প্রতীকী ছবি।
অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যায় জেরবার। এতটাই যে, গত অর্থবর্ষের শেষ তিন মাসে লাভের মুখ দেখেছে ২১টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মধ্যে মাত্র দু’টি। ১১টির ঠাঁই হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিভিন্ন বিধিনিষেধের তালিকায় (প্রম্পট করেক্টিভ অ্যাকশন বা পিসিএ)। তা সত্ত্বেও কেন্দ্র ও ব্যাঙ্কিং শিল্পের দাবি ছিল, হিসেবের খাতা পরিষ্কার করতে গিয়েই গুনতে হয়েছে ক্ষতি। তবে তা হয়ে যাওয়ায় সুদিন ফিরবে দ্রুত। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে মঙ্গলবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানাল, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির খারাপ সময় এখনও শেষ হয়নি। লাভ কমায় তাদের আর্থিক সঙ্কট সামালের ক্ষমতাও কমেছে।
মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি পিসিএ তকমা লাগা ১১টি ব্যাঙ্কের শীর্ষ কর্তাদের ডেকে পাঠিয়েছিল। কমিটির সামনে তাঁরা জানান, ওই তকমা থেকে বেরিয়ে আসতে আরও দু’বছর লাগবে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ফিনান্সিয়াল স্টেবিলিটি রিপোর্ট বলছে, ওই ১১টি ব্যাঙ্কের অনাদায়ী ঋণের হার আগামী বছরের মার্চের শেষে আরও বাড়বে। এর মধ্যে ছ’টি আবার সম্ভবত বাসেল বিধি অনুযায়ী ন্যূনতম পুঁজির শর্তও পূরণ করতে পারবে না।
গত জানুয়ারি থেকে মার্চে যে ২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক লাভের মুখ দেখেছে, সেগুলি হল বিজয়া ব্যাঙ্ক ও ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক। এখন আইডিবিআই, ইউকো ব্যাঙ্ক, সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক, দেনা ব্যাঙ্ক, ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অব কমার্স, মহারাষ্ট্র ব্যাঙ্ক, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক, কর্পোরেশন ব্যাঙ্ক ও এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক পিসিএ তালিকায়।
এ দিন কমিটির সদস্যরা প্রশ্ন তোলেন, ক্ষতি ও অনাদায়ী ঋণের বোঝার চাপে এই ব্যাঙ্কগুলির পক্ষে কতখানি নতুন ঋণ দেওয়া সম্ভব? ব্যাঙ্ক কর্তাদের উত্তর, অধিকাংশ ক্ষেত্রে নতুন ঋণ দেওয়ায় শীর্ষ ব্যাঙ্ক বিধিনিষেধ আরোপ করেনি। ডিভিডেন্ড দিতে বাধা আছে। তাঁরা পিসিএ থেকে বেরনোর রূপরেখাও ছকছেন। যদিও শীর্ষ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুযায়ী, গয়না, পরিকাঠামো, কাগজ, সিমেন্ট ইত্যাদি ক্ষেত্রে অনাদায়ী ঋণ বাড়ছে। পরিস্থিতি শোধরাতে জোরালো চেষ্টা জরুরি।
মাথাব্যথা
• জানুয়ারি-মার্চে ২১টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মধ্যে মুনাফা মাত্র দু’টির।
• ১১টি ব্যাঙ্কই আরবিআইয়ের বিভিন্ন বিধিনিষেধের (প্রম্পট কারেক্টিভ অ্যাকশন) তালিকায়। এই তকমা মুছতে লাগতে পারে দু’বছর।
• মার্চের শেষে ওই ১১টি ব্যাঙ্কে অনাদায়ী ঋণ মোট ধারের ২১%। আগামী মার্চে হতে পারে ২২.৩%।
• এদের মধ্যে ছ’টি ব্যাঙ্ক ন্যূনতম পুঁজির ক্ষেত্রে বাসেল বিধি পূরণ করতে পারবে কি না সন্দেহ।
• ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে অনুপাদক সম্পদ ছিল মোট ঋণের ২৩.৯৩%। গত মার্চেই তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪.৮%।
• মোট অনাদায়ী ঋণের ২৬ শতাংশই মাত্র ১০০টি অ্যাকাউন্টে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy