Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

জেট জল্পনায় আশঙ্কা শিল্পে

পাইলটেরা রাজি হননি সেই প্রস্তাবে। এক পাইলটের দাবি, ‘‘কর্তৃপক্ষকে বলেছি, বেশ কিছু জায়গায় লোকসান হচ্ছে। আগে সেগুলি রোখা জরুরি। ক্ষতি গুনতে হচ্ছে অদক্ষ পরিচালনার কারণেও। সে জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা পরিকল্পনা বদলাতে হবে।’’

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৮ ০১:২৩
Share: Save:

ঋণের ধাক্কায় অনেক আগেই ডানা গুটিয়েছে বিজয় মাল্যের কিংফিশার। বিস্তর খোঁজাখুঁজি সত্ত্বেও বিপুল ধারে জেরবার এয়ার ইন্ডিয়াকে বিক্রির জন্য ক্রেতা পায়নি কেন্দ্র। গত এপ্রিল থেকে জুনে প্রায় ৯৭% মুনাফা কমেছে ইন্ডিগোর। অন্যান্য অনেক বিমান সংস্থার আর্থিক অবস্থাও তথৈবচ। এই পরিস্থিতিতে খরচ কমাতে মরিয়া জেট বুধ ও বৃহস্পতিবার যথাক্রমে মুম্বই ও দিল্লিতে ডেকে পাইলটদের বেতন কম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। যদিও পাইলটেরা রাজি হননি সেই প্রস্তাবে। এক পাইলটের দাবি, ‘‘কর্তৃপক্ষকে বলেছি, বেশ কিছু জায়গায় লোকসান হচ্ছে। আগে সেগুলি রোখা জরুরি। ক্ষতি গুনতে হচ্ছে অদক্ষ পরিচালনার কারণেও। সে জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা পরিকল্পনা বদলাতে হবে।’’

তবে এই খবর ছড়ানোতেই প্রশ্ন উঠেছে জেটের আর্থিক হাল নিয়ে। দুশ্চিন্তা আরও চেপে বসেছে সামগ্রিক ভাবে ভারতের বিমান পরিবহণ শিল্পের স্বাস্থ্য ঘিরেও। সূত্রের দাবি, বাজারে জেটের ধার প্রায় ৮,০০০ কোটি। অবস্থা এতটাই সঙ্গিন যে, ৬০ দিনের বেশি সংস্থা চালানোর ‘জ্বালানি’ মজুত নেই। সে ক্ষেত্রে দু’মাসের মধ্যে সংস্থা গুটিয়ে ফেলার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন অনেকে। একটি সূত্র আবার জানাচ্ছে, প্রধানত জ্বালানি ও ডলারের দাম বাড়ার জেরে মাথা তোলা খরচ সামলাতে যে ভাবে লোকসান বাড়ছে, তাতে অংশীদারি বিক্রির কথাও ভাবছে নরেশ গয়ালের সংস্থা। অনাদায়ি ঋণে জেরবার ব্যাঙ্কগুলিও এখন ধার দেওয়া নিয়ে সতর্ক। সূত্রের দাবি, যে কারণে জেট ঋণ চাইলে তাদের কাছে আগে লোকসান মুছে ঘুরে দাঁড়ানোর বিশদ পরিকল্পনা জানতে চেয়েছে তারা।

জেটের অবশ্য দাবি, সংস্থা গোটানো বা অংশীদারি বেচার খবর মিথ্যে ও ভিত্তিহীন। উল্টে সিইও বিনয় দুবে জানান, ২২৫টি নতুন বিমান কেনা হচ্ছে। সে জন্য বাড়তি কর্মী লাগবে। তবে খরচ ছাঁটতে নানা পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছে জেট। বলেছে, এ নিয়ে আলোচনার কথা।

সংস্থার এক অফিসার জানান, মূলত পরিচালনার দায়িত্বে থাকা উচ্চপদস্থ কর্তা, পাইলট ও ইঞ্জিনিয়ারদের ২৫% পর্যন্ত বেতন ছাঁটার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে যাঁরা মাসে দু’লক্ষের বেশি পান, এই কোপ শুধু তাঁদের উপরেই।

এতে দুশ্চিন্তা বেড়েছে বিমান শিল্পের আর্থিক অবস্থা নিয়ে। বিশেষত যে বিমান জ্বালানি ও ডলারের দাম বাড়ার জেরে সংস্থাগুলিকে লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে দাবি, এখন চট করে সেগুলির খরচ কমার সুযোগ যেখানে কম। প্রশ্ন উঠছে, বর্তমান বিমান সংস্থাগুলিই যখন টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছে, তখন কেন্দ্রের উড়ান প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী? যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ছোট নতুন শহরে বিমান চালানোর কথা অনেক ছোট সংস্থার। সংশ্লিষ্ট মহলের উদ্বেগ, বিপুল টাকা ভর্তুকি গোনার পরে শেষ পর্যন্ত এই প্রকল্প টিকবে তো! উত্তর অজানা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jet Airways Salary জেট
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE