আলোচনা: বাণিজ্য নিয়ে বৈঠকে (বাঁ দিক থেকে) মার্ভিন ডেভিস, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অমিত মিত্র। সোমবার লন্ডনে। নিজস্ব চিত্র।
২২-এ ১৭।
এমনই একটি মার্কশিট হাতে নিয়ে তাঁর এ বারের ব্রিটেন সফরের প্রথম বাণিজ্য সম্মেলন শুরু করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বিকেলে ইউকে-ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিলের (ইউকেআইবিসি) প্রতিনিধিদের সঙ্গে মমতার বৈঠক হয়। উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, মুখ্যসচিব মলয় দে-সহ মমতার সঙ্গে আসা বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। ব্রিটেনের পক্ষে ছিল দিয়াজিও, গ্রিন ব্যাঙ্ক গ্রুপ, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাঙ্ক-সহ নানা
সংস্থার ১৮ জন প্রতিনিধি। ইউ কে আই বি সি-র চেয়ারম্যান ব্রিটেনের প্রাক্তন বাণিজ্যমন্ত্রী মার্ভিন ডেভিস।
এই বৈঠক সেরেই মুখ্যমন্ত্রী যান লক্ষ্মী মিত্তলের বাড়িতে। রাজ্যে লগ্নির সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলতে। ভারতীয় সময় মধ্যরাত পেরিয়ে চলে বৈঠক।
২০১৫ সালে মমতা যখন এখানে এসেছিলেন, তখন ইউকেআইবিসি-র সঙ্গে ২২টি চুক্তি হয়েছিল। ফলে দ্বিতীয় সফরের আগে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, সেগুলির ভবিষ্যৎ কোথায় দাঁড়িয়ে। আজকের বাণিজ্য সম্মেলনে প্রতিনিধিদের কাছে জানানো হয়, ২২টির মধ্যে ১৭টিই বাস্তবায়নের দিকে এগিয়েছে। কয়েকটির বাণিজ্যচুক্তি সই হয়েছে। কয়েকটির ক্ষেত্রে সই হয়েছে মউ। গত বারের আলোচনার ভিত্তিতে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাক্ষেত্রেও বড় সাফল্য হয়েছে বলে রাজ্য দাবি করেছে। সরকারের বক্তব্য, রাজ্যে এমবিবিএস চিকিৎসকদের ফ্যামিলি মেডিসিন পড়ানোর ব্যবস্থা করতে রয়্যাল কলেজের সঙ্গে রাজ্যের একটি মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে।
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট অ্যাংলিয়া ইন্ডিয়া সেন্টার’ নামে একটি উৎকর্ষ কেন্দ্র তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। এরই সঙ্গে লন্ডনের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল আফ্রিকান স্টাডিজ-এর (সোয়াস) সঙ্গেও প্রেসিডেন্সির মউ হয়েছে বলে সরকারের দাবি।
পশ্চিমবঙ্গে আরও একটি উৎকর্ষ কেন্দ্র তৈরির জন্য আজকের বৈঠকে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির সঙ্গে কথা হয়েছে। নিউটাউনকে গ্রিন সিটি তৈরি করতে গত বার আলোচনা হয়েছিল। ব্রিটিশ সংস্থার সঙ্গে হিডকোর সে ব্যাপারে মউ হয়েছে বলে খবর। অমিতবাবুর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে কতটা এগোনো গিয়েছে, এই সাফল্যের তালিকাই তার প্রমাণ। আগামী দিনে আরও এগোনো যাবে।’’
গত বারের এই মার্কশিট উপস্থাপন করেই আরও এক ধাপ এগোতে চাইছেন মমতা। ব্রিটিশ শিল্পপতিদের রাজ্যে আহ্বান জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গে শিল্প গড়ার সুবিধার দিকগুলি তুলে ধরেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভৌগোলিক দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই এ রাজ্যে রয়েছে দক্ষ অথচ সস্তা শ্রমিক। শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় জমি সরকারের ল্যান্ড ব্যাঙ্কেই রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। জানিয়ে দেন, তাঁর আমলে শ্রমদিবস নষ্টের সংখ্যা শূন্যে এসে দাঁড়িয়েছে। ডেভিসকে একটি শিল্প প্রতিনিধি দল নিয়ে আগামী জানুয়ারিতে রাজ্যের শিল্প সম্মেলনে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানান মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy