Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ফাঁসি খালেদার ২ মন্ত্রীর, যাবজ্জীবন সাজা ছেলের

খালেদার আমলে বাংলাদেশ জুড়ে জঙ্গিদের কার্যকলাপ ছড়িয়ে পড়ায় ২০১৪-র ২১ অগস্ট সন্ত্রাস-বিরোধী পদযাত্রার ডাক দিয়েছিল বিরোধী দল আওয়ামি লিগ।

তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর ও আব্দুস সালাম পিন্টু

তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর ও আব্দুস সালাম পিন্টু

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঢাকা শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:০০
Share: Save:

আওয়ামি লিগ নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য ঢাকায় তাঁর জনসভায় জঙ্গিদের দিয়ে গ্রেনেড হামলা করানোর অভিযোগে আগের বিএনপি-জামাতে ইসলামি জোট সরকারের দুই মন্ত্রী-সহ ১৯ জনকে ফাঁসির আদেশ শোনাল আদালত। এই দুই মন্ত্রী হলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং যুবকল্যাণ উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু। এই চক্রান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং আততায়ী জঙ্গিদের সঙ্গে যোগসাজশের কারণে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী এবং বিএনপি-র তৎকালীন এক এমপি-সহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও পুলিশ ও সেনাবাহিনীর নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কয়েক জন-সহ ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

খালেদার আমলে বাংলাদেশ জুড়ে জঙ্গিদের কার্যকলাপ ছড়িয়ে পড়ায় ২০১৪-র ২১ অগস্ট সন্ত্রাস-বিরোধী পদযাত্রার ডাক দিয়েছিল বিরোধী দল আওয়ামি লিগ। কর্মসূচি শুরুর আগে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলীয় দফতরের ঠিক বাইরে একটি ট্রাকের উপর তৈরি অস্থায়ী মঞ্চ থেকে কর্মীদের উদ্দেশে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন তখনকার বিরোধী নেত্রী শেখ হাসিনা। সেই সময়েই মঞ্চ ও তার সামনের অংশে একটার পর একটা গ্রেনেড ছোড়া শুরু করে জঙ্গিরা। সেকেন্ডের ব্যবধানে প্রাণে বেঁচে গেলেও জখম হয়ে শ্রবণশক্তি হারান শেখ হাসিনা। ছিন্নভিন্ন হয়ে প্রাণ হারান কেন্দ্রীয় নেত্রী আইভি রহমান-সহ ২৪ জন। স্‌প্লিন্টারে ক্ষতবিক্ষত হন আরও অন্তত ১০০ জন, যাঁদের অনেকেই এখন প্রতিবন্ধী।

এই হামলার তদন্ত অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতে সরকার অভিযোগ করে, আওয়ামি লিগ নেতৃত্ব নিজেরাই নিজেদের কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে। তার পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে হরকতুল জেহাদি ইসলামি (হুজি) জঙ্গি সংগঠনের দুই নেতা মুফতি হান্নান ও মৌলানা আব্দুস সালাম ধরা পড়ার পরে তাঁরা এই হামলার দায় স্বীকার করেন। আদালতের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়ে তাঁরা জানান, শেখ হাসিনা-সহ আওয়ামি লিগের নেতাদের হত্যার জন্য তৎকালীন শাসক দল বিএনপি ও জামাতে ইসলামির শীর্ষ নেতারা তাঁদের নিয়োগ করেছিলেন। জঙ্গিদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া ছাড়াও হামলার পরিকল্পনা থেকে আততায়ীদের পালানোর বন্দোবস্ত পর্যন্ত সবই হয়েছে মন্ত্রীদের বাড়িতে, এক দল পুলিশ ও সেনাকর্তার উপস্থিতিতে। প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দফতর ‘হাওয়া ভবন’-এ গিয়ে তাঁর পুত্র তারেকের সঙ্গেও দেখা করে আসেন জঙ্গি নেতারা। হামলার কাজে তারেক তাঁদের সব রকমের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন বলে জঙ্গি নেতারা জানিয়েছিলেন।

এ দিন বিএনপি অবশ্য তাদের অস্থায়ী চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং অন্য নেতাদের বিরুদ্ধে রায়কে প্রত্যাখ্যান করেছে। ‘সাজানো মামলায়’ রায়ের বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনেরও ঘোষণা করেছে। তবে হামলায় আহতেরা এই রায়ে খুশি। আওয়ামি লিগ নেতৃত্ব অবশ্য জানিয়েছেন, তারেকেরও ফাঁসি চেয়েছিলেন তাঁরা। কারণ তিনিই ছিলেন চক্রান্তের মাথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE