Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

আজ বৈঠকে নিশানায় ৯৯-ই

জিএসটি পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে শুক্রবারই শিলিগুড়ি থেকে দিল্লি পৌঁছন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তার আগে এ দিন অফিসার পর্যায়ের বৈঠকে যোগ গিয়েছেন রাজ্যের জিএসটি কমিশনার স্মারকি মহাপাত্র

দুই মুখ: শনিবার জিএসটি পরিষদের বৈঠক। মোদীর আগেভাগে প্রতিশ্রুতির জেরে সেখানে ঝড়ের মুখে পড়তে পারেন জেটলি। পিটিআই

দুই মুখ: শনিবার জিএসটি পরিষদের বৈঠক। মোদীর আগেভাগে প্রতিশ্রুতির জেরে সেখানে ঝড়ের মুখে পড়তে পারেন জেটলি। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৫২
Share: Save:

ভোটের মুখে আমজনতার মন জিততে ৯৯ শতাংশ পণ্য-পরিষেবাকেই ১৮% বা তার কম জিএসটির হারে নিয়ে আসার কথা আগাম বলে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু ব্যালট যুদ্ধের দামাম বেজে যাওয়া এই আবহে তাঁকে এত সহজে সেই কৃতিত্ব নেওয়ার সুযোগ দিতে নারাজ বিরোধীরা। তাই তা ঘিরে শনিবার ঝড় উঠতে পারে জিএসটি পরিষদের বৈঠকে। কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলের অর্থমন্ত্রীদের লক্ষ্য, মোদীর কৃতিত্ব নেওয়ার ওই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেওয়া। যাতে আগে তিনি আগে বলে রাখার পরে পরিষদ সত্যিই তা কমালে, বুক বাজানোর সুযোগ না পায় বিজেপি।

জিএসটি পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে শুক্রবারই শিলিগুড়ি থেকে দিল্লি পৌঁছন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তার আগে এ দিন অফিসার পর্যায়ের বৈঠকে যোগ গিয়েছেন রাজ্যের জিএসটি কমিশনার স্মারকি মহাপাত্র। পরিষদকে টপকে মোদী এ ভাবে কর কমানোর কথা আগাম একতরফা ভাবে ঘোষণা করে দেওয়ায় ইতিমধ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অমিতবাবু। এ নিয়ে কড়া আপত্তি জানিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে চিঠিও পাঠিয়েছেন তিনি। চিঠিতে অমিতবাবুর যুক্তি, জিএসটি-র কর কমানোর অধিকার জিএসটি পরিষদের। প্রধানমন্ত্রীর সেখানে কোনও ভূমিকাই নেই। সংবিধান সংশোধন করে জিএসটি পরিষদ তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কী ভাবে জিএসটি পরিষদ ও সংবিধানকে খাটো করতে পারেন? সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে জিএসটি কী ভাবে কাজ করবে? পঞ্জাবের কংগ্রেস সরকারের অর্থমন্ত্রী মনপ্রীত বাদলও এ বিষয়ে অমিতবাবুর পাশে।

সরকারি সূত্রের খবর, সিমেন্ট, এসি, ডিজিটাল ক্যামেরায় করের হার ২৮% থেকে কমিয়ে বাহবা কুড়োতে চাইছে কেন্দ্র। অমিতবাবু চিঠিতে যুক্তি দিয়েছেন, গত বছরই তিনি সিমেন্টের মতো পণ্যে জিএসটি কমানোর দাবি তুলেছিলেন। কেন্দ্র মানেনি। অথচ এখন প্রধানমন্ত্রী সেই কথাই বলছেন।

নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, শুধুমাত্র ক্ষতিকারক ও বিলাসবহুল (মদ, সিগারেট, এসইউভি, বিমান) পণ্য ছাড়া বাকি ৯৯ শতাংশ পণ্যেই ২৮ শতাংশের কম জিএসটি বসবে। অমিতবাবু চিঠিতে প্রশ্ন তুলেছেন, মদ তো জিএসটি-র আওতাতেই নেই! তা হলে প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পিছনে কি অন্য কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে?

শনিবারের জিএসটি পরিষদের বৈঠক তাই রাজনৈতিক কুস্তির মঞ্চ হয়ে উঠতে পারে বলে সরকারি কর্তাদের অনুমান। হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে বিজেপির হারের পরে নতুন বলে বলীয়ান কংগ্রেসের অর্থমন্ত্রীদের পরিকল্পনা, তাঁরা এখনই এক গুচ্ছ পণ্যে জিএসটি কমানোয় বাধা দেবেন। কিন্তু বিরোধী দলের অর্থমন্ত্রীদের অনেকে যেহেতু আগেই জিএসটি কমানোর দাবি তুলেছেন, ফলে এখন উল্টো অবস্থান নেওয়া মুশকিল হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, কেন্দ্র তড়িঘড়ি ত্রুটিপূর্ণ জিএসটি রূপায়ণের ফলে ওই পরোক্ষ কর থেকে আশানুরূপ আয় হচ্ছে না বলে অভিযোগের আঙুল তুলতে পারেন কংগ্রেসের অর্থমন্ত্রীরা। কর কমানোর সিদ্ধান্তে বাধা দিতে তাঁরা বলতে পারেন যে, গত বছরের জুলাইয়ে জিএসটি চালু হওয়ার পর থেকে এই নতুন করে মাসে গড় আয় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৩% কম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

GST Meeting Narendra Modi Arun Jaitley Amit Mitra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE