শেখ হাসিনা।—ছবি এপি।
এক দিকে বিজয়ী জোটের সাংসদদের শপথ, অন্য দিকে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ভোট বাতিলের নালিশ বিরোধীদের। তার মধ্যেই রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বাংলাদেশে সরকার গড়তে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানালেন বিজয়ী মহাজোটের নেত্রী শেখ হাসিনাকে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার মন্ত্রিসভা গঠন করতে চলেছেন বিপুল সংখ্যাধিক্যে টানা তৃতীয় বারের মতো ক্ষমতায় আসা হাসিনা। এই দিনই শপথ নেবে নতুন মন্ত্রিসভা। হুসেইন মহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি ইঙ্গিত দিয়েছে, এ বার তারা বিরোধী পক্ষের ভূমিকা ছেড়ে মহাজোটের শরিক হিসাবে মন্ত্রিসভায় অংশ নিতে পারে।
ডিসেম্বরের ৩০ তারিখের নির্বাচনে ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২৮৮টিতেই জয়ী হয়েছেন আওয়ামি লিগের শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, তরিকত ফেডারেশন ও বিকল্প ধারার মহাজোট।
আওয়ামি লিগ একাই পেয়েছে ২৫৭টি আসন। বিরোধী জাতীয় ঐক্যজোটের শরিক বিএনপি ৭টি ও গণফোরাম ২টি আসন পেয়েছে। বাকি ৩টি আসনে জয়ী হয়েছেন নির্দল প্রার্থীরা। মহাজোটের সাংসদেরা এ দিন ধুমধাম করে সংসদে শপথ নিলেও অনুপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রধান এরশাদ। দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা জানান, তাঁরা এই সরকারের সঙ্গেই
থাকতে চান। তিনি বলেন, ‘‘দলের নেতৃত্ব দফায় দফায় বৈঠকে বসে এখনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে পারেননি। অধিকাংশ জয়ী সাংসদ বলেছেন, তাঁরা সরকারের শরিক হিসাবে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। মানুষবিরোধী হওয়ার জন্য তাঁদের ভোট দেননি। এ বার মহাজোটের নেত্রী হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্তসিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ প্রশ্ন ওঠে, তা হলে সংসদে কি বিরোধী পক্ষ থাকবে না? জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘‘দেশের মানুষ তো বিরোধী দল চাননি। তাঁরা সরকারপক্ষ হিসাবেই আমাদের ভোট দিয়েছেন।’’
এ দিনই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগিরের নেতৃত্বে বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন কমিশনে গিয়ে নির্বাচন বাতিল করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে ফের ভেটের দাবি জানান। কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই এই নির্বাচনের ফলাফলকে আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। নির্দলীয় সরকারের অধীনে দেশে ফের নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি।’’ তাঁর দাবি, নির্বাচনের নামে মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা ও প্রতারণা করা হয়েছে। বিরোধী বামজোটও নির্বাচন বাতিলের দাবিতে এ দিন ঢাকা ও অন্য শহরগুলিতে মুখে কালো কাপড় বেঁধে বিক্ষোভ অবস্থান করে। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ উড়িয়ে বলেছেন, ‘‘সারা বিশ্বের নজর ছিল এই নির্বাচনে। সব দিক খতিয়ে দেখে আন্তর্জাতিক মহল এই নির্বাচনকে শুধু অবাধ ও সুষ্ঠুই বলেনি, নির্বাচন কমিশনকে সাধুবাদও জানিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy