ফাইল চিত্র।
পাঁচ বছরে একশোয় পা দেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। শতবর্ষের তোড়জোড় এখন থেকেই। ৯৫তম জন্মদিন গেল ১ জুলাই। বাংলাদেশের মাথায় কালো মেঘের আনাগোনায় সজাগ সতর্ক। কিন্তু একই সঙ্গে ভয়কে উড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি। শিক্ষক-ছাত্রদের আলোচনায় উঠে এল ‘সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ ও মানবিক চেতনা বিকাশে উচ্চশিক্ষা।’ মানবতার ঢেউ তুলে নাশকতাকে আক্রমণ। জঙ্গিদের রেহাই না দেওয়ার অঙ্গিকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবীরা বরাবরই জাগিয়েছে বাঙালি জাতিকে। অন্ধকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহস জুগিয়েছে। হতাশায় ভেঙে পড়তে দেয়নি কখনই।১৯৪৮’এর ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের বাংলা ভাষাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি। না মানায় প্রতিবাদে গর্জে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। পরোয়া করেনি পাকিস্তান সরকার। ১৯৫২’র ২৬ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী রাজা নাজিমুদ্দিনের ঘোষণা ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু।’ ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে ছাত্রদের। আন্দোলন আছড়ে পড়ে ঢাকার রাস্তায়। ২১ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে শহিদ হন চারজন। রক্ত ছড়ায় রাজপথে। বিক্ষোভের আগুন জ্বলে শহরে। সেই আগুন নিভেছে ১৯৫৬’তে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর।
শিক্ষায় ঢাকার নির্ভরতা ছিল কলকাতার ওপর। সেটা কাটাতে ব্রিটিশ সরকারকে চিঠি লিখেছিলেন স্যার সলিমুল্লাহ। প্রথম পত্রের উত্তর না আসায় দ্বিতীয় পত্রাঘাত। এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাব মঞ্জুর। ১৯২১’এর ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম। একাধিপত্য হারানোর আশঙ্কায় ক্রুদ্ধ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। ঢাকায় পড়াতে না যাওয়ার অলিখিত নির্দেশ শিক্ষকদের। নিষেধ না মেনেই নতুনের স্বাদ নিতে, বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু, ইতিহাসবিদ রমেশচন্দ্র মজুমদারের ঢাকার ডাকে সাড়া। বেতন কলকাতার দ্বিগুনেরও বেশি। বাড়তি সুযোগ বিদেশি শিক্ষকদের সঙ্গ লাভ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন বিদেশ থেকে আসা জ্ঞানী, গুণী পণ্ডিতদের ভিড়। কলাভবন, টিএসসি, কার্জন হলে ছাত্রদের কোলাহল। পরে তৈরি সায়েন্সের অ্যানেক্স ভবন। এতে হবে না। প্রয়োজন আরও বেশি। চাই বিজ্ঞান গবেষণার আরও সুযোগ। প্রাক্তন ছাত্ররা ১০০ কোটির তহবিল গড়তে ব্যস্ত।
দেশের নেতাদের রাজনৈতিক পাঠ এখানেই। ১০ লাখ লোকের সামনে মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’র সম্মান দেয় এখানকার ছাত্ররা। একাত্তরের মুক্তি যুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই স্লোগান ওঠে, ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো।’ ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা তোমার আমার ঠিকানা।’ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ‘ডাকসু’র নির্বাচন হয়নি ২৬ বছর। বাহাত্তরে আইন করে সেনেটে ছাত্র প্রতিনিধি রাখার বিধান, কার্যকরী করা যাচ্ছে না। নেতা তৈরির আঁতুরঘর, নতুন নেতৃত্বের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে। দেশের গণতান্ত্রিক ভিত ক্রমশ শক্ত। উন্নয়নে আকাশ ছোঁয়ার তৎপরতা। থামাতে চাইছে মৌলবাদী জঙ্গিরা। রানওয়ে দিয়ে দৌড়ে টেক-অফ করতে বাধা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা, সব বাধা ভেঙে বাংলাদেশ এগোবেই। রোখার ক্ষমতা নেই কারও। প্রমাদ গুনছে পাকিস্তান। বাংলাদেশ এগোচ্ছে। তারা পিছিয়ে পড়ছে। জঙ্গি সহায়তায় আটকানো দরকার। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষেধাজ্ঞা। তোলার আর্জি মানা হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ভয় পায় পাকিস্তান । তারা যে অন্ধকার সইতে পারে না। কথায় কথায় পাকিস্তানকে চ্যালেঞ্জ জানায়। ‘জাতির বাতিঘর’ নামেই যে তার পরিচয়।
আরও খবর...
অদ্ভুত সব যুক্তিতে বাংলাদেশের পণ্য আটকাচ্ছে জার্মানি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy