এই ছবি ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। —জীবন আহমেদের তোলা সেই ছবি
বৃষ্টি ভেজা দুপুর গড়িয়ে বিকেল হব হব করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সামনে, রাস্তার ধারে বাঁধানো ধাপে বসে চুম্বন করছেন দুজনে— এ ছবি তুলে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে মারধর খেতে হল ঢাকার এক চিত্রসাংবাদিককে।
সোমবার অঝোর বৃষ্টি চলছিল ঢাকায়। দুপুরে সেই বৃষ্টিভেজা ক্যাম্পাসে ওই তরুণ তরুণীর প্রকাশ্য চুমুর ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন পেশাদার আলোকচিত্রী জীবন আহমেদ। ছবিটি 'বর্ষা মঙ্গল কাব্য, ভালোবাসা হোক উন্মুক্ত' ক্যাপশনে ফেসবুকের পাতায় পাবলিক পোস্ট করার পরপরই ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকেই ছবিটি ডাউনলোড করে নিজের ওয়ালে শেয়ার করেন। কেউ অভিনন্দন জানিয়ে এই যুগলের সাহসের প্রশংসা করেন, আবার কারও মতে- এমন ঘটনা এই সমাজের সাথে যায় না। এ ভাবে সব রসাতলে যাচ্ছে।
কিন্তু ঘটনা এটুকুতেই থেমে যায়নি। মঙ্গলবার দুপুরে ওই ছবি তোলার স্পটেই ডেকে পাঠিয়ে, জীবনকে একদল মারধর করেন বলে অভিযোগ।
জীবন আহমেদ সংবাদমাধ্যমকে জানান, “লজ্জার বিষয় হচ্ছে আমার নিজের পেশার মানুষরাই ডেকে লাঞ্ছিত করেছেন আমাকে। সবাইকে তো আর চিনতে পারিনি। তবে কয়েকজনকে চিনি। এঁদের মধ্যে আমার নিজের পেশার লোকেরাও আছেন। আর সেটাই আমার কাছে চরম লজ্জার।” কেন মারা হল? জীবনের কথায়, “তাঁরা বলেছেন, ছবিটি তুলে নাকি আমি সবাইকে লজ্জায় ফেলেছি। এতে নাকি ফটোগ্রাফারদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।” জীবন জানিয়েছেন, শাহবাগ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে। যে সংবাদমাধ্যমে তিনি যুক্ত, তারাও পুরোপুরি তাঁর পাশে আছে বলে জানিয়েছেন জীবন।
চিত্রসাংবাদিক জীবন অাহমেদ। —নিজস্ব চিত্র
আরও পড়ুন: দুর্নীতি ও ঋণের ফাঁদ নিয়ে হুঁশিয়ারি ঢাকাকে
সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথাবার্তায় জীবন বলেন, ছবিটি তোলার জন্য তিনি ওই যুগলের থেকে অনুমতি নেননি ঠিকই, কিন্তু লুকিয়েও ছবি তোলেননি। চুম্বনরতরা তার ছবি তোলা টের পেলেও বাধা দেননি, কোনও রকম আপত্তিও করেননি।
কেউ বলছেন এই ছবি সাহসী পদক্ষেপ, কেউ সমালোচনায় মুখর।
আরও পড়ুন: ২৬ বছর পরে মার্চের সেই দিন কি ফেরাতে পারবেন ইমরান?
তবে মারধর-সমালোচনা যেমন হয়েছে, উল্টো দিকে অনেকেই পাশে দাঁড়িয়েছেন জীবনের। ফেসবুক পোস্টে, তাঁর উপর হামলার নিন্দা করেছেন ঢাকার মানবাধিকারকর্মী অপরাজিতা সঙ্গীতার মতো আরও অনেকে।
জীবন আহমেদের ছবি এর আগেও আলোচনায় এসেছিল। লেখক অভিজিৎ রায়ের উপর হামলার পর ঘটনাস্থলের ছবি তুলেছিলেন তিনি। শুধু ছবিই তোলেননি, অভিজিৎ রায় ও তাঁর স্ত্রীকে রাফিদা বন্যাকে হাসপাতালেও নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
বর্তমান ছবিটির সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকে। এডিট করে ছবিটি বানানো হয়েছে বলে মত কারও কারও। এ নিয়ে জীবনের উত্তর— ছবিটিতে কোনও ধরনের এডিট করা হয়নি। তাঁর দাবি, ছবিটি তুলতে তিনি বিশেষ ধরণের লেন্স ব্যবহার করেছেন, এবং সেই কারণেই ব্যাকগ্রাউন্ডটা কিছুটা ভিন্নভাবে এসেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy