উত্তেজনায় ভর করে বার তিনেক ছুঁলেও, সেনসেক্স এখনও বাইশ হাজারের শৃঙ্গে চেপে বসতে পারেনি। স্পর্শ করে প্রতিবারই নেমে এসেছে। তবে এটা বলাই যায় যে, সর্বকালীন উচ্চতার আশেপাশেই রয়েছে মুম্বই সূচক। এবং যা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে তাতে মনে হয়, নির্বাচন পর্যন্ত তা ঊর্ধ্বমুখীই থাকবে। গত কয়েক দিনে নিফ্টিও ঘুরেছে ৬৫০০ অঙ্কের বলয়ের মধ্যে।
সূচকের ঊর্ধ্বগতির কারণ ১) কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপির সরকার গড়ার সম্ভাবনা। ২) ভোগ্যপণ্য মূল্যবৃদ্ধি সূচক ৫ শতাংশের নীচে নেমে আসা, যা সুদ কমানোয় ইন্ধন জোগাতে পারে, এবং ৩) বিদেশি লগ্নি-প্রবাহ বৃদ্ধি। এ ছাড়া, রফতানি না বাড়লেও, আমদানি কমে আসায় এবং বিদেশি লগ্নি বেড়ে ওঠায় বাজারে ডলারের জোগান বেড়েছে। ফলে বেশ খানিকটা বেড়েছে ডলারে টাকার দাম। কিছুটা হলেও শিথিল করা হয়েছে সোনা আমদানির উপর রাশ। ডলারের দাম কমায় সপ্তাহের শেষ দু’দিনে সোনার দামও বেড়েছে কিছুটা।
পাশাপাশি মার্কিন সরকার আর্থিক ত্রাণ কমাতে শুরু করলেও, বস্তুত তার কোনও প্রভাব পড়েনি ভারতীয় শেয়ার বাজারে। বরং এ দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশার বাণী শুনিয়েছে অগ্রণী আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা সংস্থা গোল্ডম্যান স্যাক্স। ভারতের রেটিং এক ধাপ বাড়িয়ে সাম্প্রতিক রিপোর্টে গোল্ডম্যান জানিয়েছে, আগামী এক বছরে ১৭% পর্যন্ত বেড়ে উঠতে পারে নিফ্টি। লগ্নিকারীদের জন্য এটি খুশির খবর। এর আগে ভারত সম্পর্কে আশার কথা শুনিয়েছিল বিদেশি সংস্থা বিএনপি পারিবাস। নিফ্টি ৭০০০ পয়েন্টে পৌঁছতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অগ্রণী দু’একজন ভারতীয় ইক্যুইটি বিশ্লেষকও। তা যদি হয়, তবে সেনসেক্স পৌঁছে যেতে পারে ২৬ হাজারে। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কোনও নিশ্চয়তা নেই। বাজারকে পাকাপাকি নির্ভর করতে হবে অর্থনীতির উপরেই। শিল্প এখনও মন্থর। অর্থাৎ এ বারও বড় ভরসা কৃষিই। সূচককে অনেকটাই নির্ভর করতে হবে বর্ষার উপর। পণ্যমূল্য যদি নিয়ন্ত্রণে থাকে ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যদি সুদ কমানোর পথে হাঁটে, তবে শিল্পে কিছুটা প্রাণ ফিরতে পারে। এই দিক থেকে সুদ কমানো বড় মদত জোগাতে পারে মূল দুই সূচককে।