Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

সম্প্রীতির কক্ষপথে ফিরতে বিশিষ্টদের মঞ্চ ঢাকায়

শনিবার ঢাকায় একটি সভায় সংগঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘‘অসুস্থ সমাজে বাস করছি আমরা। হত্যা, ধর্ষণ, গণধর্ষণ হচ্ছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঢাকা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৮ ০৩:২০
Share: Save:

বাংলাদেশকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতার কক্ষপথে’ ফেরানোর লক্ষ্য নিয়ে বিশিষ্ট জনেদের একটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করেছে। ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ নামে এই সংগঠনে রয়েছেন আনিসুজ্জামান, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, গোলাম কুদ্দুছ, মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, আবেদ খান, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অধ্যাপক, শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, সম্পাদক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা।

শনিবার ঢাকায় একটি সভায় সংগঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘‘অসুস্থ সমাজে বাস করছি আমরা। হত্যা, ধর্ষণ, গণধর্ষণ হচ্ছে। শিশুধর্ষণ— যেটা পাকিস্তানি হানাদারেরাও করেনি।’’ তাঁর কথায়— ‘‘শাসকরাই মানুষকে ধর্মের পথে নিয়ে যাচ্ছে। কারণ মানুষ পরজগৎ নিয়ে থাকলে শাসন-শোষণে সুবিধা হয়। আবার দুনিয়ায় ন্যায়বিচার না-পেয়েও মানুষ পরকালমুখী হচ্ছেন।’’

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘যে লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, সেখান থেকে কক্ষচ্যূত হয়েছে। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার কি রয়েছে?’’ তিনি বলেন, ‘‘সংবিধানে রাষ্ট্রধর্মও থাকবে, ধর্মনিরপেক্ষতাও থাকবে, এটা হয় না। তেলে-জলে মেলে না। রাজনৈতিক গণতন্ত্রের আগে সামাজিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা জরুরি।’’ তাঁর উপলব্ধি— গণতন্ত্র আজ কেবল অন্তঃসারশূন্য ভোটাধিকারে পরিণত হয়েছে। এমেরিটাস অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘‘বার বার ক্ষমতা পরিবর্তন হয়, আর আঘাত গিয়ে পড়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর। সে জন্য মানুষে মানুষে ঐক্য গড়ে সম্প্রীতি রক্ষা করতে হবে।’’ সম্পাদক আবেদ খান বলেন, ‘‘ধর্মের রাজনীতি রাজনীতির ধর্মকে হত্যা করে। সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থানে তরুণ প্রজন্ম বিভ্রান্ত হয়। ঐক্যবদ্ধ ভাবে তাদের বিভ্রান্তি থেকে সরিয়ে আনতে আমরা সচেষ্ট হব।’’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ধর্মনিরপেক্ষতাকে হত্যা করা হয়েছে। আধুনিকতাকে হত্যা করা হয়েছে। সে জন্য এই একবিংশ শতাব্দীতেও ধর্মীয় সম্প্রীতির কথা বলতে হচ্ছে।’’ অসুস্থতার জন্য অধ্যাপক আনিসুজ্জামান অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে না-পারলেও তাঁর ভিডিয়ো-বার্তা প্রচার করা হয়েছে। তাতে তিনি দেশের অস্থির সময়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ
করে ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ মঞ্চ গড়ার গুরুত্বের কথা বলেন। একাত্তরের সেক্টর কম্যান্ডার্স ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবীব বলেন, ‘‘আমরা অনেক ক্ষেত্রে এগিয়েছি। কিন্তু সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দিক থেকে পারিনি।’’

বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে সংগঠনের প্রতি সহমর্মিতা জানান ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান সামীম মোহম্মদ আফজাল, রামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী গুরুসেবানন্দ, বৌদ্ধ ধর্মগুরু শুদ্ধানন্দ মহাথেরো ও খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE