প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের নোটবন্দির সিদ্ধান্ত। এবং তার পরে তড়িঘড়ি জিএসটি চালু। ছোট ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ, এই সমস্ত পদক্ষেপের ধাক্কা সব থেকে বেশি বইতে হয়েছে তাঁদেরই। এমনকি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি অনুৎপাদক সম্পদের বোঝায় কাহিল হয়ে পড়ায় ঋণ পেতেও সমস্যায় পড়ছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে ভোটের মুখে আর কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় নরেন্দ্র মোদী সরকার। দু’টি সরকারি সূত্রের খবর, ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য এ বার একগুচ্ছ সুবিধা আনার কথা খতিয়ে দেখছে কেন্দ্র। যার অন্যতম কম খরচে ঋণ ও নিখরচায় দুর্ঘটনা বিমার সুবিধা। ভাবা হচ্ছে পেনশনের কথাও।
ব্যবসায়ীদের এই অসন্তোষ আঁচ করে ইতিমধ্যেই বেশ কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র। তা সামাল দিতে ঋণের রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উপরে নাগাড়ে চাপ দিচ্ছে তারা। দ্রুত এবং সহজে ধার দেওয়ার রাস্তা খুলতে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বলা হয়েছে ৫৯ মিনিটের মধ্যে ঋণে নীতিগত সায় দেওয়ার কথাও।
ওই দুই সূত্রের দাবি, এ বার ছোট ব্যবসায় ঋণের ক্ষেত্রে ভর্তুকি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে বিক্রি ৫ কোটি টাকার মধ্যে যাঁদের, তাঁরা ব্যাঙ্ক ঋণ নিলে সুদে যাতে ২ শতাংশ বিন্দু ছাড় পান, তার ব্যবস্থা করার কথা ভাবা হচ্ছে। ওই টাকা ব্যাঙ্কগুলিকে ভর্তুকি হিসাবে মেটানো হবে সরকারি কোষাগার থেকে।
ঋণের পরিমাণ বেশ কিছুটা বাড়াতে ব্যাঙ্কগুলিকে তা দেওয়ার জন্য বিশেষ কাউন্টার খোলার কথাও বলা হতে পারে।
যদিও সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, এই সমস্ত খরচ সামলানোর মতো অবস্থা আদৌ আছে তো মোদী সরকারের? বিশেষত জিএসটি আদায় যেখানে প্রত্যাশার তুলনায় বেশ কম হয়েছে। এখনও লক্ষ্য অনুযায়ী সিন্দুক ভরাতে পারেনি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণ থেকে আয়। সেই সঙ্গে বাড়ছে রাজকোষ ঘাটতিও।
তবে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, ছোট ব্যবসায়ীরা বিজেপির ভোটের অন্যতম উৎস। তার উপরে সম্প্রতি তিন রাজ্যে বিধানসভা ভোটে হার দেখার পরে দ্রুত যে ভাবে সম্ভব তাঁদের ক্ষত ভরাট করতে তৎপর কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে সূত্রের দাবি, ছোট ব্যবসায়ী এবং তাঁদের আওতাভুক্ত কর্মীদের মন পেতে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বিমায় কিছু সুবিধা দেওয়ার কথাও। ভাবা হচ্ছে, ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য পেনশনের ব্যবস্থা এবং মহিলা উদ্যোগীদের ব্যাঙ্ক ঋণের ক্ষেত্রেও সুদে বিশেষ ছাড়।
যদিও তাতে বরফ কতটা গলবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মনে। কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের সেক্রেটারি জেনারেল প্রবীণ খান্ডেলওয়াল যেমন বলছেন, বর্তমানে ৭ কোটি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর মধ্যে মাত্র ৪% ব্যাঙ্ক ঋণের সুবিধা নিতে পারেন। বাকিরা ধারের জন্য ব্যাঙ্কের পথে এগোনোর সুযোগই পান না। ফলে মূলত তাঁদের নির্ভর করতে হয় মহাজনের উপরেই। তাই খান্ডেলওয়ালের প্রশ্ন, সুদে এই ছাড় দিয়ে আখেরে লাভ হবে কতটা?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy