ছবি: সুমন বল্লভ
চায়ের আড্ডায় তর্কের তুফান তুলতে বাঙালির খ্যাতি বিশ্ব জোড়া। কিন্তু সেই চা পানের হিসেবে বিশ্বে তো বটেই, দেশেও অন্য অনেক রাজ্যের চেয়ে পিছিয়ে পশ্চিমবঙ্গ। দার্জিলিং চায়ের রাজ্যকে হেলায় হারিয়েছে গুজরাত, মহারাষ্ট্র, গোয়া ও পঞ্জাব।
কথায় কথায় চায়ে চুমুক দিতে বাঙালি এক পায়ে খাড়া। নিছক আড্ডা, কেজো বৈঠক থেকে শুরু করে হাসপাতালে প্রিয়জনের স্বাস্থ্যের খবরের উদ্গ্রীব অপেক্ষা— মাঝ পথে চা অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু টি বোর্ডের সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, বঙ্গ জীবনের সেই গর্বে ঘা হেনেছে অন্যান্য রাজ্য। কারণ, সে সব জায়গায় বছরে মাথাপিছু চা পানের গড় এ রাজ্যের (৭০৫ গ্রাম) চেয়ে অনেক বেশি। মঙ্গলবার সেই তথ্য জানিয়েছেন টি বোর্ডের ডেপুটি চেয়ারম্যান অরুণকুমার রায় ও ডিরেক্টর (টি ডেভেলপমেন্ট) এস সুন্দররাজন।
কেন পিছিয়ে রাজ্য? বোর্ডের দাবি, ভিন রাজ্যের চা-পায়ীদের বাড়তি চুমুকের অনুঘটক দুধ। ফুটতে থাকা দুধে চিনি, এলাচ ও বিভিন্ন পরিমাণে সিটিসি চা ব্যবহার করে রকমারি চা বানানো রাজ্যগুলির বৈশিষ্ট্য। বোর্ড ও চা শিল্পমহলের ব্যাখ্যা, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাবের মতো রাজ্যে দুধের জোগান বেশি। তাই চায়ে তার ব্যবহারও বেশি। অন্য দিকে, দুধ ছাড়া দার্জিলিং বা অর্থোডক্স চা খাওয়াই পশ্চিমবঙ্গের বড় অংশের মানুষের অভ্যেস। যা সিটিসি চায়ের তুলনায় পরিমাণে লাগে কম।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, চা পানে পিছিয়ে রয়েছে আর এক চা উৎপাদক রাজ্য অসমও। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও একই দশা। চা পানে অন্য অনেক দেশের চেয়ে পিছিয়ে ভারত (৭৮০ গ্রাম)। অথচ চা উৎপাদনে ভারত দ্বিতীয় স্থানে, চিনের ঠিক পরেই। শিল্পের তাই ব্যাখ্যা, গেঁয়ো যোগীর ভিখ না পাওয়ার প্রবচন এ ক্ষেত্রেও সত্যি।
সে কারণে চা পানের মাত্রা বাড়াতে চাইছে টি বোর্ড ও ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন (আইটিএ)। আইটিএর সেক্রেটারি সুজিত পাত্রের দাবি, চিন বা ইরানে ছোট থেকেই চা পানের চল রয়েছে। চা পান স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল। তাই অন্য পানীয়ের বদলে চায়ে দুধ মিশিয়ে ছোটদেরও তা পান করার জন্য প্রচার চালাবে আইটিএ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy