Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
সন্ত্রাস নিয়ে সরব ঢাকা

তিস্তার জল গড়াচ্ছে, হাসিনাকে আশ্বাস

আজ সকালেই তাঁকে উষ্ণ টুইট–অভ্যর্থনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ব্রিকস এবং বিমস্টেক-এর হাজারো ব্যস্ততার মধ্যেও বাংলাদেশকে আলাদা গুরুত্ব দিতে চেয়ে আজ সকালে শেখ হাসিনা গোয়ায় পা দেওয়ার পরই বাংলায় টুইট করেন মোদী।

মুখোমুখি। শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী। রবিবার গোয়ায় পিটিআই-এর ছবি।

মুখোমুখি। শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী। রবিবার গোয়ায় পিটিআই-এর ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৪৭
Share: Save:

আজ সকালেই তাঁকে উষ্ণ টুইট–অভ্যর্থনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ব্রিকস এবং বিমস্টেক-এর হাজারো ব্যস্ততার মধ্যেও বাংলাদেশকে আলাদা গুরুত্ব দিতে চেয়ে আজ সকালে শেখ হাসিনা গোয়ায় পা দেওয়ার পরই বাংলায় টুইট করেন মোদী। লেখেন— ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার আতিথ্য গ্রহণ করায় আমি সম্মানিত। ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক মজবুত করার জন্য আপনার ভূমিকাকে ধন্যবাদ জানাই।’

সম্মেলনের ব্যস্ততা মিটিয়ে রবিবার রাতেই মুখোমুখি বৈঠকে বসেন মোদী এবং হাসিনা। সেখানে তিস্তা চুক্তি নিয়ে জটিলতা শীঘ্রই কেটে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন মোদী। নিরাপত্তা নিয়ে সহযোগিতা ও সন্ত্রাস দমনে কার্যকরী পদক্ষেপ করার জন্য হাসিনাকে সাধুবাদ জানান তিনি।

তার আগে ব্রিকস–এর দেশগুলির সঙ্গে বিমস্টেক-ভুক্ত রাষ্ট্রগুলির বৈঠকে নিজের বক্তৃতায় সন্ত্রাসবাদের কড়া সমালোচনা করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে গুলশন-হত্যা কাণ্ডের পর এই প্রথম ভারতে এলেন হাসিনা। আজ তাঁর বক্তৃতায় তিনি বলেন, বিমস্টেক হোক অথবা ব্রিকস— সন্ত্রাসবাদকে নির্মুল করা না-গেলে কোনও গোষ্ঠীভুক্ত উদ্যোগই এগোতে পারে না। তাঁর কথায়, ‘‘সন্ত্রাসবাদ এবং হিংসাত্মক চরমপন্থার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বিমস্টেকভুক্ত দেশগুলির কাছে আবেদন জানাচ্ছি। খুঁজে বের করতে হবে সন্ত্রাসবাদের মস্তিষ্ক, আর্থিক জোগানদার, অস্ত্র সরবরাহকারী এবং প্রশিক্ষকদের।’’ ব্রিকস-এর ধনী দেশগুলি যাতে বিমস্টেকের অপেক্ষাকৃত কম সম্পদশালী দেশগুলির হাত ধরে, সেই আহ্বান জানিয়ে হাসিনার বক্তব্য, ‘‘এই দুই গোষ্ঠী যদি কড়া হাতে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা না-করে, স্থায়ী উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব নয়।’’

উরির সেনা ছাউনিতে জঙ্গি হামলার পর কড়া নিন্দা করেছিলেন হাসিনা। সার্ক বয়কটের ডাকও দিয়েছিলেন তিনি। মোদীর সঙ্গে তাঁর বৈঠকে স্বাভাবিক ভাবেই উঠে এসেছে সীমান্ত-পারের সন্ত্রাস প্রসঙ্গ। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, তিস্তার জলচুক্তি নিয়েও তাগাদা দিয়েছেন হাসিনা। ২০১৮-য় বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। স্বাভাবিক ভাবে তার আগে, অর্থাৎ আগামি বছরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা এই চুক্তিটি সম্পাদন করতে চায় ঢাকা, সে কথা মোদীকে জানিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তিস্তা আর শুধু জলচুক্তি নয়, বাংলাদেশের জনমানসের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে। হাসিনার রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার বিষয়টিও জানানো হয়েছে নয়াদিল্লিকে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিরাপত্তার প্রশ্নে ভারতকে লাগাতার সহযোগিতা করে আসছেন হাসিনা। বাংলাদেশের মাটিতে থাকা ভারত-বিরোধী জঙ্গি ঘাঁটিগুলি নির্মূল করা হয়েছে। প্রতিদানে তিস্তা চুক্তি চান বাংলাদেশের মানুষ।

সূত্রের খবর, মোদী জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সমস্ত পক্ষগুলির ঐকমত্য তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে গত বছর বাংলাদেশে গিয়ে স্থলসীমান্ত চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তখন সেখানে মমতা বলেছিলেন তিনি বাংলাদেশের মানুষের পাশে রয়েছেন। তিস্তার ক্ষেত্রেও মমতার আপত্তিগুলি আলোচনায় মিটিয়ে ফেলে যাতে দ্রুত চুক্তিটি নিয়ে বাস্তবায়নের পথে হাঁটা যায়, সে ব্যাপারে হাসিনাকে আশ্বাস দিয়েছেন মোদী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Modi Hasina Goa Tista Contract
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE