গত পাঁচ-ছ’দিনে সামান্য কমলেও, পেট্রল-ডিজেলের চড়া দর নিয়ে আমজনতার ক্ষোভ এখনও তুঙ্গে। একে দাম আকাশছোঁয়া (পেট্রল ও ডিজেল যথাক্রমে ৮০ ও ৭০ টাকার উপরে), তার উপরে যে ভাবে রোজ কয়েক পয়সা করে বেড়ে তা প্রায় সকলের অলক্ষ্যে রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেছে, তা-ও ক্ষুব্ধ করেছে সাধারণ মানুষকে। কিন্তু সেই চাপের মুখেও তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান সোমবার জানালেন, রোজ পেট্রল, ডিজেলের দাম বদলের নিয়ম পাল্টানোর কথা মোটেও ভাবছেন না তাঁরা।
তেলের দর নিয়ে চিন্তার কথা মানলেও এ দিন ফের তাতে রাশ টানতে ফের সেই দীর্ঘ মেয়াদি সমাধান খোঁজার আশ্বাসই দিয়েছেন প্রধান। যা শুনে অনেকে বলছেন, আসলে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলির সংগঠন ওপেক (বিশেষত সৌদি আরব), রাশিয়ার ভরসাতেই থাকতে হচ্ছে কেন্দ্রকে। কারণ তাদের উপরই নির্ভর করছে আগামী দিনে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম।
এখন দেশে তেলের দাম রোজ কমছে কয়েক পয়সা করে। মন্ত্রক সূত্রের যুক্তি, এর থেকে বেশি তা কমানো সম্ভব নয়। কারণ কর্নাটক ভোটের জন্য টানা ১৯ দিন তেলের দাম বাড়েনি। অথচ তখন অশোধিত তেল ব্যারেলে ৮০ ডলারে পৌঁছেছিল। কেন্দ্র যদিও বলেছিল তার সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই।
প্রশ্ন যেখানে
• দীর্ঘ মেয়াদি সমাধানের আশ্বাস অনেক দিন ধরেই দিচ্ছে কেন্দ্র। কিন্তু সেটা কী, তা স্পষ্ট নয়।
• বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল কমায় ক’দিন ধরে পেট্রল, ডিজেলের দর রোজ একটু করে নামছে। কিন্তু এখনও দর যে জায়গায় আছে, তাতে শুধু এতে চিঁড়ে ভেজা কঠিন। কেন্দ্র কি তেমন কোনও সিদ্ধান্ত নেবে?
বাতাসে জল্পনা
• তেলের দাম কমাতে আগে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিকে কর ছাঁটাইয়ের জন্য চাপ দিতে পারে মোদী সরকার।
• ওএনজিসি প্রাথমিক ভাবে রাজি না হলেও, চালিয়ে যাওয়া হতে পারে তাদের উপর কর চাপানোর চেষ্টা। যাতে বিশ্ব বাজারে তেল একটি নির্দিষ্ট দর ছাড়ালে, সেই করের দৌলতে রাজকোষে বাড়তি টাকা জমা পড়ে। আর তা কাজে লাগানো যায় দামে রাশ টানার জন্য।
• হালে অশোধিত তেল উৎপাদন বাড়িয়েছে রাশিয়া এবং ওপেক দেশগুলি। এশিয়ায় জোগান বাড়াচ্ছে আমেরিকাও। আগামী দিনে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর কমার আশায় আসলে সমাধান খোঁজার নামে সময় কিনছে কেন্দ্র।
আসলে তেল মন্ত্রকের কর্তাদের চোখ এখন বিশ্ব বাজারের দিকে। ২২ জুন ওপেকের বৈঠক। তাঁরা মনে করছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের তেল সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরির পরে ওপেক তেল উৎপাদন ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরতে পারে। প্রধান কিছুদিন আগে সৌদি আরবের তেলমন্ত্রী খালিদ আল-ফালিহর সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছেন। আগে নিজেদের সংস্থা অ্যারামকোর কথা মাথায় রেখে সৌদি আরব চাইছিল, অশোধিত তেল অন্তত ৮০ ডলাের থাকুক। কিন্তু আমেরিকা প্রথমে হুমকি দিয়ে পরে শেল তেলের উৎপাদন বাড়ানোয় সৌদির মন বদলেছে। ওপেকের অলিখিত নেতার এই ভোলবদলে আশাবাদী কেন্দ্রও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy