Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
জিডিপি তরজায় জেটলি

যথেচ্ছ ঋণে বৃদ্ধিই বন্ধ্যা, জোর নজরে

এত দিন বিশ্বে দ্রুততম বৃদ্ধির দেশ হয়ে ওঠাকে মোদী জমানার অন্যতম সাফল্য হিসেবে তুলে ধরত কেন্দ্র। নাগাড়ে প্রচার করত চিনকে টেক্কা দেওয়ার কথা। কিন্তু সম্প্রতি ইউপিএ সরকারের কাছে বৃদ্ধির হারে পিছিয়ে  থাকার প্রশ্ন সামনে আসার পরেই পাশা পাল্টেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৮ ০৬:০৩
Share: Save:

শুধুমাত্র চড়া বৃদ্ধিকে ধাওয়া করতে গিয়ে জলাঞ্জলি দেওয়া হয়েছে আর্থিক শৃঙ্খলা। রাশ টানার চেষ্টা হয়নি ব্যাঙ্কের যথেচ্ছ ঋণ দেওয়ায়। খতিয়ে দেখা হয়নি প্রকল্পের নাড়ি-নক্ষত্র। এতে ব্যাঙ্কের ঘরে অনাদায়ি ঋণের পাহাড় যেমন জমেছে, তেমনই পরে মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। সোমবার ইউপিএ সরকারের নাম না করেও, মনমোহন জমানাকে এ ভাবেই বিঁধলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

যদিও তা দেখে অনেকের দাবি, এত দিন বিশ্বে দ্রুততম বৃদ্ধির দেশ হয়ে ওঠাকে মোদী জমানার অন্যতম সাফল্য হিসেবে তুলে ধরত কেন্দ্র। নাগাড়ে প্রচার করত চিনকে টেক্কা দেওয়ার কথা। কিন্তু সম্প্রতি ইউপিএ সরকারের কাছে বৃদ্ধির হারে পিছিয়ে থাকার প্রশ্ন সামনে আসার পরেই পাশা পাল্টেছে। এ দিনও জেটলি দ্রুততম বৃদ্ধির কথা বলেছেন ঠিকই। কিন্তু তার থেকে অনেক বেশি বার তাঁর কথায় উঠে এসেছে ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং যথেচ্ছ ব্যাঙ্ক ঋণে রাশ টানার কথা। বোঝাতে চেয়েছেন, আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রেখে তবেই বৃদ্ধিকে পাখির চোখ করার পক্ষপাতী তাঁরা। অনুৎপাদক সম্পদ এবং বন্ধ্যা বৃদ্ধির কথাও উঠেছে সে প্রসঙ্গেই।

এ দিন ভিডিয়ো-কনফারেন্সে ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কস অ্যাসোসিয়েশনের ৭১তম বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি বলেন, বৃদ্ধিতে ভারত বিশ্বে উজ্জ্বলতম বিন্দু। আগামী বছরেই পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ার দাবিদার। কিন্তু তা বলে শুধু বৃদ্ধির পিছনে ছুটলে হবে না। অর্থনীতির ভিত পোক্ত রাখতে হবে। আর সে জন্য বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে ব্যাঙ্কগুলিকে। কারণ, অর্থমন্ত্রীর ইঙ্গিত, তা না করায় ইউপিএ আমলে বৃদ্ধিতে গতি হয়তো এসেছে, কিন্তু তা হয়েছে আর্থিক শৃঙ্খলাকে জলাঞ্জলি দিয়ে। ব্যাঙ্কগুলির যথেচ্ছ ঋণে ভর করে। পরে যার খেসারত দিতে হয়েছে অর্থনীতিকে। শেষ পর্যন্ত সেই ঋণ বিপুল অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হয়ে চেপে বসেছে ব্যাঙ্কের ঘাড়ে।

রবিবারও জেটলির দাবি ছিল, মোদীর আমলে অর্থনীতির হাল ভাল। কিন্তু কংগ্রেসের কটাক্ষ ছিল, ভাল অবস্থায় অর্থনীতিকে হাতে পেয়েও তা ডুবিয়েছে মোদী সরকার। বৃদ্ধি ৮% ছোঁয়নি। চাকরি নেই। লগ্নিও নামমাত্র। অনেকে মনে করছেন, বিরোধীদের এই আক্রমণের মোকাবিলা করতেই বন্ধ্যা বৃদ্ধির যুক্তিকে ঢাল করছেন জেটলি। বোঝাচ্ছেন, যে ভিতের উপরে ইউপিএ জমানায় বৃদ্ধির ইমারত উঠেছিল, তা ছিল নড়বড়ে। তাই পরে মুখ থুবড়ে পড়েছে অর্থনীতি।

তবে অর্থমন্ত্রী মেনেছেন, অনেক সময়ে ছাড়পত্রে দেরি-সহ নানা কারণে থমকে যায় প্রকল্পের কাজ। তখন ধার শোধ দেওয়া কঠিন হয় সংস্থার পক্ষে। তাকে স্বেচ্ছায় ঋণ খেলাপ বলা চলে না। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগ গায়ে লাগার ভয়ে তা-ও কিছু ক্ষেত্রে লুকোনোর চেষ্টা হয়েছে। আইন সংশোধন সেই পরিস্থিত বদলাবে বলেই তাঁর আশা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

GDP India China BJP UPA Arun Jaitley
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE