ফাইল চিত্র।
দু’লক্ষ টাকার গয়না কিনলেই প্যান জমার নিয়ম চালু হয়েছে আগেই। এ বার সেই কড়াকড়ি আরও একধাপ বাড়ল। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক নোটিস জারি করে জানিয়েছে যে, এ বার থেকে কেউ ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশি মূল্যের গয়না কিনতে গেলেই দিতে হবে আধার কার্ডের প্রতিলিপি। আধার নম্বর ও সেখানে থাকা নাম-ঠিকানা গয়না বিক্রেতাকে বিলে উল্লেখও করতে হবে।
কালো টাকা লেনদেন রুখতে সম্প্রতি প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের আওতায় আরও কড়া ভাবে আনা হয়েছে গয়নাকে। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে ওই আইনের আওতায় এখন থেকে গয়না শিল্পের নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থাকবে ডিজি জিএসটি ইন্টেলিজেন্স।
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্কে আধার কেন্দ্র না-বসালে জরিমানা
কেন্দ্রের লক্ষ্য
কেন্দ্রের দাবি, দু’লক্ষ টাকার গয়নায় প্যানের নিয়ম চালু হলেও, অনেকেই তার কম টাকার গয়না একাধিক বার কিনছিলেন কালো টাকা লেনদেনের জন্য। তা বন্ধ করতেই নতুন এই ব্যবস্থা। তবে এর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গয়না বিক্রেতারা। বলছেন, আজকের বাজারে ৫০ হাজার টাকার গয়না আর কতটুকু? তা কিনতেও যদি এত কড়াকড়ি হয়, তবে সাধারণ ক্রেতাই হয়তো মুখ ফিরিয়ে নেবেন। মার খাবে শিল্প।
স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে বলেন, ‘‘গয়না কিনলে তাতে তার মজুরি এবং ৩% জিএসটি মিলিয়ে ক্রেতাকে প্রায় ২০% টাকা বাড়তি দিতে হয়। যা ওই গয়না বিক্রির সময় আর ফেরত পাওয়া যায় না। তাই গয়নায় লগ্নি করার পথে সাধারণত কালো টাকার মালিকরা হাঁটেন না বলেই আমাদের ধারণা।’’ তাঁর মতে বরং পাকা সোনায় কালো টাকা লগ্নির ঝোঁক বেশি।
বাবলুবাবু বলেন, ‘‘পাকা সোনায় মজুরি নেই। শুধু ৩% জিএসটি। তাই বুলিয়নে কালো টাকা লগ্নি করলে পরে তা বিক্রি করে গয়নার তুলনায় অনেক বেশি টাকা পাওয়ার সম্ভাবনা।’’ যে কারণে গয়না কেনায় আধার ব্যবহারের এই সিদ্ধান্তে ক্রেতারা অহেতুক হয়রান হবেন বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। এমনিতেই গয়নার বাজারে এখন চাহিদা কম। তার উপর নতুন এই নিয়ম অন্তত সাময়িক ভাবে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে বলে আশঙ্কা করছে স্বর্ণশিল্পমহল।
আরও একটি বিষয়ে উদ্বিগ্ন তারা। তা হল, নতুন এই নিয়ম চালু করতে ২৩ অগস্ট নোটিস জারি করে কেন্দ্র। কিন্তু তার প্রচার করা হয়নি। ফলে সাধারণ মানুষ তো বটেই, সিংহভাগ গয়না ব্যবসায়ীও এ নিয়ে অন্ধকারে। গয়না ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, কেন্দ্র এখন যদি ২৩ তারিখ থেকেই কেন নিয়ম মানা হয়নি বলে দোষ চাপায়, তা হলে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy