প্রকল্পের জন্য জমি চিহ্নিত হয়েছিল ২০১৩ সালে। ২০১৪ সালে হাতে এসেছিল প্রাথমিক ছাড়পত্র। শেষমেশ ২০১৬-য় এসে বৈদ্যুতিন পণ্য তৈরির দুই শিল্পতালুকের জন্য মূল বিনিয়োগকারী সংস্থা (অ্যাঙ্কর ইনভেস্টর) টেনে আনতে পারল রাজ্য। তাদের লগ্নি প্রতিশ্রুতিতে ভর করে সম্ভব হল কেন্দ্রের কাছ থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন আদায় করাও।
নৈহাটি ও ফলতার ওই দুই প্রকল্পে মূল লগ্নিকারী হিসেবে টাকা ঢালার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রাজ্যেরই দুই সংস্থা। নৈহাটিতে কস্কো কর্পোরেশন, ফলতায় বিক্রম সোলার। বৈদ্যুতিন পণ্য তৈরির দুই শিল্পতালুকে বিনিয়োগের কথা রাজ্যকে লিখিত ভাবে জানিয়েওছে তারা। দুই সংস্থাই আগামী তিন বছরে লগ্নি করবে প্রায় ১০০ কোটি টাকা করে। কস্কো তৈরি করবে সেট-টপ বক্স, সার্কিট বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশ। বিক্রম সোলারের ব্যবসা মূলত হবে সৌরশক্তি কেন্দ্রিক।
কেন্দ্রের নীতি অনুযায়ী এই তালুক (ইলেকট্রনিকস ম্যানুফ্যাকচারিং ক্লাস্টার) তৈরির ৫০% খরচ জোগাবে তারা। জমি (৫০ থেকে ১০০ একর) জোগাড় করতে হবে রাজ্যকেই।
২০১৩ সালে প্রকল্পের জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছিল। পরিকল্পনা করা হয়েছিল ফলতায় ৫৮ একর ও নৈহাটিতে ৭০ একর জমিতে তালুক তৈরির। কিন্তু এত দিন মূল লগ্নিকারীর অভাবে থমকে ছিল প্রকল্প। প্রশ্ন উঠছিল তার বাণিজ্যিক দিক নিয়ে। ফলে আটকে ছিল কেন্দ্রের চূড়ান্ত সায়ও। কিন্তু এখন সেই সমস্ত বাধা আর না-থাকায় মূল লগ্নিকারী সংস্থার হাত ধরে বাণিজ্যিক ভাবে প্রকল্প দ্রুত চালু হয়ে যাওয়ার কথা।
কেন্দ্রের ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের অন্যতম শরিক এ ধরনের তালুক। এখনও পর্যন্ত ৩০টি তালুক গড়ার ছাড়পত্র দিয়েছে তারা। লক্ষ্য, ২০২০ সালের মধ্যে ২০০টি তালুক তৈরি। পশ্চিমবঙ্গে দু’টি প্রকল্পের রিপোর্ট তৈরি করতে আইএলঅ্যান্ডএফএস-কে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করেছিল রাজ্য সরকার। লগ্নিকারী টানার দায়িত্ব ছিল তাদেরই। তবে কস্কো কর্প এবং বিক্রম সোলারের বিনিয়োগ টানতে সক্রিয় ছিল তথ্যপ্রযুক্তি দফতরও।
ফি বছর ২২% হারে বাড়ছে বৈদ্যুতিন পণ্যের চাহিদা। ২০২০ সালে তা ছোঁওয়ার কথা ৪০ হাজার কোটি ডলার। কিন্তু এই বিপুল বাজার কব্জা করতে রাজ্য এখনও সে ভাবে পা বাড়ায়নি বললেই চলে।
সফট্ওয়্যারে লগ্নি টানার দৌড় দেরিতে শুরু করেছিল পশ্চিমবঙ্গ। সেই ভুল হার্ডওয়্যার শিল্পে শুধরে নিতে সচেষ্ট হয়েছিল পূর্বতন বাম সরকার। তৃণমূল-সরকার আবার আর এক ধাপ এগিয়ে ওই শিল্পের তালিকায় নিয়ে এসেছে সৌর বিদ্যুৎ তৈরির যন্ত্রপাতিকে। এমনকী নতুন তথ্যপ্রযুক্তি নীতিতে এই শিল্পকে বিশেষ জায়গাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই সব কিছুর পরেও এখনও পর্যন্ত হার্ডওয়্যার শিল্পে দেশের বাজারে রাজ্যের ভাগ নেহাতই নগণ্য।
এ বার নৈহাটি ও ফলতার শিল্পতালুক এবং সোনারপুরের হার্ডওয়্যার পার্ক সেই ছবি কিছুটা বদলাতে শুরু করতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy