Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

লগ্নি নিয়ে এখনও সতর্ক নয় শিল্পমহল

লেম্যান ব্রাদার্সের দেউলিয়া হওয়ার ধাক্কা যখন সারা বিশ্বকে মন্দায় ডুবিয়েছিল, তখন তার অভিঘাত থেকে বাঁচেনি ভারতও।

দশক পার: ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮। নিউ ইয়র্কে ওয়াল স্ট্রিটে সিঁড়িতে বসে কর্মী। ছবি: এএফপি।

দশক পার: ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮। নিউ ইয়র্কে ওয়াল স্ট্রিটে সিঁড়িতে বসে কর্মী। ছবি: এএফপি।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৪২
Share: Save:

লেম্যান ব্রাদার্সের দেউলিয়া হওয়ার ধাক্কা যখন সারা বিশ্বকে মন্দায় ডুবিয়েছিল, তখন তার অভিঘাত থেকে বাঁচেনি ভারতও। সেই ঘটনা ফিরে দেখতে গিয়ে শিল্পমহলের অনেকেই তা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন ইনিংস শুরুর কথা বলছেন। তবে একাংশের প্রশ্ন, আমেরিকার চতুর্থ বৃহৎ ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কটিকে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে দেখার পরেও কি আদৌ সতর্ক হয়েছে এ দেশের সংস্থাগুলি? তা হলে তার পরেও বহু প্রকল্পে খরচ কম রাখার চেষ্টা দেখা যায়নি কেন? কেনই বা অনেক সংস্থার লগ্নি পরিকল্পনায় প্রকট হয়েছে দূরদর্শিতার অভাব! যথেচ্ছ ঋণ দিয়ে বেহাল ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলিও।

ইঞ্জিনিয়ারিং এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান রাকেশ শাহ ও গ্লস্টারের চেয়ারম্যান তথা মার্চেন্টস চেম্বারের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হেমন্ত বাঙ্গারের অবশ্য দাবি, লেম্যান থেকে শিক্ষা নিয়েই ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক তাঁরা। হেমন্ত বলেন, ‘‘ব্যবসায় ঋণ ও ইকুইটির হার যতটা সম্ভব কম রাখি।’’ আর রাকেশবাবুর কথায়, ‘‘বিদেশি ক্রেতাকে ধারে পণ্য বেচার ক্ষেত্রে আর্থিক স্বাস্থ্য যাচাই করে নিই।’’

টিআইএলের চেয়ারম্যান সুমিত মজুমদারও বলেন, মন্দার পরেই ব্যাঙ্কিং শিল্প বুঝেছে ঋণ খেলাপি দু’ধরনের। ইচ্ছাকৃত ও ব্যবসা করতে গিয়ে দেনার দায়ে পড়া। তাই দু’টি ক্ষেত্রে আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

কিন্তু আদপে ভারত কতটা শিক্ষা নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সিআইআইয়ের জাতীয় কাউন্সিলের সদস্য দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘‘দেখা গিয়েছে, সংস্থা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ছে। কিন্তু কয়লা পাওয়া বা বিদ্যুৎ সংবহনের সমস্যা মেটানোর চেষ্টা নেই। একই ছবি ইস্পাতে। অর্থাৎ সংস্থাগুলি এখনও সতর্ক নয়। এতে লগ্নি প্রকল্পের উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হয়।’’

অর্থনীতির হাল ফেরাতে বিধি শিথিল বা সরকারি ত্রাণ প্রকল্প যে জরুরি, তা মানছেন হেমন্ত। কিন্তু তাঁর দাবি, পুঁজি সহজলভ্য করতে গিয়ে যদি যোগ্যতা না থাকলেও ধার দেওয়া হয়, তবে অনুৎপাদক সম্পদ বাড়বেই। বহু সংস্থা সতর্ক ছিল না বলেই তাদের ঘাড়ে বকেয়া ঋণ চেপেছে।

অবস্থা কি বদলায়নি? দীপঙ্করবাবুর মতে, দেউলিয়া আইনে কিছু সমস্যা মিটছে। কিন্তু ব্যাঙ্কের ক্ষতির অনেকটাই আদায় হচ্ছে না। বাজারে বুদ্বুদের আশঙ্কায় তাঁর প্রশ্ন, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে সংস্থার আয়ের চেয়ে শেয়ারের দাম বহুগুণ বেশি। তা হলে সূচক কী করে এত উঁচুতে থাকে?’’ তবে হেমন্ত বলেন, ‘‘অতি সতর্কতার নীতিও এখন ভোগাচ্ছে। ভাল সংস্থার যোগ্য প্রকল্প অনেক সময় ঋণ পাচ্ছে না। বিশেষত ভুগছে ছোট শিল্প।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Industry India শিল্প
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE