শেয়ার বাজার তুঙ্গে। বহু শেয়ার এখন সর্বকালীন উচ্চতায়। ফলে তা ছোট লগ্নিকারীদের কাছে এক রকম ধরাছোঁয়ার বাইরে। সাধারণ মানুষ যাতে ‘নামী’ শেয়ারে লগ্নি করতে পারেন, তার জন্য অনেক সংস্থা যাদের শেয়ারের দর বেশ উপরের দিকে, তারা প্রতিটি ১০ টাকার ফেসভ্যালু-যুক্ত শেয়ারকে ১০টি ১ টাকার অথবা ৫টি ২ টাকার শেয়ারে বিভাজন করছে। এর ফলে শেয়ারের সংখ্যা ১০ গুণ বা ৫ গুণ বেড়ে উঠছে। অন্য দিকে ওই শেয়ারের বাজার দর নেমে আসছে যথাক্রমে এক-দশমাংশ অথবা এক-পঞ্চমাংশের কাছাকাছি। এর ফলে দাম নেমে আসছে নাগালের মধ্যে। বিভাজিত হওয়ায় বাড়ছে শেয়ারের জোগানও।
একটি কাল্পনিক উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটি বোঝার চেষ্টা করা যাক। ধরা যাক, একটি সংস্থার ১০ টাকা ফেসভ্যালু-যুক্ত শেয়ারের বাজার দর ৫,০০০ টাকা। ফলে অনেকেরই নাগালের বাইরে। এই ১০ টাকার শেয়ারকে যদি ভেঙে ১ টাকা মূল্যের ১০টি শেয়ার করা হয়, তবে তাৎক্ষণিক ভাবে এই শেয়ারের বাজার দর নেমে আসতে পারে ৫০০ টাকার আশেপাশে। নেমে আসা দামে এই শেয়ার হয়তো অনেকের পক্ষেই কেনা সম্ভব হবে। এর ফলে বেড়ে উঠতে পারে ওই শেয়ারের চাহিদা।
শেয়ার বিভাজনের পরে চাহিদা হঠাৎ বেড়ে ওঠে বলে শেয়ারের দামও সাধারণত ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে উঠতে দেখা যায়। দাম বাড়তে শুরু করে বিভাজনের সিদ্ধান্ত ঘোষিত হওয়ার পর থেকেই। চলে বিভাজনের পরেও। সম্প্রতি এই কারণে আমরা দাম বাড়তে দেখেছি অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক, স্টেট ব্যাঙ্ক এবং আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক শেয়ারের। বিভাজনের সিদ্ধান্তে দাম অনেকটাই বেড়ে উঠেছে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক শেয়ারেরও। সম্প্রতি বিভাজন করেছে অথবা বিভাজনের পথে এগোচ্ছে ৮টি সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্ক শেয়ারের মধ্যেই এই ভাঙার প্রবণতা একটু বেশি দেখা যাচ্ছে। সঙ্গের সারণিতে দেওয়া হল বিশদ তথ্য। ২০১৩ সালে শেয়ার বিভাজন করেছে ৭৯টি সংস্থা। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত এই পথে হেঁটেছে ৭৫টি সংস্থা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিভাজনের কারণে লাভবান হয়েছেন সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা।