আইওসি-র এক পদস্থ কর্তা জানান, এ দিনের বৈঠকে কোকার প্লান্ট নিয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ। সব ঠিকঠাক চললে এক মাসের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যেতে পারে।
নতুন কারখানাটির গুরুত্ব কতখানি?
আইওসি-র এক কর্তা জানান, হলদিয়া শোধনাগারে বছরে ৭৫ লক্ষ টন পরিশোধিত তেল উত্পাদিত হত। তা বেড়ে এখন ৮০ লক্ষ টন। শোধানাগারের বর্জ্য হিসাবে উত্পন্ন হয় ফার্নেস অয়েল ও বিটুমিন। কিন্তু বাজারে এই দুই পণ্যের চাহিদা কম। দামও কম। ফলে হলদিয়া শোধনাগারে উত্পাদিত ফার্নেস অয়েল ও বিটুমিনের কিছুটা এখন নষ্ট করে দিতে হয়। সংস্থা সূত্রের খবর, বছর কয়েক আগেই আরও একটি থার্মাল ক্র্যাকিং ইউনিট (চলতি কথায় কোকার প্ল্যান্ট) বসিয়ে বর্জ্য ফার্নেস অয়েল ও বিটুমিন থেকে কোক-ডিজেল-কেরোসিন তেল উত্পাদনের কথা ভাবা হয়েছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রস্তাবিত কোকার কারখানায় উত্পাদনের ২০% হবে কোক, আর ৮০% হবে কেরোসিন-ডিজেল। এতে এক দিকে যেমন শোধনাগারের উত্পাদন ক্ষমতা বেড়ে যাবে, অন্য দিকে কম চাহিদার ফার্নেস অয়েল ও বিটুমিনের জায়গায় বেশি চাহিদার কোক-কেরোসিন-ডিজেল উত্পাদন করে পূর্বাঞ্চলের বাজার আরও বেশি ধরা যাবে বলে কর্তাদের দাবি।
আইওসি সূত্রের খবর, ১৯৭৫ সালে যখন প্রকল্পের সূচনা হয়, তখন হলদিয়া শোধনাগারে বছরে মাত্র ২৫ লক্ষ টন তেল শোধনের ক্ষমতা ছিল। ধীরে ধীরে তা বাড়িয়ে বছরে ৮০ লক্ষ টন করা হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও লাভের মুখ দেখেনি এই শোধনাগার। কর্তাদের আশা, কোকার কারখানা গড়ে উত্পাদন ক্ষমতা বাড়ালে তবেই প্রকল্পটি আর্থিক ভাবে লাভের মুখ দেখতে পারবে।
আইওসি সূত্রের খবর, বর্তমানে হলদিয়ায় শোধনাগারটি যেখানে রয়েছে, তার ঠিক পাশেই কোকার কারখানার জমি বাছা হয়েছে। কোকার প্রকল্প তৈরি করতে প্রয়োজন ৫০ একর জমি। বন্ধ হয়ে যাওয়া হলদিয়া সার কারখানার বাড়তি জমি থেকে ৮০ একর আইওসিকে দিয়েছেন কলকাতা বন্দর কতৃর্পক্ষ। সেই জমিতে কারখানা গড়তে চেয়ে ২০০৮ সালে পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র চেয়েছিল তারা। ২০০৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ মন্ত্রক প্রকল্পের ছাড়পত্র দেয়। কিন্তু দুনিয়া জুড়ে আর্থিক মন্দার পরিস্থিতিতে আইওসি তখন নতুন বিনিয়োগে তত্পর হয়নি।
এর পরে হলদিয়ায় নতুন কারখানা গড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে পরিবেশ মন্ত্রক। আইওসি সূত্রে খবর, এ বার পর্ষদের অনুমোদন পাওয়ার ৩৬ মাসের মধ্যে প্রস্তাবিত কারখানায় বাণিজ্যিক উত্পাদন শুরু করা যাবে।