—ফাইল চিত্র।
ভোটের বছরে ‘মহারাজা’কে জলের দরে বেচে দিলে, তার রাজনৈতিক খেসারত দিতে হতে পারে। মূলত সেই আশঙ্কাতেই এ বার এয়ার ইন্ডিয়া (এআই) বিলগ্নিকরণ থেকে আপাতত হাত গুটিয়ে নিল মোদী সরকার। দেনার দায়ে ধুঁকতে থাকা যে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান পরিবহণ সংস্থার পরিচিত ম্যাসকট মহারাজা।
মার্চে এয়ার ইন্ডিয়ার ৭৬% শেয়ার বেচতে দরপত্র চেয়েছিল কেন্দ্র। তাতে আগ্রহ দেখায়নি কেউ। তার উপরে সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের পরামর্শ, এআইকে বিদেশি হাতে দেওয়া চলবে না। তার বদলে বরং বাজারে তার শেয়ার ছাড়া হোক। কিন্তু ঋণের বোঝায় বেহাল সংস্থাটির শেয়ার বাজারে এলেও সেগুলি কে কিনবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েইছে।
এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই সোমবার সন্ধ্যায় এখনও অর্থ মন্ত্রকে সরকারি ভাবে না ফেরা অরুণ জেটলির নেতৃত্বে বৈঠকে বসেন পীযূষ গয়াল, সুরেশ প্রভু, নিতিন গডকড়ী প্রমুখ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। তার মধ্যে বিলগ্নিকরণ এখনকার মতো স্থগিতের কথা যেমন রয়েছে, তেমনই আছে খরচ ছাঁটাইয়ের বিভিন্ন পন্থার খোঁজও।
এক সরকারি কর্তার যুক্তি, ‘‘তেলের দাম বাড়ছে। বিশ্ব অর্থনীতির ছবিও ভাল নয়। এখন তাই বিলগ্নিকরণের আদর্শ সময় নয়।’’ অনেকের মতে, এখন শেয়ার ছাড়লেও, তা জীবন বিমা নিগম বা স্টেট ব্যাঙ্কের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে দিয়েই কেনাতে হবে। অনেকে আবার ঠারেঠোরে বোঝাচ্ছেন, এটা ভোটের বছর। তাই সংস্কারের ঝুঁকি নিতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনতে নারাজ কেন্দ্র।
কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের যুগ্ম-আহ্বায়ক অশ্বিনী মহাজন বলেন, ‘‘দক্ষ পরিচালনা, নগদের জোগান, ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে চাঙ্গা করা, ঋণের বোঝা ঢেলে সাজিয়ে এআইকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে হবে। তার পরে বাজারে শেয়ার আনা যেতে পারে।’’
আগেও পেশাদার এনে সংস্থার হাল ফেরানোর চেষ্টা হয়েছে। লাভ হয়নি। এ বার তা হবে কোন জাদুতে? সরকারি সূত্রের যুক্তি, ‘‘ধারের বোঝা বাদ দিলে এয়ার ইন্ডিয়া লাভ করে। খরচ কমানো ও দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা হবে। বিলগ্নিকরণের তাড়াহুড়ো নেই।’’ কিন্তু এ সবেও শেষ পর্যন্ত কাজ হবে কি না, তার উত্তর দেবে সময়ই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy