। মাত্র ১০ টাকায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। সেখানেই জমা পড়বে কৃষকের ভর্তুকির টাকা। বীজ, সার, যন্ত্রপাতির খরচের কথা ভেবে মাথায় হাত পড়বে না। সব প্রয়োজনই মিটবে সময় মতো। দেয়া নেয়াটা নগদে নয়, ব্যাঙ্ক মারফত। এতে হিসেবের কোনও গোলমাল নেই। কে কত পাচ্ছে তার রেকর্ড থাকছে। কোন খাতে কতটা খরচ তার পুঙ্খানুপুঙ্খ স্টেটমেন্ট ব্যাঙ্কে জমা দেওয়ার দায়িত্ব কৃষকের।

চাষে সাহায্যের হাত প্রশস্ত হওয়ার সুফলও মিলেছে। উৎপাদন বেড়েছে চড়চড়িয়ে। চাল, গম, ভুট্টার ফলন ৩ কোটি ৯১ লাখ টন। ডাল, পেঁয়াজ, পাট ফলছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। কৃষি গবেষণায় বেরিয়ে আসছে নতুন জাতের বীজ। দুর্যোগে পড়া ১২টি জেলাকে টেনে তোলা হচ্ছে। বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে গম, সরষে, ভুট্টা, আলুর বীজ। জমিতে উন্নত মানের সার দিতেও পয়সা খরচের প্রশ্ন নেই। সেচের আওতায় আসছে অধিকাংশ জমি। ৫৮০ কিলোমিটার খালের সংস্কার, অনেকটা কাজে এসেছে। সৌরশক্তিও সেচের কাজে লাগছে। গভীর নলকূপেও জলের চাহিদা মিটছে। বাংলাদেশের পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট নতুন ধরণের ধান, টোম্যাটো বীজ উদ্ভাবন করেছে। যাতে চাষে সময় কম, ফলন বেশি।

ঘরের চাহিদা মিটিয়ে কৃষিপণ্য থেকে যাচ্ছে অনেকটাই। যা রফতানি করতে অসুবিধে নেই। ১ লাখ ৪৯ হাজার ৪৯৮ টন শস্য কিনেছে ১৪টি দেশ। যার মূল্য ২২ কোটি ৪০ লাখ ডলার। ১ হাজার ৭৭ টন টিনের কৌটোয় ভরা আনারস, বেবিকর্ন, ঘৃতকুমারী নিয়েছে চিন, তাইওয়ান, হংকং, ভিয়েতনাম। যা থেকে মিলেছে ৯ লাখ ডলার। পাওয়ার পর আরও চাওয়া। চাওয়ার শেষ নেই। না বললে চলবে কেন। উৎপাদন বেড়েছে বলে আহ্লাদে আটখানা হয়ে বসে থাকার উপায় নেই। আন্তর্জাতিক বাজার হাত পেতেই আছে। দাবি পূরণের দায় বাংলাদেশের।

আরও পড়ুন: এ ভাবে বেঁচে যাওয়া যায়! ভিডিও দেখলে চমকে যাবেন

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tinned Food Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE