দুর্নীতির মামলায় বিএনপি-র নেত্রীর ৭ বছরের কারাদণ্ড। ছবি: সংগৃহীত।
দুর্নীতির মামলায় শাস্তি পাওয়ার পরেও খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বিএনপি-র নেতৃত্বে রাখার বিষয়টি এ বার আটকে গেল হাইকোর্টের একটি আদেশে। ফলে নির্বাচনের আগে ফের বিপাকে পড়ল বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। তার মধ্যেই আজ সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আবেদনে সাড়া দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে তাঁর দফতরে গিয়ে আলোচনা করেছেন বিএনপি নেতৃত্ব। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার শর্ত হিসাবে খালেদা জিয়ার মুক্তি-সহ ৭ দফা দাবি প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েছেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তা নিয়েই এ দিন আলোচনা হয়।
জিয়া অনাথালয় দুর্নীতি মামলায় বিএনপি-র চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া কারাদণ্ড পেয়েছিলেন ৮ ফেব্রুয়ারি। তার ঠিক আগে ২৮ জানুয়ারি বিএনপি নেতৃত্ব দলের গঠনতন্ত্রের একটি সংশোধনী নির্বাচন কমিশনকে পাঠায়। এই সংশোধনীতে দলের গঠনতন্ত্রের ৭ নম্বর ধারাটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানানো হয়। বলা হয়, ২০১৬-র ১৯ মার্চ এই সংশোধনী দলের কাউন্সিলে পাশ করা হয়েছে।
কী ছিল সেই ৭ নম্বর ধারায়? বলা ছিল— দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত কোনও ব্যক্তি বিএনপি-র কোনও স্তরের কমিটির নেতৃত্বে থাকতে পারবেন না এবং দলের টিকিটে নির্বাচনও লড়তে পারবেন না। খালেদা-তারেক যে শাস্তি পেতে চলেছেন, তা বুঝেই রায়ের সপ্তাহ খানেক আগে এই সংশোধনী নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠায় বিএনপি, যাতে দলের গঠনতন্ত্রের ওই ধারায় খালেদা-তারেকের নেতৃত্বে থাকা ও মনোনয়ন পাওয়া আটকে না-যায়।
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন পাওয়া সব দলের গঠনতন্ত্র নির্বাচন কমিশনকে পাঠানো বাধ্যতামূলক। কমিশন খতিয়ে দেখে, এই গঠনতন্ত্র সংবিধানের পরিপন্থী কি না। মোজাম্মেল হোসেন নামে বিএনপি-র এক কর্মী সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখে জানান— এই সংশোধনীতে দুর্নীতিতে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে, তা যেন গ্রহণ করা না-হয়। একই সঙ্গে তিনি হাইকোর্টেও সংশোধনী বাতিলের আবেদন করে বলেন, এর ফলে দুর্নীতিবাজ ও অযোগ্য ব্যক্তিরা বিএনপি-র নেতৃত্বে আসার সুযোগ পাবেন। হাইকোর্ট তাঁর আবেদন গ্রহণ করে এক মাসের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে বলেছে। নিষ্পত্তির আগে পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনকেও সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না-করার নির্দেশ দিয়েছে।
আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, হাইকোর্টের এই অন্তর্বর্তিকালীন আদেশে বিএনপি-র এই গঠনতন্ত্রের সংশোধনী আপাতত কার্যকর হচ্ছে না। আর তার ফলে চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও অস্থায়ী চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নেতৃত্বে রাখা ও মনোনয়ন দেওয়ার সুযোগ থাকছে না। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা দু’টি দুর্নীতির মামলায় ৭ ও ১০ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। তারেকও দু’টি দুর্নীতির মামলায় ৭ ও ১০ বছর এবং একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy