শুধু নতুন করে ১০ হাজারের সীমা ছাড়ানোই নয়, সব আশঙ্কাকে দূরে সরিয়ে গত সপ্তাহে নজির গড়েছে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফ্টি। পাশাপাশি ৩২ হাজারের চৌকাঠ পেরিয়েছে সেনসেক্স।
সব মিলিয়ে গত সপ্তাহে সেনসেক্স বেড়েছে ৬১৮ পয়েন্ট। শুক্রবার বন্ধ হয়েছে ৩২,৪৩৩ পয়েন্টে। ১৮৮ অঙ্ক বেড়ে নিফ্টি থেমেছে ১০,১৬৭ পয়েন্টে। যা রেকর্ড। এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর নিফ্টি উঠেছিল ১০,১৫৩ পয়েন্টে। প্রশ্ন হল, সাময়িক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়া বাজার এতটা তেজ পেল কোথা থেকে? কারণ হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে দু’টি সরকারি পরিসংখ্যান:
• অগস্টে ৪.৩% শিল্প বৃদ্ধির হার, যা গত ৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ
• সেপ্টেম্বরে মূল্যবৃদ্ধির হার (৩.২৮%) বেশ নীচের দিকে থাকা
বাজারের আশা, এর পরের দফায় ঋণনীতি ফিরে দেখতে বসে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সম্ভবত সুদ কমাবে। এই জোড়া খবরে হঠাৎই বাজার তেতে ওঠে ও সূচককে তোলে নতুন উচ্চতায়। বাজার এতটা ওঠায় ভাল রকম বাড়ে নথিবদ্ধ সব শেয়ারের মোট মূল্য বা মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন। শুক্রবার মুম্বই বাজারে তা পৌঁছয় ১৩৮ লক্ষ কোটি টাকায়। এটিও সর্বকালীন রেকর্ড। দীপাবলির আগে দুই সূচককে এতটা উচ্চতায় দেখে স্বাভাবিক ভাবেই লগ্নিকারীরা বেশ খুশি।
গত সপ্তাহেই শুরু হয়ে গিয়েছে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক তথা ষাণ্মাসিক কোম্পানি ফলাফল প্রকাশের পালা। শুরুতেই ফল প্রকাশ করেছে তিনটি নামী সংস্থা। সেগুলি হল তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টিসিএস, রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক। টিসিএস-এর সার্বিক মুনাফা কিছুটা কমলেও, তা কিন্তু বিশ্লেষকদের অনুমানের তুলনায় ভাল হয়েছে। আয় ও লাভের পরিসংখ্যান দেওয়া হল সঙ্গের সারণিতে।
জুলাই-সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্কের নিট অনুৎপাদক সম্পদ (এনপিএ) দাঁড়িয়েছে ০.৪৪ শতাংশে। ওই তিন মাসের শেষে ব্যাঙ্কের দেওয়া ঋণ ২৪% বেড়ে ছুঁয়েছে ১.২৩ লক্ষ কোটি টাকা। সপ্তাহের শেষে ফলাফলে বড় চমক দেখিয়েছে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ। সংস্থার মাত্র তিন মাসের আয় ছাড়িয়েছে ১ লক্ষ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় সার্বিক আয় বেড়েছে ২৪%। ফল প্রকাশের আগে থেকেই বেড়েছিল রিলায়্যান্স শেয়ার দর। আজ দেখা যাবে ফলের প্রভাব। ফলাফল মরসুমের সূচনা এখনও পর্যন্ত ভালই হয়েছে বলতে হবে। মাসখানেক ধরে চলবে ফল প্রকাশের পালা এবং তার যথেষ্ট প্রভাব থাকবে বাজারে।
তার মধ্যে ১৯ অক্টোবর দেওয়ালির সন্ধ্যায় মুরত লেনদেন হবে বাজারে। সূচনা হবে নতুন বছর বিক্রম সম্বৎ ২০৭৪-এর। আর্থিক ফলের প্রভাবও পড়বে মুরতের কেনাবেচায়। নতুন বছরে বাজার কোন দিকে যেতে পারে, তারও ইঙ্গিত মিলবে ওই দিন।
বেশ চাঙ্গা এখন নতুন ইস্যুর বাজার। গত সপ্তাহে মোটের উপর ভাল ভাবেই উতরেছে জিআইসি-র ইস্যু। আকার ছিল ১১,৩৭০ কোটি টাকা। আবেদন জমা পড়েছে ১.৩৭ গুণ। কোল ইন্ডিয়া এবং রিলায়্যান্স পাওয়ারের পরে এটিই ছিল দেশের তৃতীয় বৃহত্তম আইপিও। এর আগে বাজারে এসেছিল আরও এক জোড়া বিমা সংস্থা আইসিআইসি আই লম্বার্ড এবং এসবিআই লাইফ। এই দুই ইস্যুও ছিল বেশ বড়। প্রথম দিকে তেমন লাভের সন্ধান দিতে না-পারলেও বড় মেয়াদে এরাও লাভজনক হবে বলে ধারণা। সম্প্রতি আইপিও এনেছে গোদরেজ অ্যাগ্রোভ্যাট, এমএএস ফিনান্সিয়ালের মতো কয়েকটি সংস্থা। ফলে মোটা টাকা ঢুকেছে নতুন ইস্যুতে। তাই বাজারে টাকার জোগানে কিছুটা টান পড়তে পারে।
ইতিমধ্যেই চারটি বিমা সংস্থা পা রাখল বাজারে। মার্চের মধ্যে আসবে আরও কয়েকটি। ফলে ব্যাঙ্কিংয়ের মতো বাজারে জায়গা করে নেবে বিমা শিল্প। মিউচুয়াল ফান্ডগুলিও হয়তো আসবে বিমা ফান্ড নিয়ে। মাসের শেষে আসবে রিলায়্যান্স নিপ্পন লাইফের ইস্যু। আকার ১,৫৪২ কোটি টাকা। দাম ২৪৭-২৫২ টাকা। ইস্যু খুলবে ২৫ তারিখ। বন্ধ হবে ২৭শে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy