স্কাইপ’, ‘হোয়াটসঅ্যাপ’ বা ‘ভাইবার’-এর মতো জনপ্রিয় ইন্টারনেট ভিত্তিক ‘অ্যাপ’গুলি থেকে ল্যান্ডলাইন নম্বরে ফোন করার সুযোগ মিলতে পারে অদূর ভবিষ্যতে। সেই ব্যবস্থা তৈরির পক্ষেই মত দিয়েছে কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রককে নিয়ে গড়া গোষ্ঠী। এ জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা দেয় এমন সংস্থা এবং টেলিকম সংস্থাগুলির মধ্যে চুক্তির প্রস্তাবে সায় দিয়েছে তারা।
দেশের মধ্যে ওই ধরনের জনপ্রিয় অ্যাপ থেকে এখন ল্যান্ডলাইনে ফোন করার সুযোগ নেই। মোবাইলে ফোন করতে হলে যাঁকে ফোন করা হয়, তাঁর ফোনেও ওই ধরনের অ্যাপ থাকতে হয়। যেমন কেউ তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে অন্যের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে নেটের মাধ্যমে ফোন করতে পারেন। না-হলে ফোন করা যায় না। কারণ উভয় ক্ষেত্রেই এ জন্য ইন্টারনেট পরিষেবার (স্কাইপ, হোয়াটেঅ্যাপ বা ভাইব) সঙ্গে টেলিকম পরিষেবা সংস্থার (অর্থাৎ, ল্যান্ডলাইন বা মোবাইলের সংযোগ দেয় যারা) চুক্তি থাকা দরকার। না-হলে নেট পরিষেবা থেকে শুরু হওয়া কল টেলিকম সংস্থার ফোনে পৌঁছনো সম্ভব নয়।
উভয় ধরনের সংস্থার মধ্যে সেই চুক্তির পক্ষেই ছাড়পত্র দিয়েছে মন্ত্রিগোষ্ঠী। ফলে নেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা ও টেলিকম সংস্থার মধ্যে চুক্তি হলে অ্যাপ থেকে ল্যান্ডলাইন বা মোবাইলে (যেখানে অ্যাপ নেই) ফোনের সুযোগ তৈরির পথে বাধা কাটবে বলেই ধারণা সংশ্লিষ্ট মহলের। সে ক্ষেত্রে ফোনের খরচও অনেকটাই কমবে। কারণ মাসুল স্থির হবে কতটা নেট পরিষেবা ব্যবহৃত হল (ডেটা), তার উপর।
তবে মন্ত্রিগোষ্ঠীর ছাড় পেলে সবটা এখনই হয়ে যাবে, এমনও নয়। কারণ হয় এই প্রস্তাব টেলিকম দফতর, নয়তো টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়ার (ট্রাই) কাছে যাবে। তাদের সায় মিললে তবেই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
পাশাপাশি টেলিকম সংস্থাগুলি এই প্রস্তাবকে কী ভাবে নেয় এবং দেশের নিরাপত্তার বিষয়টি কী ভাবে নিশ্চিত করা যায় তা-ও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ইন্টারনেট পরিষেবার কলে সাধারণ ভাবে নজরদারি করা য়ায় না। সে ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা কার্যকরের আগে কোনও একটি রক্ষাকবচ তৈরি জরুরি।
টেলিকম শিল্পও ইন্টারনেট ভিত্তিক ফোন করার সুবিধায় আপত্তি তুলেছিল। তাদের বক্তব্য ছিল, ফোনের পরিষেবা দিতে তাদের লাইসেন্স নিতে হয়। স্পেকট্রাম কিনতে হয়। সব মিলিয়ে সংস্থাগুলিকে একটা বড়সড় অর্থ খরচ করতে হয় এই পরিষেবার সরকারি স্বীকৃতি পেতে। কিন্তু ইন্টারনেট পরিষেবা সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। ফলে প্রতিযোগিতার বাজারে তাদের চেয়ে পিছিয়ে পড়়বে টেলিকম সংস্থাগুলি।
সেলুলার অপারেটর্স অ্যাসো-সিয়েশন অব ইন্ডিয়ার ডিজি রাজন এস ম্যাথুজ মঙ্গলবার দিল্লি থেকে ফোনে তাঁদের পুরনো অবস্থানের ব্যাখ্যা করেই বলেন, ‘‘মন্ত্রিগোষ্ঠীর ছাড়পত্রের বিষয়টি জানি না। তবে আমাদের একটাই কথা। একই ধরনের পরিষেবা দেয় (এ ক্ষেত্রে ফোন) এমন যে কোনও সংস্থার (টেলিকম বা নেট পরিষেবা প্রদানকারী) ক্ষেত্রে একই নিয়ম হওয়া উচিত।’’
অন্য দিকে, দেশে এখনও ইন্টারনেট পরিষেবার পরিকাঠামোর যা হাল, অ্যাপ থেকে ল্যান্ডলাইন বা মোবাইলে ফোন করার বিষয়টি কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকেরই মনে। সে ক্ষেত্রে নেট পরিষেবা বিঘ্নিত হলে ফোন কতটা নির্বিঘ্নে হবে, প্রশ্ন সেটাই।
এই সব জট কাটিয়ে গোটা বিষয়টি কবে চূড়ান্ত রূপ পায়, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy