Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
national news

ডিজেল-পেট্রলের দাম ঊর্ধমুখী, দাম বাড়তে পারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের

কিছু দিনের মধ্যে ডিজেলের দাম নিম্নমুখী না হলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়তে পারে বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। হেঁশেলেও এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কায় দিন গুণছে রাজ্যবাসী।

ডিজেল, পেট্রোলের দাম বাডার জন্য বাজারে মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা।

ডিজেল, পেট্রোলের দাম বাডার জন্য বাজারে মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৮ ১৯:৩৩
Share: Save:

নিউ মার্কেটে বাজার করতে এসেই ‘সতর্কবাণী’ শুনলেন টালিগঞ্জের বাসিন্দা অমিত দাস। দীর্ঘ দিনের মাসকাবারি খদ্দেরকে সতর্ক করে বিক্রেতা বললেন, “দাদা এ মাসে একটু বেশি করে বাজার নিয়ে যান। যে ভাবে ডিজেলের দাম বাড়ছে, যে কোনও দিন তেল, মশলা, চাল, ডালের দাম বেড়ে যাবে!”

পরামর্শ উপেক্ষা করেননি অমিতবাবু। সম্মতি জানিয়ে দোকানিকে বললেন, “ঠিকই বলেছেন। প্রত্যেক দিন পেট্রলের দামও বাড়ছে। গাড়ি নিয়ে বেরোনোই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

শুধু নিউ মার্কেট নয়, বৈঠকখানা বাজারে গিয়েও দেখা গেল একই চিত্র। বাজার করতে এসেছিলেন হীরক বিশ্বাস। জিনিসপত্র কিনতে কিনতেই বললেন, “শুনছি সব জিনিসেরই নাকি দাম বাড়বে! তাই এ মাসে একটু বেশি করেই কাঁচা বাজার করে রাখছি। সত্যিই যদি দাম বেড়ে যায়!”

গত কয়েক দিন ধরে তরতরিয়ে ডিজেলের দাম বাড়তেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকেই। হেঁশেলেও এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কায় দিন গুণছে রাজ্যবাসী। কিছু দিনের মধ্যে ডিজেলের দাম নিম্নমুখী না হলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়তে পারে বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচনের জন্য ১৯ দিন পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বাড়েনি। কর্নাটক বিধানসভা মিটতেই ঊর্ধ্বমুখী হয় তেলের দাম। কলকাতায় ডিজেলের দাম ৭০ টাকা ছাড়িয়ে রেকর্ড গড়েছে। এখন কলকাতায় ডিজেলের দাম ৭০ টাকা ৩৭ পয়সা। পাশাপাশি পেট্রলের দামও ঊধর্বমুখী। দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯ টাকা ২৭ পয়সায়।

এই সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়েছে এবং পাশাপাশি মার্কিন ডলারের তুলনায় টাকার দাম পড়েছে। তাই ভোটের ফল প্রকাশিত হওয়ার পরেই ১৪ মে থেকে টানা সাত বার বাড়ল পেট্রোপণ্যের দাম। গত এক সপ্তাহে পেট্রোলের দাম বাড়েছে লিটারপিছু প্রায় ১ টাকা ৬১ পয়সা এবং ডিজেলের দাম বাড়ল লিটারপিছু প্রায় ১ টাকা ৬৪ পয়সা। ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রোলপাম্প ডিলার্স অ্যাসোশিয়েশন-এর সভাপতি তুষার সেন বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার নিজের দায় এড়াতে পারে না। সব কিছুর উপর জিএসটি লাগু হলে, কেন পেট্রোপণ্যের ওপর তা হবে না? অবিলম্বে পেট্রল, ডিজেলের উপর জিএসটি লাগু করা উচিত। তা হলে ২৫-৩০ শতাংশ দাম কমে যেতে পারে।” তিনি আরও জানান, ২০১০ সালের ২৫ জুন পেট্রলের দামের উপর থেকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ তুলে নেয় ইউপিএ-২ সরকার। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ডিজেলের উপর থেকেও নিয়ন্ত্রণ তুলে নিয়েছে। ফলে এই সরকারকে ভাবতে হবে, তারা ফের পেট্রোপণ্যের উপর সরকারি হস্তক্ষেপ করবে কি না। না হলে পরবর্তীতে আরও সমস্যা বাড়বে।

বিরোধীরা ইতিমধ্যেই পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মোদী সরকারির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে ক্ষোভ উগরে জানিয়েছেন, ‘পেট্রোপণ্যের ধারাবাহিক মূল্যবৃদ্ধির জেরে আমরা শঙ্কিত। এই মূল্যবৃদ্ধির জের সব কিছুর উপরেই পড়বে। এর ফল ভুগতে হবে সাধারণ মানুষ এবং কৃষককে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

petrol price hike diesel
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE