Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মৌলবাদী জামাতই বিএনপির বড় শরিক

নির্বাচনে মূল লড়াই আওয়ামি লিগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের সঙ্গে জাতীয় পার্টির জোট বনাম বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের জোটের। ডিসেম্বরের ৩০ তারিখের নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল রবিবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঢাকা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৩৯
Share: Save:

আদালতের নির্দেশে ইতিমধ্যেই রেজিস্ট্রেশন খারিজ হয়েছে একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে পাকিস্তানের পক্ষ নেওয়া জামাতে ইসলামির। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে স্বাধীনতাকামীদের দমনে গণহত্যা, ধর্ষণ, গ্রাম লুঠের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন জামাতের তখনকার শীর্ষ নেতারা। এখনও জঙ্গি-মদতের হাজারো অভিযোগ এই দলের বিরুদ্ধে। কিন্তু ২২টি আসন তাদের ছেড়ে সেই মৌলবাদী জামাতে ইসলামিকেই প্রধান শরিকের মর্যাদা দিল বিএনপি।

নির্বাচনে মূল লড়াই আওয়ামি লিগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের সঙ্গে জাতীয় পার্টির জোট বনাম বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের জোটের। ডিসেম্বরের ৩০ তারিখের নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল রবিবার। ফলে এই দিনই দুই জোটের আসন ভাগাভাগির চিত্রটা স্পষ্ট হয়েছে। আওয়ামি লিগ তাদের ১৪ দলের শরিকদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে ফেলতে পারলেও হুসেইন মহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টির সঙ্গে কিছুতেই ঐকমত্যে আসতে পারছিল না। শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়েছে, জোটের প্রার্থী হিসেবে ২৬টি আসনে লড়বে জাতীয় পার্টি। পাশাপাশি জোটের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রায় দেড়শো আসনেও তাদের প্রার্থী থাকবে। নিজের এলাকা রংপুর-৩-এর সঙ্গে রাজধানীর অভিজাত এলাকার ঢাকা-১৭ আসনে জোটের প্রার্থী হবেন এরশাদ। এর বাইরে বামপন্থী শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টি জোটের হয়ে পাঁচটি আসনে লড়বে। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল লড়বে তিনটি আসনে। ৩০০ আসনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগ লড়ছে ২৫৮টিতে।

ভোটের আগে ভাবমূর্তি ফেরাতে কামাল হোসেন, আ স ম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, কাদের সিদ্দিকির মতো নামী মুক্তিযোদ্ধাদের দলের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়েছিল খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। দুর্নীতির মামলায় ১৭ বছর কারাদণ্ড পেয়ে জেলে বন্দি খালেদা ভোটে লড়তে পারছেন না। দলের অস্থায়ী চেয়ারম্যান খালেদাপুত্র তারেক রহমানও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পরে লন্ডনে ফেরার। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা দাবি করেছিলেন, জামাতকে গুরুত্ব দেবে না প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেই তাঁরা বিএনপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। কিন্তু ভোটের প্রক্রিয়া যত এগিয়েছে, জামাতকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে বিএনপি। দলের এক নেতার কথায়, অর্থ ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগের বিষয়ে বিএনপি পুরোপুরি জামাতের উপর নির্ভরশীল। তাই তাদের গুরুত্ব না দিয়ে উপায় নেই। তাঁর যুক্তি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের ভাবমূর্তি ভাল। তবে মানুষ তাঁদের ভোট দেয় না। অথচ জামাতে ইসলামির একটা নিজস্ব ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে। সেই ভোট সব আসনে বিএনপির সঙ্গে যুক্ত হয়ে হিসেব বদলে দিতে পারে। জামাত অবশ্য ২২টি আসন পেয়ে খুশি নয়। আরও ১০-১২টি আসনে তারা নির্দল হিসাবে লড়বে বলে জানিয়েছে। তবে এই আসনগুলির বাইরে তারা বিএনপি প্রার্থীদেরই সমর্থন করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE