টেলিকম শিল্পে মাসুল যুদ্ধ জিইয়ে রেখে নতুন চমক রিলায়্যান্স জিও-র।
টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া-র (ট্রাই) ‘পরামর্শ’ মেনে ‘সামার সারপ্রাইজ’ প্রকল্পটি বন্ধ করে জিও মঙ্গলবারই নতুন মাসুল হারের প্রকল্প ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে ফের উস্কে দিল পুরনো বিতর্ক। ‘ধন ধনা ধন’ নাম দিয়ে আনা প্রকল্পটিকে জিও নতুন বলে দাবি করলেও টেলিকম শিল্পের একাংশের দাবি, এটি কার্যত নতুন মোড়কে পুরনোটিরই নামান্তর মাত্র। পাশাপাশি এটি বৈধ হলে এই শিল্পের আর্থিক বোঝা আরও বাড়বে, মত সেলুলার অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া-র (সিওএআই)।
গোড়া থেকেই দেশের টেলিকম শিল্পে মাসুল নিয়ে সুনামির ইঙ্গিত দিয়েছিল জিও। কর্ণধার মুকেশ অম্বানীর সস্তায় পরিষেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি মতোই এগোচ্ছে জিও। এপ্রিল থেকে মাসুল নিলেও পুরনো গ্রাহক ধরে রাখতে এক বছরের জন্য জিও-প্রাইম প্রকল্প আনে তারা। আরও কিছু সুবিধা দিয়ে সম্প্রতি ‘সামার সারপ্রাইজ’ চালু করে। তাতে অবশ্য ট্রাই আপত্তি তোলায় এ দিন শেষমেষ তা বন্ধ করল সংস্থাটি।
সোমবারই নতুন প্রকল্প এনে চমক দেওয়ার ইঙ্গিত দেয় জিও। রাতে তারা জানায়, এখনও পর্যন্ত জিও-প্রাইম পরিষেবা নিয়েও (অর্থাৎ শুধু ৯৯ টাকা ভরিয়েছিলেন) যাঁরা কোনও রিচার্জ করেননি, তাঁরা ৩০৯ টাকা দিয়ে আগামী তিন মাস দৈনিক ১ জিবি করে ‘ডেটা’ পাবেন। আর ৫০৯ টাকা ভরলে তিন মাস দৈনিক ২ জিবি করে ডেটা পাবেন। দুটি ক্ষেত্রেই ফোন ও এসএমএস-এর কোনও খরচ নেই।
অনেকেই আগে জিও সিম নিলেও প্রাইম পরিষেবা নেননি। তাঁরাও যথাক্রমে ৪০৮ ও ৬০৮ টাকা ভরিয়ে ওই সুবিধা পাবেন আগামী তিন মাসের জন্য। তবে কত দিন এই প্রকল্পটি চালু থাকবে তা এ দিন স্পষ্ট করেনি জিও। অনেকেই জিও-র সিম নিলেও কোনও টাকাই তাতে ভরাননি। সংস্থা জানিয়েছে, ১৫ এপ্রিলের মধ্যে কোনও রিচার্জ না-করলে তাঁদের সংযোগ বাতিল হয়ে যাবে।
প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থাগুলি এ নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে না চাইলেও টেলিকম শিল্পের একাংশের মতে, এটি জিও-র ‘সামার সারপ্রাইজ’ প্রকল্পের নতুন সংস্করণ মাত্র। মাসুল হারে কিছু অঙ্কের হিসেব ও সময়ের ফারাক ছাড়া মূল বিষয়ের কোনও তফাত নেই। এখন এই প্রকল্পটি ৯০ দিনের হলেও আগে তার চেয়ে বেশি ছিল। শিল্পমহলের আর এক অংশের মতে, ট্রাই-এর নিয়ম অনুযায়ী, এ ধরনের প্রচারমূলক প্রকল্প ৯০ দিনের বেশি দেওয়া যায় না বলেই ‘সামার-সারপ্রাইজ’ প্রকল্পটি নিয়ে আপত্তি তোলে ট্রাই। তাই হিসেবের একটু অদল বদল করে সেই সময়সীমা মেনেই প্রায় একই প্রকল্প নতুন মোড়কে চালু করল তারা।
তবে এ দিন রাতে সিওএআই-এর ডিজি রাজন এস ম্যাথুজ বলেন, ‘‘কোনও একটি সংস্থার মাসুল হার নিয়ে আমরা মন্তব্য করি না। এটি বৈধ কি না তা-ও দেখার দায়িত্ব ট্রাইয়ের। তবে যদি এটি বৈধ হয়, তা হলে তা শিল্পের উপর বোঝা চাপাবে। রাজস্ব ও ব্যাঙ্কের পাওনার ক্ষেত্রে ঝুঁকি বাড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy