রাজ্যের চটকলগুলিকে সব ধরনের কাঁচা পাট কেনার নির্দেশ দিল বস্ত্র মন্ত্রক। বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, নিচু বা মাঝারি মানের কাঁচা পাট কম কিনছে চটকলগুলি। ফলে কেন্দ্রীয় পাট নিগমের ঘরে পড়ে থাকছে মজুত পাট। বাড়তি পাট কিনতে পারছে না তারা। দাম না-পেয়ে মার খাচ্ছেন চাষিরাও। অনেকে মনে করছেন, সেই সূত্রেই এই নির্দেশ।
চটকল মালিকদের একাংশের অবশ্য অভিযোগ, নিচু মানের মোটা সুতোর পাট কিনলে কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট ওজনের (৫৮০ গ্রাম) বস্তা তৈরি করতে সমস্যা হচ্ছে। বস্তার ওজন বাড়ছে। তাতে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। কারণ ওজন বাড়লে তার দাম কেন্দ্র দেয় না। আগে এই ওজন বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ৬৬৫ গ্রামে।
কিন্তু অনড় বস্ত্র মন্ত্রক জানিয়েছে, চটকলগুলিকে সব রকম পাট কিনতে হবে। নিগমকেও বলা হয়েছে চাষিদের কাছ থেকে পাট কেনা বাড়াতে। সম্প্রতি দিল্লিতে বস্ত্র ও খাদ্য মন্ত্রকের বৈঠকের পরেই চটকলগুলিকে ওই কথা জানানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। জুট কমিশনার পুরো বিষয়টির উপর নজরদারি চালাবেন।
দেশে পাট শিল্পে প্রায় ৯০০০ কোটি টাকার বার্ষিক লেনদেন হয়। এর মধ্যে চাল, গম, চিনির জন্য ৬০০০ কোটিতে শুধু চটের বস্তা কেনে কেন্দ্র। মন্ত্রকের এক কর্তা জানান, চটকলগুলি ৫ ও ৬ নম্বর মানের পাট কিনতে চাইছে না। অথচ পশ্চিমবঙ্গেই তা সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয়। তাঁর দাবি, উঁচু ও নিচু মানের পাট মিশিয়ে সঠিক ওজনের বস্তা তৈরি সম্ভব।
কিন্তু কেন্দ্র কেন বস্তার ওজন ৬৬৫ থেকে কমিয়ে ৫৮০ গ্রাম করল?
বস্ত্র মন্ত্রকের দাবি, ৬৬৫ গ্রামের বস্তা দেওয়ার কথা থাকলেও চটকলগুলি তার থেকে কম ওজনেরই দিত। অথচ দাম পেত ৬৬৫ গ্রামেরই। নতন নিয়মে ৫৮০ গ্রামের বস্তাই চটকলগুলিকে জোগাতে বলা হয়েছে।
এ বছর পাট নিগম সারা দেশে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ৬৬ হাজার বেল (১ বেল হল ১৮০ কেজি কাঁচা পাট) কাঁচা পাট কিনেছে। যার বেশির ভাগটাই গুদামে পড়ে রয়েছে। ফলে নিগমের টাকা আটকে গিয়েছে। চাষিরাও সহায়ক মূল্যের থেকে অনেক কম দামে পাট বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার এ বছরই প্রথম চটের বস্তা কিনবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ দিকে সহায়ক মূল্য বাড়ানোর দাবিতে বৃহস্পতিবার পাট নিগমের দফতরে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূলের কিসান ও খেত মজদুর সংগঠন। বস্তার ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy