Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বড় শিল্প নেই, বরাতে ভরসা পড়শি রাজ্যই

সেই ষাটের দশক থেকেই রাজ্যে পাট গুটিয়েছে বহু বড় ব্যবসা। ফলে সুদিন গিয়েছে এখানকার বল-বিয়ারিং ব্যবসারও। মাঝে সিঙ্গুরে টাটাদের গাড়ি কারখানা কিংবা জিন্দলদের ইস্পাত কারখানার প্রস্তাবে কিছুটা আশায় বুক বেঁধেছিল তারা

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৪৯
Share: Save:

সেই ষাটের দশক থেকেই রাজ্যে পাট গুটিয়েছে বহু বড় ব্যবসা। ফলে সুদিন গিয়েছে এখানকার বল-বিয়ারিং ব্যবসারও। মাঝে সিঙ্গুরে টাটাদের গাড়ি কারখানা কিংবা জিন্দলদের ইস্পাত কারখানার প্রস্তাবে কিছুটা আশায় বুক বেঁধেছিল তারা। কিন্তু শেষমেশ সেই লগ্নি না আসা আশায় জল ঢেলে দিয়েছে তাদের। ব্যবসায় বরাত পেতে তাই ছত্তীসগঢ় কিংবা ওড়িশা-সহ বিভিন্ন পড়শি রাজ্যের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বল-বিয়ারিং ব্যবসাকে।

রাজ্যে বড় শিল্পের খরা কী ভাবে তাঁদের ব্যবসায় প্রভাব ফেলেছে, শুক্রবার ইস্টার্ন ইন্ডিয়া বল-বিয়ারিং মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের ফাঁকে সে কথা বলছিলেন সংগঠনের অন্যতম কর্তা সুরেন্দ্র চোরারিয়া। তাঁর আক্ষেপ, এক সময়ে এ রাজ্যে বড় কারখানার রমরমার জন্য বল-বিয়ারিংয়ের চাহিদা অনেক বেশি ছিল। কিন্তু ছবি বদলে যাওয়ায় এখন চাহিদায় টান। তাঁরা মনে করেন, টাটা মোটরস বা জিন্দলদের কারখানা হলে বরাত জুটত অনেক বেশি। সুরেন্দ্রর কথায়, ‘‘অনেক সহজে আরও নতুন ব্যবসা পেতাম।’’ তাঁদের হিসেবে পূর্বাঞ্চলে এই ব্যবসার পরিমাণ বছরে প্রায় ৩,০০০ কোটি টাকা। কিন্তু তার মধ্যে এ রাজ্যের ভাগ খুব একটা বেশি নয়।

চোরারিয়াদের মতে, পুরনো কারখানাতেও তাঁদের সরবরাহ করা যন্ত্রাংশ লাগে ঠিকই। কিন্তু বড়, নতুন কারখানা যে পরিমাণ বরাত দেয়, পুরনো থেকে চট করে তা পাওয়া শক্ত। কারণ, সেখানে তা জোগাতে হয় মূলত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য। বড় মাপের সম্প্রসারণ হলে আলাদা কথা।

বড় শিল্পের আকালে এখন তাই হলদিয়া, দুর্গাপুরের মতো শিল্পাঞ্চলে পুরনো সংস্থাকে বল-বিয়ারিং জুগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ‘ইজ অব ডুয়িং’ বিজনেসে রাজ্যের হালের সাফল্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে তাঁদের।

ব্যবসার বহর

• দেশে বল-বিয়ারিংয়ের ব্যবসা বছরে প্রায় ৯,৫০০ কোটি টাকা। পূর্বাঞ্চলে ৩,০০০ কোটি।

• পূর্বাঞ্চলে রয়েছে বিক্রিবাটার ৫০০টি সংস্থা। রাজ্যেই ৪০০টি।

চাহিদা কোথায়

• ইস্পাত, গাড়ি, খনন, সিমেন্ট, বিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো শিল্পে। লাগে রেল, চা শিল্পেও।

• কল-কারখানায় প্রয়োজন পড়ে উৎপাদনের সময়ে কাঁচামাল, আধা তৈরি পণ্য এবং পুরো তৈরি পণ্য এক জায়গা থেকে অন্যত্র নিয়ে যেতে। যেমন, কনভেয়র বেল্ট।

সমস্যা বিস্তর

• ষাটের দশক থেকেই এ রাজ্য থেকে পাততাড়ি গুটিয়েছে বহু বড় শিল্প। ভাটা চাহিদায়।

• মাঝে বড় শিল্প আসা নিয়ে কিছুটা আশা জাগলেও, শেষমেশ তা হয়নি। বরাত পেতে ভরসা পড়শি রাজ্যগুলিই।

• ব্যবসায় প্রভাব ফেলেছে নোট বাতিল, জিএসটিও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Industry Investment Singur TATA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE