Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পাক-প্রেমীদের কড়া হুঁশিয়ারি শেখ হাসিনার

হাসিনার কথায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণহত্যা ঘটেছে। কিন্তু একাত্তরের ২৫ মার্চ একটি মাত্র দিনে পাক বাহিনী যত নিরস্ত্র বাঙালিকে হত্যা করেছিল, তার নজির ইতিহাসে নেই। সেই কাজে তাদের সহযোগী হয়েছিল জামাতে ইসলামির নেতৃত্বে রাজাকার, আল বদর, আল শামস-এর মতো সংগঠন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৮ ০২:৫৫
Share: Save:

নির্বাচনের আগে স্বাধীনতার ৩০ লক্ষ শহিদের রক্তঋণকে স্বীকার করে দেশের মধ্যে পাকিস্তানপ্রেমীদের কড়া বার্তা দিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষদের দমন করতে ভয়ানক গণহত্যা চালায় পাকিস্তানের সেনারা। রবিবার সেই উপলক্ষে ঢাকায় একটি আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘পাকি-প্রেমে যাঁরা হাবুডুবু খাচ্ছেন, তাঁদের উপযুক্ত জবাব দিতে হবে। শাস্তি দিয়ে তাঁদের পাকি-প্রেম ভুলিয়ে দিতে হবে। এটা না-পারলে বাঙালির অস্তিত্ব থাকবে না!’’

হাসিনার কথায়, ১৯৭১-এ বাংলাদেশের মানুষ শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে লড়াই করে স্বাধীনতা অর্জন করেন। কিন্তু ১৯৭৫-এ শেখ মুজিবকে হত্যা করে বাংলাদেশকে ফের পাকিস্তান বানানোর চক্রান্ত শুরু হয়। তিনি বলেন, ‘‘৭৫-এর পরে পুরো ইতিহাসটাই বদলে গিয়েছিল। এমনকী হানাদার বাহিনী যে পাকিস্তানি ছিল, সে কথাও বলতে দেওয়া হত না। পাকিস্তানিদের কুকর্ম ভুলিয়ে দিতে শুধু হানাদার বাহিনী বলা হত, পাকি প্রেম এমন পর্যায়ে ছিল।’’ হাসিনার কথায়— ৭৫-এর পরে কয়েক দশকে যারা ক্ষমতায় ছিল, তাদের সকলের লক্ষ্য ছিল হানাদার বাহিনীর এজেন্ডা অন্য ভাবে বাস্তবায়ন করা। বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা। আর এই তালিকায় তিনি জেনারেল জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়ার সঙ্গে হুসেইন মহম্মদ এরশাদের নামও করেন— যিনি এখন তাঁর বিশেষ দূত হিসাবে এখনও মন্ত্রীর পদমর্যাদায় রয়েছেন। হাসিনা বলেন, এই চক্রান্ত উপেক্ষা করে বাংলাদেশের মানুষ আজ দেশকে ‘স্বল্পোন্নত’ থেকে ‘উন্নয়নশীল দেশ’-এর তালিকায় উন্নীত করেছেন। বাংলাদেশের উন্নয়নকে প্রশংসা করছে রাষ্ট্রপুঞ্জও।

হাসিনার কথায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণহত্যা ঘটেছে। কিন্তু একাত্তরের ২৫ মার্চ একটি মাত্র দিনে পাক বাহিনী যত নিরস্ত্র বাঙালিকে হত্যা করেছিল, তার নজির ইতিহাসে নেই। সেই কাজে তাদের সহযোগী হয়েছিল জামাতে ইসলামির নেতৃত্বে রাজাকার, আল বদর, আল শামস-এর মতো সংগঠন। তিনি বলেন, ‘‘এদের বিচার যেন এই মাটিতে চলতেই থাকে, কোনও ক্ষমা নেই!’’ তিনি অভিযোগ করেন, সেনাশাসক জিয়াউর রহমান জামাত নেতাদের দেশে ফিরিয়ে এনেছিলেন, আর তাঁর স্ত্রী খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে গণহত্যার দোসর মতিউর রহমান নিজামি, আলি আহসান মুজাহিদদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে তাদের মন্ত্রী বানিয়েছিলেন।

গত বছর বাংলাদেশ সরকার ২৫ মার্চ দিনটিকে ‘গণহত্যা দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাই কমিশনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বার্তা পাঠ করা হয়। হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি সেই সময়ে পূর্ব পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে দেওয়া ভাষা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ এবং পাকিস্তান প্রশাসনের আর্থিক বঞ্চনা ও শোষণের কথা উল্লেখ করেন। রাজাকারদের হাতে খুন হওয়া তরুণ পরিচালক জহির রায়হানের ‘স্টপ জেনোসাইড’ তথ্যচিত্রটিও এ দিন দেখানো হয়।

কলকাতার ডেপুটি হাই কমিশনেও ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা চক্রে কোন পরিস্থিতিতে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ জীবন পণ করে স্বাধীনতার আন্দোলনে নামতে বাধ্য হন, সে প্রেক্ষাপটটি উঠে আসে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sheikh Hasina Awami League Sheikh Mujibur Rahman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE