Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

পুরনো নোট আর বদলাতে নারাজ কেন্দ্র

খোদ প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন ৩১ মার্চ (২০১৭) পর্যন্ত বাতিল পুরনো নোট বদলে দেওয়ার। কিন্তু এ বছর ১ জানুয়ারি থেকে সেই সুযোগ বন্ধ হয় হঠাৎই।

অসহায়। থেকে গিয়েছে পুরনো নোট। ফাইল চিত্র

অসহায়। থেকে গিয়েছে পুরনো নোট। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৭ ০২:৩১
Share: Save:

পুরনো বাতিল নোট বদলের সুযোগ আর দিতে নারাজ মোদী সরকার। যুক্তি, কালো টাকা নিকেশের যে-লক্ষ্য নিয়ে নোট বাতিল করা হয়েছিল, এই জানলা খুলে দিলে তা পূরণ হবে না। সেই সুযোগ নিয়ে বখরার বিনিময়ে অন্যকে দিয়ে পুরনো নোট জমা দেওয়ারও চেষ্টা করবেন অনেকে।

খোদ প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন ৩১ মার্চ (২০১৭) পর্যন্ত বাতিল পুরনো নোট বদলে দেওয়ার। কিন্তু এ বছর ১ জানুয়ারি থেকে সেই সুযোগ বন্ধ হয় হঠাৎই। বিপাকে পড়েন বহু সাধারণ মানুষ। তাঁদের স্বার্থেই ওই নোট জমার দরজা ফের এক বার খোলা যায় কি না, কেন্দ্র ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে গত ৪ জুলাই তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের যুক্তি ছিল, ‘‘যদি কারও প্রকৃত সমস্যা থেকে থাকে, তাঁকে নোট জমার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা যায় না। কারও অর্থ এ ভাবে কেড়ে নেওয়া যায় না। এটা যে আমার টাকা, তা প্রমাণ করতে পারলে সেই অর্থ থেকে কেউ আমাকে বঞ্চিত করতে পারে না।’’

সোমবার সেই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্র হলফনামা দিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, আর এক বার সুযোগ পেলে, যাঁদের কাছে পুরনো নোট রয়েছে, তাঁরা তা আগে জমা না-দেওয়ার অজুহাত তৈরির সুযোগ পাবেন। তখন সেই কারণ সত্যি না মিথ্যে, তা খুঁজে বার করা শক্ত হবে। ওই সব নোটের মধ্যে চেনা কঠিন হবে কালো টাকা। নোটের আসল মালিকের পরিচয় লুকোতে বেনামি লেনদেন হবে। একাধিক বার হাত বদলাবে টাকা। ফলে কালো টাকা চিহ্নিত করতে পারলেও তার মালিককে চেনা অনেক ক্ষেত্রেই কঠিন হতে পারে বলে কেন্দ্রের আশঙ্কা।

তা ছাড়া অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা আগেই প্রশ্ন তোলেন যে, নোট কাণ্ডের পরে কেন্দ্র আইন করে বলেছে যে, ১০টির বেশি বাতিল পুরনো নোট রাখা বেআইনি। ধরা পড়লে জরিমানা। তা হলে এখন সেই ‘বেআইনি নোট’ ফেরানো হবে কী করে? এ দিন সরকার ফের সেই যুক্তি তুলে ধরেছে।

নোট বাতিলের জেরে নানাবিধ সমস্যা নিয়ে একগুচ্ছ আর্জি জমা পড়েছিল বিভিন্ন হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে। তা ছাড়া, নোট নাকচের সময়ে নিত্যনতুন ঘোষণা করা, আর দু’দিন না-যেতেই তা পাল্টে ফেলা নিয়েও আগে শীর্ষ আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে মোদী সরকারকে। রাতারাতি নোট জমার সুযোগ বন্ধ হওয়া যার অন্যতম।

এ বছর প্রথম কাজের দিনে ঘরে রয়ে যাওয়া বাতিল নোট আঁকড়ে যাঁরা রিজার্ভ ব্যাঙ্কমুখো হয়েছিলেন, তাঁদের মাথায় হাত পড়েছিল। দেখতে হয়েছিল, খোদ প্রধানমন্ত্রী কথা দেওয়া সত্ত্বেও পুরনো নোট পাল্টানোর দরজা মুখের উপর বন্ধ করে দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক! মুশকিলে পড়েছিলেন সকলে। কেন্দ্রের বিরোধিতার পরে আদালত কী অবস্থান নেয়, সেটাই এখন দেখার।

কথা ভাঙা

নরেন্দ্র মোদী, ৮ নভেম্বর, ২০১৬ (নোট বাতিলের দিন)

কোনও কারণে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট (ব্যাঙ্কে) জমা দিতে না-পারলে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কিছু অফিসে সেই সুবিধা মিলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত।

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬ (ওয়েবসাইটে বিবৃতি)

নোট বদলের সুবিধা জারি থাকছে শুধু সেই সব ভারতীয় নাগরিক ও অনাবাসী ভারতীয়ের জন্য, যাঁরা ৯ নভেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ছিলেন না। সুযোগ পাবেন দুর্গম অঞ্চলে নিযুক্ত জওয়ানরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

old notes Exchange
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE