ভিসা-কড়াকড়ির গেরো তো আছেই। দোসর কাজখেকো প্রযুক্তি। এই সাঁড়াশি আক্রমণে এ দেশে আজ অনেক দিনই নাভিশ্বাস উঠেছে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের। কাজ খোয়াচ্ছেন অনেকে। ওই শিল্পে নতুন চাকরি তৈরি হওয়া কী হারে কমছে, এ বার পরিসংখ্যান পেশ করে তা মেনে নিল মোদী সরকারও।
ওই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এক বছরে মাত্র এক লক্ষ নিট নতুন চাকরি হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে। প্রতি বছরই ধাপে ধাপে কমছে তার সংখ্যা। আগামী এক বছরেও মেরেকেটে এক লক্ষ নতুন চাকরি হবে বলেই ইঙ্গিত।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দাপটে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে যে কাজের সুযোগ কমছে, সেই খবর সামনে আসছে অনেক দিন থেকেই। ছাঁটাইয়ের কথা শোনা গিয়েছে ইনফোসিস থেকে শুরু করে টেক মহীন্দ্রা— প্রায় সমস্ত সংস্থায়। কার্যত সে কথা মেনে নিয়েই তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক সংসদে জানিয়েছে, ২০১৭-’১৮ সালে ১ লক্ষ ৫ হাজার নিট নতুন চাকরি হয়েছে। সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, হয়তো নতুন চাকরির সংখ্যা আরও বেশি। কিন্তু ছাঁটাই বাদ দিলে শেষমেশ সংখ্যাটি প্রায় ১ লক্ষ।
দু’বছরের মধ্যে নতুন চাকরির সংখ্যা প্রায় অর্ধেক হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে মোট কর্মী কমেনি ঠিকই। কিন্তু চাকরি বৃদ্ধি ৬% থেকে ২ শতাংশের ঘরে নেমেছে।
নতুন চাকরির সুযোগ কমার জন্য মূলত চারটি কারণকে চিহ্নিত করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী কে জে আলফোন্স— (১) সংস্থাগুলির নতুন প্রযুক্তি আমদানি (২) অপেক্ষাকৃত কম জটিল কাজে স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ব্যবহার (৩) দক্ষতা বাড়িয়ে কর্মীসংখ্যা কমানোয় জোর (৪) আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ডেটা সায়েন্স, ইন্টারনেট অব থিঙ্গসের মতো ক্ষেত্রে বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীদের নিয়োগ।
তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির ব্যবসা যে কমেছে, তা নয়। রফতানিও বেড়েছে। সংসদে যিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, সেই সিপিএম সাংসদ এম বি রাজেশের মতে, ‘‘তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির ব্যবসা বাড়ছে অথচ সেই অনুপাতে চাকরি বাড়ছে না। সরকারের তথ্য থেকেই স্পষ্ট, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রেও অচ্ছে দিন আর নেই।’’
মন্ত্রীর অবশ্য দাবি, এখন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর সংখ্যা ৩৯ হাজারের বেশি। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির সংগঠন ন্যাসকমের হিসেব অনুযায়ী, ২০২২ সালে তা ৪৫ হাজারে পৌঁছবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy