Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

তেজী ভাব ফিরছে বাজারে, কমলো খুচরো মূল্যবৃদ্ধিও

বেশ কিছু দিন মন্দা চলার পরে বাজার ক্রমশ তেজী (‘বুল ফেজ’) হওয়ার দিকে এগোচ্ছে। আগামী মাস ছ’য়েকের মধ্যে আরও হাজার দু’য়েক পয়েন্ট বেড়ে সেনসেক্সের ৩১ হাজার ছোঁয়ারও যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞদের একটা অংশ অন্তত এমনটাই মনে করছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৫ ০২:১২
Share: Save:

বেশ কিছু দিন মন্দা চলার পরে বাজার ক্রমশ তেজী (‘বুল ফেজ’) হওয়ার দিকে এগোচ্ছে। আগামী মাস ছ’য়েকের মধ্যে আরও হাজার দু’য়েক পয়েন্ট বেড়ে সেনসেক্সের ৩১ হাজার ছোঁয়ারও যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞদের একটা অংশ অন্তত এমনটাই মনে করছেন।

শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধি ৫% ছোঁয়ার প্রভাবে সোমবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছে বাজার। এক লাফে সেনসেক্স বেড়ে গিয়েছে ১৬৫.০৬ পয়েন্ট। এর জেরে সূচক ফিরে গিয়েছে ২৯ হাজারের ঘরে। বাজার বন্ধের সময়ে তা থিতু হয় ২৯,০৪৪.৪৪ অঙ্কে।

এ দিকে, খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধির হার কমেছে। ফেব্রুয়ারি মাসের ৫.৩৭% থেকে মার্চে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫.১৭%, যা গত তিন মাসে সবচেয়ে কম। ক্রেতার মূল্য সূচকের ভিত্তিতে হিসাব করা এই হার মূলত শাক-সব্জি, ফল, দুধ ও শস্যের দাম কমার কারণে কমেছে বলে সোমবার সরকারি পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে। ২০১২ সালকে নতুন ভিত্তিবর্ষ ধরে এই হিসাব করা হয়েছে। গত বছর এই সময়ে মূল্যবৃদ্ধি ছিল ৮.২৫%। আজ মঙ্গলবার পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার কোথায় দাড়িয়ে আছে, তা জানা যাবে। বাজারের আশা, এটিও কমবে।

এই দিন মূল্যবৃদ্ধির হার কমার খবর অবশ্য যখন প্রকাশিত হয়, তার আগেই শেয়ার বাজারের ঝাঁপ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আজ মঙ্গলবার অম্বেডকরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে শেয়ার বাজার বন্ধ থাকবে। বাজার মহলের ধারণা, আগামী কাল, অর্থাৎ বুধবারের বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার কমার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

এই পরিস্থিতিতে আগামী মাস ছয়েকের মধ্যেই সেনসেক্স ৩১ হাজারের ঘরে পৌঁছে যেতে পারে বলে এ দিন আশা প্রকাশ করেছেন বাজার বিশেষজ্ঞদের অনেকেই। এই মুহূর্তে ভারতের অর্থনীতি বেশ কিছু ক্ষেত্রে ভাল জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। যেমন, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে। টাকার মূল্য নিয়েও তেমন চিন্তিত নন বিশেষজ্ঞরা। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অশোধিত তেলের দাম খুব বেশি বাড়ার সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। পাশাপাশি শিল্পোৎপাদনের হার বেড়েছে। কমছে মূল্যবৃদ্ধির হার। ব্যাঙ্কগুলি সুদের হার কমাতে শুরু করেছে। এই সবের মিলিত প্রভাব শেয়ার বাজারে পড়বে বলেই অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের ধারণা।

স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখ বলেন, ‘‘বিশেষ করে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ভারতের বাজারে টানা লগ্নি করে চলেছে। দীর্ঘকাল ধরে ওই সংস্থাগুলিই ভারতের বাজারকে চাঙ্গা করে তোলার পিছনে প্রধান ভূমিকা পালন করছে। তবে গত অর্থবর্ষের শেষ দিকে তারা টানা শেয়ার বেচেছিল। নতুন আর্থিক বছর শুরু হতেই ফের লগ্নি শুরু করেছে সংস্থাগুলি। আমার ধারণা, আগামী ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে বাজার অনেকটাই তেজী হবে। সেনসেক্স ৩১ হাজারের ঘরেও চলে যেতে পারে।’’

মূল্যবৃদ্ধির হার কমা-সহ অর্থনীতির ইতিবাচক দিকগুলি বহাল থাকলে আগামী ঋণনীতির পর্যালোচনায় সুদ কমানোর জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক পদক্ষেপ করতে পারে বলেও মনে করছেন কমলবাবুর মতো আরও বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ।

এই দিন আন্তর্জাতিক বাজারেও অধিকাংশ শেয়ার সূচকের মুখ ছিল উপরের দিকে। জাপানে সূচক কমলেও এশিয়ার অন্য শেয়ার সূচকগুলি বেড়েছে। যেমন, চিনের সূচক বেড়েছে ২.১৭%, হংকংয়ের ২.৭৩%, সিঙ্গাপুরের ০.৩৬% এবং দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানের সূচক বৃদ্ধি পেয়েছে ০.৫৩ এবং ০.৫১% করে। ইউরোপের বাজারও ঊর্ধ্বমুখীই ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE