একাধিক অনুকূল-প্রতিকূল শর্তের মধ্যেই ভারতীয় শেয়ার সূচকের ‘বুল রান’ অব্যাহত। পর পর কয়েকটি শিখর জয় করে সেনসেক্স ঘোরাফেরা করছে ৩৮ হাজারের কোঠায়। গত সপ্তাহের শেষে ওই সূচক থেমেছে ৩৮,২৫২ অঙ্কে। নিফ্টি শেষ হয়েছে ১১,৫৬৭ পয়েন্টে।
এরই মধ্যে একটি ইতিবাচক খবর চলতি সপ্তাহেও বাজারকে কিছুটা উস্কে দিতে পারে। রেটিং সংস্থা মুডি’জ জানিয়েছে, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ভারতের অর্থনীতি এগোতে পারে ৭.৫% হারে। মুডি’জের বক্তব্য, শহর ও গ্রামে পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি ও ভাল শিল্পোৎপাদনের ফলেই তা সম্ভব হবে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এই হার যেখানে ২-৩%, সেখানে সম্ভাবনাময় দেশগুলির মধ্যে ভারতের বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য বলে তাদের মত। এই সম্ভাব্য বৃদ্ধি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের এ দেশে নতুন করে লগ্নি করতে উৎসাহিত করতে পারে।
তবে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, সূচক এতটা উঁচুতে ওঠা সত্ত্বেও কিছু দিন আগে পর্যন্তও বিএসইতে নথিবদ্ধ সব শেয়ারের মোট মূল্য (মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন) আগের ১৫৬ লক্ষ কোটি টাকার রেকর্ড টপকাতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত সেই নজির ভেঙেছে গত সপ্তাহে। মার্কেট ক্যাপ দাঁড়িয়েছে ১৫৭.০৫ লক্ষ কোটি টাকা। আশার কথা, শেষ কয়েক দিনের উত্থানে কিছুটা হলেও শামিল হয়েছে মাঝারি ও ছোট সংস্থাগুলির শেয়ার। প্রথম ত্রৈমাসিকে মোটের উপর ভাল ফলাফল এবং মিউচুয়াল ফান্ড থেকে ইকুইটিতে বিপুল লগ্নিকেই বাজারের এই তেজি অবস্থার অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
নজর যে দিকে
• পেট্রল ও ডিজেলের দাম বাড়ছে। আজ, সোমবার দাম যথাক্রমে ৮০.৮৪ ও ৭২.৩১ টাকা। পেট্রোপণ্যের দাম বাড়ায় মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা।
• টাকার দাম কমায় সঙ্কুচিত হয়েছে ভারতের বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার।
• কেরল ভাসলেও গোটা দেশে বৃষ্টির ঘাটতি।
• ডাকঘর পেমেন্টস ব্যাঙ্কের হাত ধরে প্রত্যন্ত প্রান্তে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পৌঁছনোর সম্ভাবনা।
• অনাদায়ি ঋণ উদ্ধারের ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের হাল কিছুটা শোধরানোর আশা।
আরও কয়েকটি ইতিবাচক দিক রয়েছে বাজারের পক্ষে। দেউলিয়া বিধি কার্যকর করে বছরের প্রথম তিন মাসে ৩৯,২০০ কোটি টাকার অনাদায়ি ঋণ উদ্ধার করেছে ব্যাঙ্কগুলি। আগামী দিনে এই পদক্ষেপ জারি থাকলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির হাল শোধরাতে পারে। এরই মধ্যে দেশের প্রথম সংস্থা হিসেবে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের মার্কেট ক্যাপ ৮ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। বাজার ভাল মিউচুয়াল ফান্ডেরও। দেশের ৪১টি ফান্ডের সম্পদ দাঁড়িয়েছে ২৫ লক্ষ কোটি। এর অর্ধেকই অবশ্য চারটি বড় ফান্ডের দখলে। প্রথম সাতটি ফান্ডের দখলে ৭০% সম্পদ। সেপ্টেম্বরে শুরু হতে পারে ডাকঘর পেমেন্টস ব্যাঙ্ক। এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত গ্রামে পৌঁছবে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা। সেখানে আরও বেশি করে ডিজিটাল লেনদেনের সুযোগ খুলবে।
আবার অন্য দিকে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ বাড়ানোর পর বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক সুদের হার বাড়িয়েছে। বেড়ে চলেছে পেট্রল, ডিজেলের দামও। মোটের উপর, অর্থনীতি এখন ভাল-মন্দয় মেশানো। এই দুয়ের টানাটানিতে বাজার কোন দিকে যায় সেটাই এখন আগ্রহের বিষয়।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy