Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
ফয়সালার দিনে চিন্তিত চোখ বাজারে

লম্বা দৌড়ে ঘোড়া অর্থনীতির স্বাস্থ্যই

বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, বাজার জোর দেয় সরকারের স্থায়িত্বে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলে যার সম্ভাবনা স্বাভাবিক ভাবেই বেশি। কারণ, তাতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়। বজায় থাকে সংস্কারের গতি।

কোন পথে: মুখে হাসি নাকি চাপা দুশ্চিন্তা? আগামী দিনে কেমন হবে শেয়ার বাজারের ছবি?

কোন পথে: মুখে হাসি নাকি চাপা দুশ্চিন্তা? আগামী দিনে কেমন হবে শেয়ার বাজারের ছবি?

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী
শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৯ ০২:৩৩
Share: Save:

শুধু বুথফেরত সমীক্ষায় সংখ্যাগরিষ্ঠ (এবং সেই সূত্রে স্থায়ী) সরকারের ইঙ্গিত মিলতেই সোমবার ১,৪২২ পয়েন্ট লাফ দিয়েছিল সেনসেক্স। নিফ্‌টি বেড়েছিল ৪২১ অঙ্ক। মঙ্গলবার কিছুটা পড়লেও বুধবার সূচকের মুখ ফের কিছুটা উপরের দিকে। সেনসেক্স উঠেছে ১৪০ পয়েন্ট। মোটের উপরে ব্যালট বাক্সের দিকে চোখ রেখেই ওঠা-নামা করছে শেয়ার বাজার। আগামী কয়েক দিনও সেই ধারা বজায় থাকার সম্ভাবনা। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, সূচকের এই ব্যালট বা সরকার নির্ভরতা বজায় থাকবে আগামী কয়েক দিনই। দীর্ঘ মেয়াদে কিন্তু তার ওঠা-নামা নির্ভর করবে দেশ ও বিশ্বের অর্থনীতির হাল-হকিকতের উপরেই।

বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, বাজার জোর দেয় সরকারের স্থায়িত্বে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলে যার সম্ভাবনা স্বাভাবিক ভাবেই বেশি। কারণ, তাতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়। বজায় থাকে সংস্কারের গতি। সমীক্ষায় সেই আশার ছবি ফুটে ওঠাই বাজারের উত্থানের কারণ বলে তাঁদের দাবি। কিছুটা সেই কারণেই বৃহস্পতিবার সাগ্রহে টিভির পর্দায় চোখ রাখবে শেয়ার বাজার। চাইবে কেন্দ্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকারকেই। ফলে সংসদ ত্রিশঙ্কু হলে, বাজারে বড় পতনের সম্ভাবনা। কিন্তু তেমনই একই সঙ্গে বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘ মেয়াদে বাজার চাঙ্গা থাকার জন্য জোর দিচ্ছেন দেশের অর্থনীতির ভিত পোক্ত থাকার উপরে।

ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি এবং স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখের বক্তব্য, দেশের অর্থনীতির দিশা নিয়ন্ত্রণ করে, এমন বেশ কিছু বিষয় নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। যেমন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর এস কে কৌশিকও বলেন, ‘‘তেলের দাম বাড়লে তা আমদানি করতে বাড়তি ডলার খরচ করতে হবে। পড়বে টাকার দাম।’’ অর্থাৎ, তেল আমদানির খরচ বাড়ার পাশাপাশি চলতি খাতে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনে ঘাটতিও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা। আমেরিকা-চিনের বাণিজ্য যুদ্ধও কপালে আশঙ্কার ভাঁজ বজায় রাখবে বলে মনে করছে বাজার মহল।

দেখা যাচ্ছে, ২০১৮-১৯ সালে অনেক সংস্থারই ফলাফল আশানুরূপ নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, সংস্থার আয়, মুনাফার ছবি এমন বিবর্ণ হলে, তার প্রভাব বাজারের উপরে পড়বেই।

কমল বলেন, শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধি শেয়ার বাজার চাঙ্গা হওয়ার অন্যতম শর্ত। কিন্তু আবাসন, ওযুধ তৈরির সংস্থা, গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রপাতি তৈরির সংস্থা, ইস্পাত-সহ বেশ কিছু শিল্পের হাল খারাপ। তাই ওই সব ক্ষেত্রের অনেক সংস্থার শেয়ার দর নিম্নমুখী।

ভাল বর্ষার উপরে গ্রামাঞ্চলের চাহিদা নির্ভরশীল। এ বার বর্ষা স্বাভাবিক হবে বলে মনে করা হলেও মহারাষ্ট্রের কিছু অঞ্চলের খরার সম্ভাবনা চিন্তায় রেখেছে বাজারকে।

বাজার বুঝতে চাইছে, বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থা ভারতে ডলার ঢালবে না গুটিয়ে নেবে। বুথ ফেরত সমীক্ষার পরে দু’দিনে ওই সব সংস্থা ভারতের বাজারে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ঢাললেও বুধবার তারা প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার লগ্নি তুলে নিয়েছে। তবে দেকো সিকিউরিটিজের কর্ণধার অজিত দে মনে করেন, ‘‘ভারতে কিছু সমস্যা থাকলেও এখনও বৃদ্ধির নিরিখে এ দেশ দ্রুততম। বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থার তা উপেক্ষা করা শক্ত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Stock Market Sensex NIFTY Indian Economy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE