সুব্রহ্মণ্যম স্বামী তথা আরএসএস নেতারা যখন রঘুরাম রাজনের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছিলেন, তখন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন এই গভর্নর পাশে পেয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে। যিনি বলেছিলেন, নীতির সমালোচনা হতেই পারে। কিন্তু ব্যক্তিকে আক্রমণ ঠিক নয়। অথচ সংসদীয় কমিটিকে পাঠানো নোটে ছোট শিল্পকে ঋণ দেওয়া নিয়ে রাজনের বক্তব্যের প্রসঙ্গ মঙ্গলবার উঠতেই, তীব্র কটাক্ষ ধেয়ে এল অর্থমন্ত্রীর তরফে। যা দেখে বিস্মিত সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকেই।
ওই নোটে ছোট শিল্পকে ঋণ দেওয়ার কেন্দ্রীয় প্রকল্প, মুদ্রা যোজনা আগামী দিনে সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন রাজন। বলেছিলেন, ঋণ বিলির অবাস্তব লক্ষ্য ও ঋণ মকুবের বদলে কেন্দ্রের বরং পরবর্তী সঙ্কটের দিকে নজর দেওয়া উচিত। আজ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পরে সাংবাদিক বৈঠকে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই রাজনকে বেঁধেন জেটলি। বলেন, ‘‘দরকারের সময়ে পদক্ষেপ করার থেকে, পরে ময়না তদন্ত করা যে কারও পক্ষেই সহজ।’’
অনেকের মতে, রাজন প্রধানমন্ত্রীর মুদ্রা যোজনাকে নিশানা করেছিলেন। যে প্রকল্পে গত তিন বছরে ৬ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ বিলি হয়েছে বলে মোদী সরকারের হিসেব। কিন্তু বাস্তব হল, এর মধ্যে ১৪ হাজার কোটির ঋণ এখনই অনাদায়ি। এই অবস্থায় ভোট বছরে দাঁড়িয়ে জেটলি আসলে প্রধানমন্ত্রীর হয়েই মুখ খুলেছেন বলে ধারণা তাঁদের।
নোটে রাজন লিখেছিলেন, তাঁর আমলে ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হলেও, ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না জানা নেই। তার উপরে সম্প্রতি বিরোধীরাও বিজয় মাল্যের মতো ঋণ খেলাপিকে সাহায্যের অভিযোগে বিঁধছেন জেটলিকে। এই অবস্থায় তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ দিনের বৈঠকে ব্যাঙ্ক কর্তাদের প্রতারণায় অভিযুক্ত ও স্বেচ্ছায় ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেন অর্থমন্ত্রী।
সেই সঙ্গে যে প্রসঙ্গে রাজনকে তাঁর আক্রমণ, সেই ছোট-মাঝারি সংস্থাকে সহজে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ধার দিতে ৫৯ মিনিটে ঋণ মঞ্জুরের প্রকল্প চালুর কথা ঘোষণা করেছেন জেটলি। সাজিয়েছেন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের লক্ষ্যগুলি। দাবি করেছেন, অনাদায়ি ঋণ কমছে। সকলের কাছে আর্থিক পরিষেবা পৌঁছচ্ছে কি না, তা দেখতে নতুন সূচক তৈরির কথাও বলেছেন। তবে শেষে রাজনকে আক্রমণই এ দিন হয়ে ওঠে সব থেকে বড় চর্চার বিষয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy